চিঠি
একদিন আমার জীবনের পথে ঢুকে পড়েছিল তোমার মায়ার একটি শব্দ, ভেবেছিলাম সেদিন হয়েছিল আমার বেঁচে থাকার পতন। চিৎকার দিয়ে বলেছিলাম, তুমি কে? বুকের ওপর একরাশ প্রেম এসে দাঁড়িয়েছিল, জেনেছিলাম এটা প্রেম নয়, এটা বুঝি পতনের মূলতন্ত্র। বিকেলের শেষ রোদ্দুরে লাল আকাশের আলোতে ভালোবাসি দেখতে তোমার মুখ, ভয় হয় চাঁদ উঠলে বুঝি ঝলসে যাবে তোমার হৃদপিণ্ডটা, মরে যাবে সকল ভালবাসার অঙ্গীকার, চাঁদকে বুঝি তুমি প্রিয়তমেষু করে নেবে, চাঁদকে ঢেকে দেই জীবনের সকল বস্ত্র দিয়ে, সর্বনাশ করেছি পান, যার এপারে মায়া ওপারে জল। মায়ায় তাকালে অদৃশ্য হয়ে যাই অতল চোখের গভীরে, যেখানে শুধুই স্বপ্নের ফেরিওয়ালা, জলের দিকে তাকালে ডুবে যাই অতল সমুদ্রে, তবু যেন পিপাসার্ত বুকে শুধুই মরুভূমির খেলা। বুক পাথরে যত শক্ত করে বেঁধে রাখি ভেতরের মোহময়ীতা ততবার যেন লুটিয়ে পড়ি, অন্ধকারে পথ গুনি দেয়ালঘেঁষে দাঁড়িয়ে রই, বুক ভেঙে সন্ধ্যা তারা নামিয়ে বিষাক্ত সূর্যরশ্মি দিয়ে জ্বালিয়ে দেই সকল উম্মাদনা, ফুসফুস থেকে ওপরে ফেলি তোমার ঘুমন্ত দেহে জ্বলন্ত নিঃশ্বাস। দগ্ধ ঠোঁটের মাঝে সকল স্বীকারোক্তি করেছি জমা। পুড়িয়েছি সব চুম্বনের ঘ্রাণ, অমবস্যার মিলনে মিশিয়ে দিয়েছি তোমার শরীরের ঘামের প্রতিবিন্দু, তোমার ভালোবাসাগুলো পিচঢালা আঠালো পথের মতো সবকিছু আঁকড়ে ধরে রাখে। নিঃশ্বাসের জায়গা সেখানে বিরল। তুমি শুধু একটি চিঠি হয়ে থাকো। কিছু নিঃশব্দ অক্ষরের মাঝে বেঁচে থাকো।
শঙ্খের ঘ্রাণ
মন্দের সাথে ভালোলাগাকে তুমি সমাধান করে নাও
একটু সুখের জন্য তোমার অনেক বাহানা
তুমি সুখের মাঝে সুখের ঘ্রাণ নাও
সুখ পিপাসা লালন করো
সুখের ঘুড়ির সাথে নাটাই বেঁধে উড়ে বেড়াও
তুমি শূন্যতার মাঝে সুখ রোপন করো।
দুঃখের শঙ্খের মাঝে বেজে ওঠে তোমার সুর
বাঁধনের সুতোয় দিয়ে মোড়ানো তোমার পায়ের ঘুঙুর
কতক্ষণ আর পৃথিবীটাকে নাচাবে তুমি;
হয়তো একদিন ঢেউয়ের স্রোতে মুছে যাবে তোমার
সুখ কিংবা দুঃখের সাগর
নিঃশ্বাসটুকুর দাফন হবে
জীবন্ত চোখের জলে জন্ম নেবে নতুন কোনো সাগর।
বাঁধন
ততটাই তুমি চেয়েছ
যতটা তোমার দেহরস নিঃসরণ হয়েছে
বিধাতার দরজায় দাঁড়িয়ে রও তুমি
দুহাত পেতে,
তোমার সর্বত্র দিয়ে
হাহাকার কাঁদে তোমার দুর্ভিক্ষের উঠোন
খুঁজে বেড়ায় একটি অন্তরঙ্গ মুহূর্তের গল্প
অন্তরঙ্গ অলিগলি
অন্তরঙ্গ প্রেম
অন্তরঙ্গ পথের প্রতিটি রেখা।
আছে অনেক অন্তরঙ্গ ভালোবাসার গল্প,
সেই আত্মিক অন্তরঙ্গ সময়ের মাঝে;
আছে অনেক কাঁটা
আছে অনেক কলহ
আছে অনেক ক্রোধ
নেই কোনো ধৈর্যের বাঁধন আকাশ আমৃত্যু স্বপ্ন
আমি আমৃত্যু জীবনের চাওয়াতে
প্রকৃতির কাছে হয়েছি নির্বাসন
আমি বাঁচতে চাই সহস্র বছরের সাধকের ধ্যানে
অমূল্য প্রেম প্রেয়সী গল্প হয়ে
ওই পৃথিবীর সকল আয়ু আমাকে দাও
ঘুমন্ত চোখের সব কপাট খুলে দাও
যেখানে প্রতিনিয়ত আমি মৃত্যুর হাসি দেখি।
আমার মন স্বতঃস্ফূর্ত প্রফুল্ল হয়ে ওঠে
বিধাতা; আমি স্বর্গের পথ ধরে হেঁটে যেতে চাই
মৃত্যুকে খুব কাছে থেকে ফিরিয়ে দিতে চাই,
চূর্ণবিচূর্ণ করে কষ্টগুলোকে ছুড়ে ফেলে
অতল সমুদ্রের স্নানে দেহ ভেজাতে চাই।
আমাকে তুমি আমৃত্যু স্বপ্নের ঘ্রাণ দাও
আমি স্বর্গদ্বারে স্বপ্ন নিবাসের নীড় বানিয়ে দেবো।