এক.
হৃদয়ে চুমুর গন্ধ মেখে ঘুমিয়ে গেছে বিকেল
সমস্ত অন্ধকার জেগে আছে শেফালির ডালে।
এতসব বিস্মৃতি ফাগুন রঙে
জানে না তৃণলতাদের মিছিল।
প্রেইরি বনের বাতাসের রিনিঝিনি ছোঁয় না বিকেলি
সুবাসে জেগে থাকে রাত, জেগে থাকে দিন
শেফালি ফুলের বুকের ভেতর শুভ্র প্রেম
রাতের বাতাসে তার সুঘ্রাণ,
সুঘ্রাণে বয় চুমু…
বুকের ভেতর চুমু দিয়ে যায় যে সব বাতাস,
তারা জানে—কতটা আগুনে কৃষ্ণচূড়া লাল হয়।
দ্বীপের অন্তরে কতোটা জল!
সময় পেরলে ঝরে যেতে হয়, শেফালি জানে;
তবু জমা রাখে মধু
উড়িয়ে দেয় বুকের ভেতর চুমু
যার নামে উদয় হয় তার সূর্য
তার তরে।
দুই.
মনের ছায়ায় বেনোজল
উচ্ছলায়
বান জাগে বান;
যে তল্লাটে মরু এখন সেইখানেতে ইতি
চলে এসো আদরবাবু
আদর দিনের সকালে;
উপচেপড়া জলকেলি আজ এই ভরা বাদলে
খেলি এসো সাঁতার খেলা উথালপাতাল মাদলে।
জলের দিনের জলমৈথন, জলের সংসার,
নানা খেলা খেলবো দুজন, এসো-
প্রজাপতি।
প্রভাত হলেই
খেলা শুরু প্রজাপ্রতি হয়ে
ভালোবাসাবাসি খেলা।
খেলাও আমায় ভাসাও ডোবাও
হাসাও জাগাও মন
মনের ভেতর মনের চুমু
বয় যে সারাক্ষণ।
তিন.
ফানুস উড়ে গেলে
মনের ভেতর…জেগে থাকে আলো
আধো আলো আধো ছায়ায় চেনা মুখগুলি হারিয়ে যায় চৈতন্যের গ্রহপথে।
যত্নকরা ফানুসের পিছনে ঘুরে ঘুরে অবশেষে বিধ্বস্থ চাঁদ ফিরে আসে বুকের গলিপথে,
সুখ নাকি দুখ ঝলসায় কলিজা, মন বোঝে না
ডাক শোনে ধোঁয়ামিছিলের ।
দুঃখস্নানে কামনার সারসংক্ষেপ লেপে দিয়ে একটি ফাগুন আগুন জ্বেলে বয়ে গেছে দিগন্তে
লেংড়া বোধে সহস্র রাত, পিছু নেওয়া রাতের পাখি আঁধারে গুলিয়ে ফেলেছে সমস্ত সাধ
তবুও ফাগুনের নামে এইসব পাখিকথা পাখিগান বয়ে যায়; না বলে, নিয়ে যায় সাথে
গুচ্ছ গুচ্ছ মনের ভেতর চুমু।
চোখের তারা আকাশে বিলীন…
ওগো রূপালি প্রণয়, তন্দ্রা নেই এ তল্লাটে।
বর্ষাগুঞ্জন রাত…মোহনা ছাড়া জলের ধারা ললাট পেরুলে,
অলীক স্পর্শ মনে নীল বাতি জ্বালে।
দূরে থাকা ভালো নয় ওগো দখিন হাওয়া, বর্ষাগুঞ্জন দ্বিপ্রহরে
শেয়ালের ডাক কানে এলে আঁতকে ওঠে বাবুফড়িং
তা জেনেও কী অভিলাষে একা রাখো দিনান্তের দীঘল অমারাত্রি!
বুকের ভেতর চুমু, চুমুর সাগর নিয়ে এসো:
এক মরুপ্রদেশ চুমুর অপেক্ষায়
ওগো, জলধি এসো
এক মরুর বুকে।
চার
লোভনীয় মাধুরী সন্ধ্যায় দোল খায় অতিআত্মার পিপাসা
মধুকরী নদী গান গায় অবেলার বর্ষণে।
তন্দ্রাচ্ছন্ন করবী বোতাম খুলে ভিজে যায়, তন্দ্রা তাড়ানোর উছিলায়-
উতরানো নদীজলে এ কার পা দেখা যায়! নয়নের কাজল গলে গলে
বয়ে চলা জলে ঢেউ এক দীর্ঘঃশ্বাসমাখা প্রেমের পদাবলি
লিখে যায়। বৃ্ষ্টির সুর ধরে বয়ে চলা মন ধরে রাখে কার সাধ্য!
মন মস্তিষ্কের অবাধ্য চাপে টালমাটাল রক্ত; চাপ দেয়, চাপ দেয় বুকে
শিরশির করে নেমে যায় জল, লোহিত রক্তের উষ্ণতায় প্রেম;
দূর থেকে ভেসে আসা কারও তোপধ্বনি জেগে রাখে প্রমত্ত দৃষ্টি
দ্রবীভূত মনে ছোঁয়ায় চুমু, জেগে উঠে প্রজাপ্রতি ডানা
স্নায়ু জেনে যায় মনের ভেতর চুমুর গতিপ্রকৃতি
আহা! মনের ভেতর চুমু
আহা! দ্রবীভূত চুমু…