দেহে আসে ঘাম-চতুর কোষে-পানিরাঙা রথে
সে যে সমুদ্রের দিকে…নিসঙ্গ বটে
রাসবিহারী নিরবতা নিয়ে—এঁকা হাঁটে প্রাক-প্রাতরাশে
তুমি…অন্ধের যষ্টি
যত ক্ষত, তত স্পৃহা, তত লিপ্সা
আনন্দ দুই ধার…
লাগামবাজ হৃদয়…ভাগে ভাগে খণ্ডন
খাণ্ডবদাহন—চূর্ণ করো বিস্তৃত সমতট, ক্যাফেটেরিয়ার আওয়াজে—তুমি নিলীন
মাথার পিছন উল্টো শরীল—তুলে নাও শ্রমণ—তারপর ঝুলনপূর্ণিমায় গেঁথে দাও—দেহ
গোত্তা খাওয়া ঝুলে গেছে ঝুলন্তর (রব) রবে
প্রস্ফুটত…গ্রহ থেকে মৃত্যুর গতি নিয়ে
নিজের দিকে কত কত তুমি তেড়ে আসে
তেড়ে আসে—
আসেই…
এক রত্তি
মা-মাসির জীবন—প্রারম্ভিক
ভাঙা খামে ফুলেল মুখোশ—চিহ্ন হয়ে দাঁড়ায়…প্রশ্নবোধক। কোলেপিঠে নেইনি কোন দেমাগ।
দু-দিকে দু’টানে খুলে গেছে আরাজ।
সুক্ষ্ম শিখরে
পশ্চাদগমনে ও সরণে
গমনের পর তুমি অন্তর্জাল ঘাঁট
স্নান করে বহুলোক—ডুবাও—রসেবশে
ইস্তফা!
…সুষমা—করমণ্ডলঘর
আসো নাভির ব্যঞ্জনায়
উম্মত মিনতারা…
শীর্ষে লেপ্টে থাকুক অভেদ্য বায়ু
বায়ু
কিংবা
পয়গাম
ধরা এবং ছোঁয়া, ছুঁয়েই যাও
এ কলিরেখা মর্মর ঘ্রাণ—পরান নিতে
শুয়ে-টুয়ে আসো…তারপর
অবিকল বিচ্যুত রস, বিফলস্নাত—
কোথায় বান্ধিব দ্রোহিতা সোনা—সবখানে হৃদয়ের ঘটনা।
হরি আর আজমির দরগা।
এ দরুদের নগরে
দিনান্তের দুপুরে
আহারে আহারে
কে যেন মোচড়িয়ে তলবাসে ঢুকে যায়…
ফসলের তোড়ে, ঘরামি—বাতাসের বেগে—
উদাম বুদাম বুকে গমক্ষেতে ঝাঁপ মারে—
আরও ঝাঁপ মারে—কলিজায়
প্রশ্বস্ত জমিন আরও প্রশ্বস্ত হয়—বুকফোলা কবুতর ঠোঁটে ঠুকরে—
আরামচে ঢেলে দেয় দুধ, তবে শালদুধ।
দরুদের নাগর
রাতে ও বেয়াইনে
আহারে আহারে
ক্যামন যেন উঁকিঝুঁকি মারে তলপেটের আড়ালে
আজানের সময়; কাউকে না কাউকে—
চুল খোলা রেখে—নিশ্বাস ফুঁক মারে—হারিয়ার টবে
গলিতে গলিতে টব—
দৃশ্যমান শূন্য হয়
যদি কারো মস্তকে আগুন না থাকে—
জানা নাই কী হয় তার কিংবা তাদের
যদি কারও চোখে ধুলোপড়া না থাকে—
যদি কারও বুকে—বিশ্বাস না বাধে—
তবে
সময়কে সমুদ্রযোগে ঠুঁ মারা যায়।
আহা! দরুদের নগর ও নাগর
ক্যামন জানি ম্যাড়ম্যাড় করে
গলনের দিকে
এভাবে সেভাবে
ঝুলে আছে পদ্ম
নেয়ে আসে খণ্ড
তুলে দাও ইক্ষণ
হরি ষষ্ঠীতে মেয়েরা যেভাবে
সারি বেঁধে তুলসি কুড়ায়, ব্লাউজ রেখে—সেভাবে
রূপে দীপ্ত
ঝলকের বহর
গুনে নাও জল
প্রাতঃপানের পর
সমুদ্রতটে শামুক যেভাবে ডুবে ডুবে হয়রান,
জলের খোঁজে। সেভাবে।
একটা পাঁয়তারা—ঘুরছে গ্রামের চারদিক
মেঘের ডাক—এক উজ্জ্বল ধ্বনি,
ধুনচিতে ধনুকের তাল—নাচার আগে কোলে নাও মায়া
মহালয়ার আগে দুর্গতিনাশিনী যেভাবে
কোলে রাখে সত্তা, হারানোর ভয়ে। সেভাবে।
আহা! দরুদের নগর ও নাগর
ক্যামন জানি ম্যাড়ম্যাড় করে
স্খলনের লোভে—পাতহীন উদ্রেকে
চারধারে সবকটা দরাজ বন্ধ হয়ে আছে
ভিড় করে জমছে—মরা লোকদের প্রাণপুরুষ
অগনিত পানির ভিড়ে মিশে যাওয়া নৌকা দেখি
দৃশ্য শুষে নেয় যা
দৃশ্যতরু সদরে আড়াল হয়
হতে থাকে—হতে যাওয়া দেখি
ঘাটের উচ্ছাস উচ্চারণ করে গোলাপি কাক
গেরুয়া দুপুরে ঘটনাটি ঘটে বা না ঘটে
তাও দেখি
বৈঠা উচকে ওঠে
হাওর দিগন্তর দিকে
নদী মিশে কাঁদে
হু উউউ হুইসেলে
দৃশ্যতরু আবারো আড়াল হয়
হতে থাকে
হতে যাওয়া দেখি বা না দেখি
বানভাসি কস্তুরী ভেসে যায়
রক্তকোড়কের ভেতর
ফুটে আসে ফুল
নতুনভাবে সূর্যের কাছাকাছি
আলো নেমে যায়, যতখানি যাওয়া যায়
ঢেউ মিশে যায়, মিশতে মিশতে
জেগে ওঠে নৌকা
জেগে ওঠা দেখি বা না দেখি
বিষাদ শুকিয়ে রুগ্ণ ডানা মেলে
উড়তে চায়, পোড়া মাটির দেশে
মাটি ভেঙে জেগে উঠে ক্লান্তি
ক্ষান্ত হই,
ভক্ত সেজে
কাছে যাই
নূহের নৌকা ভেসে ভেসে যায়
হলুদের সিংহাসনে
গন্ধ আসে, আসতে থাকে
নিশ্বাস ফেলিয়া ক্লান্ত হই
হতেই থাকি
এ পোড়াবাড়ি ছাই, তবু রাই
ছেঁদের ঘাঁই, নিয়ে এলে
ঢেলে দিলে ঘুম
ফলের মন
ইনাই বিনাই চলে
স্নেহমাখা বুকে
চড়জাগা পেটে
এই দেহ ছলাছল
ক্লান্ত নও, সমুজ্জ্বল
আগুনের ভয়ে দূরে থাকি না
নাভিতে মুখ ডুবিয়ে
আরো একটু নামিয়ে
সাপের জিহ্বা চুপ থাকে না
এইত কুসুম কুমারী
কথায় অ-কথায় আড়ি
দুধালি ভাণ্ডে—চুমুক মারে
কে মাতাল কে মাতাল
ধেয়ে আসে পতনসিদ্ধ সুরা—দু’ধারে
চলে যায় সুরে, অথবা সুরারোপে
যে তাল—সেই মাতাল!
ও প্রাণ দোজগী
উতলা দেহে—রসিকজান ঘোর
তুলে আনি তোলামন—ঘোরে পাল্টাই
খণ্ডে খণ্ডে দেহে (উন)ঘ্রাণ
পাখি চমকে উড়ে চমকে নাচে
নজরবিহীন উড়ে—রসিকজন জানে
যদি আসে মরণ, জলমলে চরণে
ভ্রমণ করউইন ভ্রমণ করউইন
এ মাতালে ঐ চাতালে
ঋপুতে আধাঋণী পথ
নিম্নরত রথ
নিম্নগামী হয়ে
আখড়াধারী হয়!
ও প্রাণ দোজগী
উতলা দেহে—রসিকজন ঘোরে।
সভাশেষে মাস্তুল নারী নতজানু সাধুর ভঙিতে—
হৈ-হুল্লোর করেটরে—রয়ে-সয়ে মিউজিকে সুর তুলে—
এমন দিন আসিবে না কোনোদিন
বিরান পথে নেমেছি যতদিন
পিছু পিছু ঘুরিছে সময়
তোমার …
একটা মন হাত বাড়িয়ে, তুলে নিয়েছে
একলা পথে, হারিয়ে যাবার আশা নিয়ে
দাঁড়িয়েছে দরবেশ ক্ষণ—দুনিয়াদারি
দেখনা মন, তপস্বিনী
কতটা এলোপাতাড়ি
বলি তারে—রসের ভারে—করি না আহামরি
খুঁটি নাড়িস না, পরীমণিরে ছুঁয়ে—অন্ধকার ঝঁপে
পাগলের স্বরে—সেনানিবাসে
এমন দিন আসিবে—আশ্রমে
সুর্য নিভে গেলেও—আলো থাকে!
তবু নড়বে না—নাগরের মন
স্বশ্রম কারাদণ্ডে—নাগরীর সনে
এমন দিন আসিবে না কোনো
বিরান পথে নেমেছি যতদিন