মানুষের ভিড়ে
মানুষের ভিড়ে দাঁড়িয়ে যখন
একা—একা হয়ে যাই, তখন গাছেদের
মতো চোখ কান বন্ধ করে দেই।
আমার ভেতরে কোনো হাওয়া আসে না,
বরং আমি একা হাওয়া করে যাই।
মানুষেরা নির্বাক বিমূর্ত হিংসা ছুড়ে দেয়,
শপাং শপাং শাসনের ছড়ি চালায়,
নির্বাক, আরও নীরব হয়ে যাই।
তবু বেদনার ভাষা মুখে
ফুটে ওঠে না।
তখন গাছেদের মতো নির্বাক হয়ে যায়।
চোখ যে ছবি দেখে
চোখ যে ছবি দেখে তাকে ধরে রাখে মন
আলোকচিত্রী যাকে ধরে একান্ত
পত্র-পল্লবে; তাকেও
দৃশ্য ও দৃশ্যান্তরে হারিয়ে যেতে হয়।
শুধু মানুষেরই সকল ব্যর্থতার চিহ্ন
লাল-টকটকে সূর্যের রঙ,
অস্থিরতার হিমছটা, যাকে ভালোবাসি—মন থেকে
ছেঁকে তুলে আনা তার সোনালু
আকাঙ্ক্ষার স্থিরচিত্র—আশ্চর্যরকমভাবে
. রয়ে যায়। গন্ধ বিলায় বনোফুল।
বৃষ্টি হচ্ছে
বৃষ্টি হচ্ছে, জানালার পাশে চুপচাপ ঝরে পড়ছে
গোপন কান্নার স্রোত। দূর আকাশে উড়ে
যাচ্ছে রাজহাঁস, সযত্নে লুকিয়ে রাখা প্রণয়ের ভ্রমর।
সখি আজ নিরাভরণ হয়ে তুলে আনছে প্রগাঢ় কাতরতা,
মেঘমন্দ্র ভেলায় সহস্র অনুরাগীর ভিড়ে হে বিভূঁইয়ের
বিদেশিনী, অস্তবেলার আগে তোমাকে নিবিড় চাই
বকুল আর পলাশের ঘন শাখায়। বাতাসে বৃষ্টির পরে ভেসে
বেড়ানো জলকনায় যে হিম, হিরণ্ময় স্মৃতি আহ্বান জানায়—
হে অপেক্ষমানা, আমাদের হৃদয়মথিত অস্তিত্বহীন প্রেম,
সমুজ্জল বিশ্বাসের ছায়া কি পথ হারিয়ে ফেলবে অনন্তের
কাঁটাতারের ভেতরে, কৈশরের কানামাছি খেলায়।