মায়া-১
তোমার দুঃখ লিখে দেবো পয়ারে পয়ারে, পাঠকের চোখে তুমি কাঙ্ক্ষিত নায়িকা!
তোমার একাকী বিছানায় একপাশ শূন্যতাজুড়ে আমার শুয়ে থাকা, ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাসের ভ্রম, ঠোঁটের স্পর্শ, স্তনের ভাঁজে মুখ গুঁজে কান্নার গল্প; লিখে দেবো সব।
বাহবা কুড়োবো প্রতিদিন, তোমার দুঃখ কুড়িয়ে বানাবো চিত্রকল্প; কখনো তীলবতী, কখনো অরুণিমা। কবিতায় কবিতায় বেলা গড়াবে! তুমি বেঁচে থাকবে প্রিয়তমা আমার!
সেদিন মস্ত চাঁদ পায়রার আকাশে! মেঘের কার্নিশে পা দুলিয়ে হাসবে তুমি! মৃত্যু; আমার সামনে হয়তো দৃশ্যমান! ছাপার অক্ষরে প্রথম কবিতার মতো সদ্য প্রকাশিত আমার শবদেহ!
কেবল রয়ে যাবে গোপন, আমার অদৃশ্য দুঃখের ইতিহাস।
মায়া-২
দুটো জোকার হাসতে হাসতে তাড়া করলো রাতদিন। আর আমি দৌড়াতে দৌড়াতে পৌঁছে গেলাম সিঁড়ির সব চেয়ে উঁচু ধাপে! উঠতে উঠতে আমি ক্লান্ত! তবু সেই জোকার হাসে আর হাসে!
কী যে অসহ্য হাসি! ভাবলাম আমাকেও হাসাতে চায়! অথচ আমি দৌড়াচ্ছি…দৌড়াচ্ছি…দৌড়াচ্ছি…
জোকারের চোখে তাকালাম একদিন, আশ্চর্য করুণ সে চাহনি! কোমল আর দুখী চেহারা স্পষ্ট হয়ে ওঠে সেই চাহনিতে!
একটা ভয় পাওয়া গল্পের মতো বয়ে বেড়ালাম তাকে! এতটা দিন! এতটা কাল! এত ভুল! এত বিভ্রম!
মায়া-৩
তোমাকে ছুঁয়ে দেবো নিবিড় নৈঃশব্দ্যের দরোজায়! মায়াময় চোখের চাহনি মুখস্থ করবো রোজ! চোখ থেকে নাসিকা বেয়ে ঠোঁটে নেমে আসতে পেরিয়ে যাবে আমার একেকটি দুপুর! একেকটি বিকেল পেরিয়ে যাবে গাল বেয়ে গড়িয়ে নামা রোদের সাথে খেলা করে!
কেউ জানবে না! এতটা গোপনে, যে কারো পক্ষে সন্দেহ করাও অসম্ভব!
তোমার জন্য গোপন প্রতিক্ষাগুলো টেরই পাবে না কেউ! দিব্যি হেসে হেসে কথা বলবো! খাবো, ঘুমাবো, রিকশায় চড়ে উড়বো একা! অথবা অন্য কারো সাথে!
নাহ! না না না! কাউকে বলা যাবে না! বললেই সব শেষ! হাওয়াই মিঠাইয়ের মতো নিভে যাবে সব!
তোমার আরাধনায় কেটে যাক এ জীবন! তাও ভালো! কেউ না জানুক, তুমি তো জানো! কবে কোন সন্ধ্যায় আমার মন ভালো করে দিয়েছিল একটা অজানা পাখি! শিস দিয়ে বাজিয়েছিল শরীরী সেতার!