০১.
বৃষ্টিমুখর আকাশ কাঁধে কায়ক্লেশে ছুটলাম মানুষের দিকে, মানুষ দেখালো পথের স্বপ্ন; পথ খুঁজতে খুঁজতে স্বপ্নগুলো ঢুকে গেলো বুকের বিপ্লবে, তারপর তুমি এলে রিয়া-
এমন সাহসে ভর দিয়ে তুমি এলে, যেন উজানের নদীতে তুমিই প্রকৃত নাবিক! তোমার নামেই প্রাণ ফিরে পেলো অক্ষর, আর মন ভালো করার-অখণ্ড সন্ন্যাস।
০২.
তোমার প্রদীপ্ত হৃদস্পর্শে হাওয়ায় উড়ালাম হেমন্তের খুঁটিনাটি; অঘ্রাণের শীতনিদ্রা ভেঙে পুনরায় জেগে উঠলাম কবিতার মর্মে, যাপনের স্তোত্র তোমাকে মানতেই পারি রিয়া;
যখন তুমি এসেছ পুরাণকল্পের স্তব্ধতা নাড়িয়ে বুকের ভেতর, ধর্মশালার কী প্রয়োজন তখন! অগোচরে পুষ্ট তোমার মনোভূমে বর্ণে বর্ণে রুয়ে যাচ্ছি অসমাপ্ত বিপ্লবের সবটুকু শুশ্রূষা।
০৩.
নতুন কোনো ভোরে, হয়তোবা শোরগোল উঠবে পৃথিবীতে, পরিবর্তনের; তখন হয়তো তুমি উড়াচ্ছো শান্তির কপোত সিন্ধু অববাহিকায়, অন্য গৃহে; বড় কথা-তোমার পায়ে সহিংসতাও নতমুখী;
একদিন ফুলের উৎসব জমবে শরণার্থী পল্লীতে, এমন কল্পনায় অতিশয়োক্তি নেই, কেননা-পৃথিবীর সকল যুদ্ধ ও শান্তিতে তোমার নামের জয়ধ্বনিই ভীষণ প্রয়োজন।
০৪.
অহেতুক পাখির ডাকে ঘুমভাঙা রাতে, ভীষণ চেয়েছি তোমাকে; কেননা রাতের আকাশে দেখেছি সম্প্রীতির লেলিহান দাউদাউ! কী নিদারুণ অশ্রুপার্বণে জেগে ওঠে পাড়া।
তোমার জানা আছে, পৃথিবী ভরে গেছে অসংখ্য ইতরে, এ ওর কাঁধে ধরে আছে স্বার্থের বন্দুক; রিয়া, বহুপথ পাড়ি দিয়ে যখন এলে-সংহার টঙ্কায় বাঁধো প্রাচীন ধনুক।
০৫.
যখন নেশার মতো আঁধার এসেছে নেমে, ভোগের পৃথিবীতে; উন্মুল মানুষে ভরে গেছে চর, তুমি কী ঘুমাও ফুলের শ্রোণিতে? তুমিও কি রাতজাগা পাখির ঠোঁটে গুঁজে দেবে ভোর?
তোমাকে দেখলে মনে হয় ফুটে আছো স্নেহশীল, মহাভারতের অন্তিম কল্পনায় শতপুত্র শোকে! অথচ, গলে পড়ে হিম ক্ষুব্ধ জাতিস্মর; একটু দূরেই ডাকে নদী, রিয়া দেখো, ঘুমাতে পারি না কিছুতেই…
০৬.
তোমাকে ঠেস দিয়ে জেগে উঠেছে প্রাণ, নিঃশ্বাসও সঘন। একান্ত শূন্যতা ছুঁয়ে জীবনের সকল যন্ত্রণা তুলে নাও এবার; জীবন আর কতটুকুই, বলো?
দিনশেষে তোমাকে চেয়েছি সম্ভাব্য সকল স্তরে, অরণ্যের নিঃসীম শূন্যতায় তোমাকেই প্রয়োজন। বন্ধনী খোলার অধিকার যখন দিলেই রিয়া, কায়ক্লেশে তুলে রাখো মননের কোষে।