অভিজ্ঞতা
ফুল ও ফলের ভেতরে পার্থক্য বুঝতে শিখে গেছি—
কিভাবে এইসব নশ্বর মানুষ দীর্ঘ হয়ে যায়
কোনো এক কর্পূরের ক্ষণস্থায়ী সুগন্ধীর মতন—
গাছের শেকড়ে লিখে রেখে যায় অসমাপ্ত জীবনী।
এক পৃথিবী সমান বিশ্বাসের রোয়া বৃক্ষ ছুঁয়ে ছুঁয়ে
ঠিক কোনো পথভ্রষ্ট বাউন্ডুলে যাযাবরের মতো
নীরবে, হয়ে যায় এক অতিলৌকিক পাখি—
বন্ধ বুকের সিন্দুকে…জমিয়ে রেখে উষ্ণ দীর্ঘশ্বাস।
চোখ
তোমার চোখ এই পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ অণুবীক্ষণযন্ত্র—
কোনো সর্বজন স্বীকৃত নির্ভুল এক গবেষণাপত্র
রঙিন নক্ষত্রখচিত লুপ্ত সাংকেতিক দলিল—
সার্বক্ষণিক ব্যস্ত একটি অবজারভেশন থিয়েটার।
তোমার চোখ, সপ্তমণ্ডলের প্রাচীনতম হীরক খণ্ড।
মানুষ
রঙহীন তামাটে এক জড় পাথরকে ঘিরে
আমরা ক’জন মিলে একটি বলয় তৈরি করি
যার কেন্দ্রে রাখা রয়েছে লোভ, ক্ষুধা এবং কাম।
তাকে অবিরত প্রদক্ষিণ করে চলেছে নক্ষত্রপুঞ্জ
বিগড়ে যাওয়া বিশ হাজার নষ্ট নিউরন সেল
অজানা জটিল যত রোগের প্রতিষেধক—
আমরা তৎক্ষণিক…তার নাম দিয়ে দেই—মানুষ।
আমন্ত্রণ
শরীর থেকে খুলে নিও অজর নতজানু নদী—
বুকের মাঝে অজস্র রঙিন অক্ষরের মলাট
যারা ছিল…একদা তোমার স্বপ্নের অন্তর্গত।
আঙুলের ডগায় নোনাজল—ভাঙা কার্পাস…
চোখের সামনে একই সব দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি
স্তব্ধ রাত্রির ঝুলন্ত কাঁটাতারে স্থির অন্তর্বাস।
আকাশের ধবল চাঁদ…ফের দিয়ে যায়—
. আমায় প্রেমিক হওয়ার আমন্ত্রণ।
মানবজনম
একটি কঠিন ও দুর্বোধ্য জ্যামিতিক সমতল ত্রিভূজ—
লম্বের খুব কাছাকাছি সমদ্বিখণ্ডিত সরলরেখা..
সকল ব্যক্তিগত সুখ দুঃখের আড়া-আড়ি ভাগফল।
তড়িৎ সময়ের কাঁটাতারে ঝুলছে ভাগ্যের পেণ্ডুলাম
প্রাচীরের দেয়ালে উচ্চতার পরিমিত মাপকাঠি—
সামানুপাতিক ত্রিভূজক্ষেত্র—নামান্তরে মানবজনম।