আম্মা
টিপ সই দিয়েই যাত্রা শুরু আমার আম্মার।
বিএ পাস জামাইয়ের প্রয়োজনীয় কাগজ পুড়িয়ে কটু কথার সূত্রে অ আ-এর হাতেখড়ি নবী ভাইয়ের হাত ধরে। তিনি এখন গাদা গাদা বই পড়ে শেষ করেছেন। জনতা ব্যাংক থেকে স্বামীর পেনশনের টাকা ওঠানোর জন্য কলম ধরেন। এখন টিপসই সেকেলে। ক্ষুধার্ত ছেলেমেয়ে নিয়ে পুকুর পাড়ে ঘুরে-ফিরেছেন। শিক্ষক স্বামীর সম্মান নষ্ট হওয়ার চিন্তায় অন্য ঘরে কাজ করতে পর্যন্ত যাননি। ব্যক্তিত্বে শুধু ‘শিক্ষকের বউ’ ফুটে থাকতো। এখন হাতে একটি মোবাইলফোন। রাত তিনটে বাজলেই তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তে ওঠেন। প্রতিদিন কাউকে বিরক্ত করবেন ভেবে ষাটোর্ধ্ব মানুষটি আমার কাছ থেকে ঘড়ির হিসাব শিখে নিয়েছে। শেখাটা কি আদৌ শুধু শেখা?
আম্মারা এভাবেই হস্তগত করেন নিজেকে, ব্যক্তিত্বকে, জীবনকে।
রুমমেট
একই রুমে বসবাস আমাদের।
বেখেয়ালি কিংবা সচেতনতার দোরগোড়ায় বেশ স্বতঃস্ফূর্ত জীবন,
আরাম আয়েশি চলাফেরা ঠিক বলা যাবে না
কেননা আটটি শহরের প্রাণ মিলিত হয়েছে একটি কেন্দ্রে,
তবে ছিমছাম।
মাসে অন্তত একবার লুকিয়ে স্বামীর পরিমণ্ডলে ঘুরে আসে কেন্দ্রবিন্দু থেকে ছিটকেপড়া তারকা।
ঠিক সেদিনই আমার ফোনের এমবির খরচের পরিমাণ বেড়ে যায় সেই সাথে ঘুমের ঘাটতি।
পরদিনই বেঘোরে ঘুমাতে পারি রুমমেটের স্নিগ্ধ হাসি দেখে।
গণতন্ত্র
কাঁদতে দেখেই মা আমার হাতে তুলে দিলেন খেলনা,
আদতে এটা অনেকটা রসময় ফল।
ইন্দো-ইয়োরোপীয় থেকে বাংলায় পদচারণ, কিছুটা নিশ্চলতা আবার বিরামহীন পথচলা
সহস্রাব্দের দ্বিতীয়ার্ধে অজস্র ক্ষুদ্রের ম্লেচ্ছাচার কিংবা কিংবদন্তির ঝাঁজরা করা বুক; কুমারির পূজার শেষে পবিত্র হাসি অথবা অপ্রকৃতস্থ গর্জনে বুনো জঙ্গল ডিঙিয়ে ঘরে ফেরা।
আহত পাখির উন্মাদনা থেকে শুরু করে বয়স্ক বুড়োর ঘোর কুয়াশা কেমন ইউজলেস ; সত্য সবসময় কঠিন বন্ধু। শৈশবের খেলনার মতো এত বড় পেয়ার কে আছে আঁকড়ে ধরি তাঁকে। প্রচণ্ড আবেগ প্রকাশ করতে গিয়ে প্রথমেই বিদ্ধ হই কাঁটার আঘাতে। হরতাল, প্রতিবাদ, সমাবেশ, মিছিল, মিটিং, সম্মেলন আরও সব জিনিসের জন্মের ভেতরে আমি শ্বাস নিতে পারছি না।
সম্পাদকীয় পৃষ্ঠায় দেখলাম নাম তার গণতন্ত্র। অসার হয়ে লীলানৃত্য দেখি