তুমি কোনটা নেবে?
আমার হাতে বন্দুক, আমার কপালে রক্ত
তুমি কোনটা নেবে?
যদি বন্দুক নাও—তুমি হিংস্র ঘাতক।
যদি রক্ত নাও—তুমি অপরিণামদর্শী কাতিল।
আমার চোখে অশ্রু, আমার ঠোঁটে হাসি
তুমি কোনটা নেবে?
যদি অশ্রু নাও, তবে তুমি
দুঃখবিলাসী—মানে আমার প্রকৃত বন্ধু।
যদি হাসি নাও, তবে তুমি
দুধের মাছি—মানে সুসময়ের ধাপ্পাবাজ।
আমার কপালে ঘাম, আমার দু’চোখ লাল
তুমি কোনটা নেবে?
যদি কপালের ঘাম মুছে দাও শুষ্ক আঁচলে—
তুমি আমার প্রকৃত ঘরণী, আমার অর্ধ-অঙ্গ।
যদি রক্তিম চোখে বোলাও হাতের শীতল আঙুল—
তুমি আমার স্নেহশীল প্রেমিকা, রমণযোগ্য ভালোবাসা।
নাটাই ঘুড়ির গল্প
নাটাইয়ের আধিপত্য ভালো লাগতো না ঘুড়িটার।
সে চাইতো আকাশে আকাশে
মুক্ত জীবন।
নাটাই চাইতো ঘুড়িটা থাক
অনুকূলে; কারণে-অকারণে মানুক বশ্যতা।
এই নিয়ে শুরু হলো দ্বন্দ্ব, যেন বন্ধন
ছিন্ন করতে পারলেই বাঁচে।
যেদিন ছিঁড়লো সুতা, ঘুড়িটা মুখ থুবড়ে
পড়লো নর্দমায়। আর নাটাইয়ের স্থান
লাকড়ি রাখার ঘরে।
তালাকনামায় সাইন করে দুতলার সুখি দম্পতিরা
এখন যেন নাটাই ঘুড়ির গল্পটারই প্রতিচ্ছবি।
রিকশাতে একদিন
রিকশাতে একটা মেয়ে একটা ছেলের কাঁধে মাথা রেখে
ছেলেটাকে জড়িয়ে ধরে বসেছিল।
আর ছেলেটা মেয়েটার চুল-ওড়া কপালে চুমু খেতে খেতে
নরম শরীরে শরীর ঘষছিল।
রিকশাটা চলে গেলো আমারই চোখের সম্মুখ মাড়িয়ে।
মুহূর্তে আমি যেন তলিয়ে গেলাম, পুরাতন স্মৃতির
আড়ালে গেলাম হারিয়ে।
মনে পড়ে তার মুখ তার চোখ, যাকে আমি প্রাণপণ বেসেছি ভালো—
আহা, সেই কবেকার কথা—এমন মধুর দিন আমারও তো ছিল।
রিকশাতে একটা মেয়ে একটা ছেলের কাঁধে মাথা রেখে
ছেলেটাকে জড়িয়ে ধরে বসেছিল।