রাত
আকাশ বেয়ে রাত্রি নামে বুকে
নিবিড় হয়ে নামে চোখের তারায়
আমার যত আলোর ছিল দাবি
জ্বলছে তারা আজ তোমাদের পাড়ায়
মুঠো খোলা চুড়ির মতো তুমি
ছড়িয়ে গেছ, গড়িয়ে গেছ দূরে
প্রাচীন বটের পাশে একা আমি
কথা খুঁজি মাটির প্রাচীর খুঁড়ে
কথারা সব ফানুস হয়ে ওড়ে
ছেড়ে গেছে স্মৃতির ভিটেমাটি
তুমিও আজ বানকুড়ালি ঘুড়ি
আমি গাঢ় রাতের সাথে হাঁটি
মানুষ
বুক তো বুকই—পাথর হলে ফেটে যেত কবে
দুঃখ চেপে হাসে যখন আনন্দ উৎসবে
চোখটা যদি সাগর হতো, শুকিয়ে যেত সেও
তার চে’ বেশি জল দেখেনি সাত সাগরের ঢেউ
কেউ বোঝে না ভিড়ের কাছেও মানুষ বড় একা
আরশীতেও নিজের সাথে হয় না নিজের দেখা
চোখে এখন সন্ধ্যা
চোখে এখন সন্ধ্যা;
তুমি কবে ফিরবে?
ক্লান্ত ঘুমেরা ফিরে আসছে গুটিগুটি পায়ে
সহস্র আলোকবর্ষ পরিভ্রমণ করে,
তুমি আসবে না
. ছোট্ট
. একটু
. ভুলের
. পাহাড় ভেঙে
. এই শেষ বেলা?
চোখে এখন সন্ধ্যা,
. গাঢ় বেদনা
ছুঁই ছুঁই করছে কালো কোট পড়া মেঘ!
মেঘ-মাখানো স্মৃতি!
একদিন বৃষ্টির বরফ মেশা জলে ভিজে
বলেছিলে, এই নাও উষ্ণতা!
চোখে এখন সন্ধ্যা, ছেঁড়াফাড়া বিবর্ণ অন্ধকার।
তুমি ফিরবে না?
স্মৃতিগন্ধা রাত
শিংয়ের ডগায় জেগে আছে রাত
মৃদু হাওয়ায় কাঁপছে গাছের পাতা
বুকের ভেতর কেন অকস্মাৎ
উল্টাতে চায় পুরানো সব খাতা
অচেনা এক নদী ছিল তখন
অসময়ে ভেজাত মন-পাড়া
সেই স্মৃতিটা আজকে অনুক্ষণ
রন্ধ্রে রন্ধ্রে দিচ্ছে ভীষণ নাড়া
স্মৃতির ঘরে খিল দিতে চাই যত
তত খোলে হাজার দুয়ার কপাট
তসবি দানায় ঘুরছে অবিরত
তোমার নামের হারানো রাজ্যপাট
ফাঁদ
আকাশ চুঁয়ে শিশির ঝরে ছাদে
ঘুমে ঝরায় চোখের দুটো পাতা
জীবন বাঁধা প্রলোভনের ফাঁদে
শূন্য থাকে সব হিসাবের খাতা
ছুটতে ছুটতে হঠাৎ দেখি আমি
দাঁড়িয়ে আছি শুরুর বিন্দুতেই
জীবনের এই অদ্ভুত পাগলামি
মূল্য কি তার? কানাকড়ি নেই
শিশির তবু ঝরে গাছের পাতায়
স্বপ্ন দেখে তুচ্ছ শুয়ো পোকা
এই তো জীবন–হিসাবের সব খাতায়
মেলে না তো শুভঙ্করের ধোঁকা
মায়াবতীর জলে
রাকিবুল রকি
প্রচ্ছদ: সঞ্চিতা সৃষ্টি
প্রকাশক: চর্চা গ্রন্থ প্রকাশ
মূল্য: ১০০টাকা
বইমেলা, স্টল নম্বর-৩৪৮-৩৪৯