অন্ধকার মাস্তুল
বোঁটা জয়ের জন্য আলোর প্রচণ্ড অন্ধকারেও এগোতে পারো, তবে পরকীয়াগতিতে এগোলে দেখবে, আঁধারের স্যুপ কেমন সুস্বাদু; এমনভাবে হামাগুড়ি দিয়ে এগিয়ে যাও, যেন চারপাশের ধ্যানটুকু ভেঙে না যায়, এগোতে থাকো রাজাসন বরাবর, যেন কাঁপুনি দিয়ে বিদ্যুৎ চমকিয়ে অন্ধকার মাস্তুল হেসে ওঠে, আবার যেন মনের হেরায় চলে যেতে পারি, এভাবে এগোতে থাকো
হ্যাঁ, হ্যাঁ, ঠিক এভাবেই হামাগুড়ি দিয়ে এগোতে থাকো, যেন কাঁকড়া নয়, গায়ে পিঁপড়ার পিলপিল হাঁটার সান্দ্র অনুভূতি হয়; হ্যাঁ, ঠিক এভাবেই এগোতে থাকো সকালের দিকে…
ফুলের উষ্ণ মহকুমায়
খিড়াখেতের বাঁওড়ে ওসদের কানাকানি, কবর-নীরব রাত। শুভ্র সারসের ঝাঁক পিঠে মুমূর্ষু রাতের প্রভাত। শীতঘুমে সিরিয়াল কিলারও মরমি শাশ্বত ফুলের উষ্ণ মহকুমায়।
সবুজাভ নক্ষত্রের ভোর স্নান করে আমাদের সূর্যের বিরহ-অমৃতে
দেখো রুবিনা, চুয়ে পড়ছে খড়ের ওমেও ওসের সফর। ঠাণ্ডা যোনির ডাকে হাড়ে ধরেছে কাঁপন, ফুলের উষ্ণ সুইমিংপুলে মুখ গুঁজতে উন্মুখ চাঁদের বরফ
রাঁড়
বাতাবির ঝলকানিই পথ দেখিয়ে নিয়ে যায় চেরাপুঞ্জির আশ্চর্য লবঙ্গে, এক সমুদ্র মেহেদিরঙের ডানায়! যে রাঁড় পান্থছলে রোজ এসে দাঁড়ায় অন্তর্বাসের দাগ, দেখে, জ্বলে আছে শতাব্দীর নিকষ ক্ষত দূরের টিলায়!
তার কোনো নিজস্ব ঘর থাকে না—এ দুঃখবোধ কে বুঝবে রাঁড়ের চেয়ে বেশি? কত আকন্দের ক্ষীর ঢেলেছে হাসপাতালে, হয়েছে ফাঁকা রাঁড়ের পথ, যেখানে ছলনার ঘ্রাণে ভাসে হলুদ চোখ…
মনোহর আঁধার
এই পৃথুল বসন্তের লালি দিনে উদালে দেখি—সে যেন এক লম্বা একমি, হেলে আছে আমারই কাঁধের ওপর, কান ছুঁয়ে ছুঁয়ে যেন বলছে—চলো বেরিয়ে পড়ি, টকটকে লাল শিমুলের বনে, ওখানে ময়ূরপাতার আরোগ্যবিতান; নিষিদ্ধ বাগান ডাকছে রুপালি মিথ্যার মজমায়…
ডাকছে—ধুলার পেটে সামান্য ডালিয়ার লাল, ছড়ায় যেখানে নিপুণ ময়নার স্বর…আজও বসন্ত খুঁজি যেখানে নিম ঝুলে আছে ফাগুনের কোরকে…
অসাড় করে দাও
হৃদয়ের বুনো ফুলে এই পৃথুল বসন্তে, সমুদ্রের লোনায় ডুবিয়ে দাও বুনো আঁধারে, যেখানে ক্ল্যাসিক নহর বহমান
আত্মহত্যা
একটা পাখি ঘুমানোর আগে কীভাবে একটা মানুষ ঘুমায়? ঘুমাতে পারে? পাখিদের ডানার কুচকাওয়াজে কারও ঘুম আসে? আসতে পারে? অথচ এখানে মানুষগুলো ঘুমালেই পাখিরা অভয়ারণ্য ভেবে কলকল করে জেগে ওঠে…
মানুষ মূলত এভাবেই আত্মহত্যা করে!
নদীর পাড়গুলো নদী ভাঙে না, পাড়েরাই লুটিয়ে পড়ে দীর্ঘ অপেক্ষার পর হঠাৎ নদীরে পেয়ে কলকল উচ্ছ্বাসে…এমন স্নিগ্ধ কিছু আত্মহত্যা আছে, যা মানুষ কখনো কখনো দেখতে পায় গভীর আঁধারে…