নদী
নদীরা বেয়ে উঠছে পাহাড়ের দিকে
পেছনে সমুদ্র।
সাপের মতন মানচিত্র—
বাদামি দেশে হাঁটছে গাছ।
মমতার খোঁজে সরু নদী নামে
প্রতিদিন
আমার দুচোখে।
বিশুদ্ধ
একদিন ঘুমের ভেতর ট্রেন থেমে গেলো
মানুষের দল ছুটে এলো,
অসংখ্য প্রশ্ন গোলমাল করলো।
কেউ নামলে কেউ উঠে, স্টেশনে
আলোর কংকাল ঝুলে থাকে, মাইকে ভরসা
শুনি মিথ্যে গন্তব্যের, উদ্ভট হুইসেল
কথা রাখে না কখনো
আমিও কি তেমন?
বার্তা
এখানে অন্ধরা পথ দেখে হাঁটে
যদিওবা পা ভাঙ্গার যন্ত্রণা আছে—
শুনেছি কাক দেবতার মাথায় বসে
জাত দিয়েছে, তুচ্ছ বিবাদে!
অথচ ঘুমের দেশে রক্তপাত।
শুধু লাল,
মাঠে সবুজ ছায়া দিয়েছে মায়া
বৃষ্টির কুয়োতে জলশূন্য বক ডুবে মরে
—এ শোকের বার্তা?
নদ-নদী, পিঁপড়ের মতো মানুষ থমকে
গেছে, এ অপমান ধার করা আলো
বৃথাই রহস্য ঘেরা পথ চলে
যারা চেতনাকে বাতাসে উড়িয়ে
শ্মশান করেছে দেশ,
তাদের শৃঙ্খলা
অনন্তকালের পাপের ঘেরাটোপে অভিশপ্ত নগর যোনি।
বোকা মানুষ সিগন্যালে দাঁড়িয়ে ভালোবাসে
ছায়ার মায়া কান্নার দিনগুলো।
খোলা হাওয়া
মেঘের ভেতর রোদ
আংশিক অপব্যয়
নিয়ে নিদ্রা যায়
এখানে বিশুদ্ধ অন্ধকার
একা থাকবার দাগ
হয়ে ধরা দেয়
ঘুমন্ত হরিণী প্রতিরাত
মরচে পড়া চুম্বন
গ্রহণে সম্মত হন
বালিশের তলায় তর্কের
টিকিট রেখে প্রণয়ে
গিয়েছেন বহুবার
জল-হাওয়ার গান
এখানে আনন্দআলো বাহিরে যাচ্ছে প্রতিদিন
বাড়ি ফিরছে মানুষের মন।
বুঝলাম জল-হাওয়ায় গান।
ঘরের পলেস্তরা খসে পড়ে বেরিয়ে
পড়ছে তাবৎ পৃথিবীর সুখচিত্র;
ইশারায় কথা
বুক কেঁপে ওঠে।
চিম্বুকের পাহাড়ে
পাহাড়ের ঢাল বেয়ে আড়াআড়ি ছুটে যাচ্ছে মেঘ।
স্নান ঘরে ভাসছে রুমাল
বাতাসে নিভে আছে আলোর পিঠে বসা লজ্জা;
একটা জানালা হা-মুখে গিলছে জল,
সেলাইকরা দস্তানে ঘুমচোখে কবে শব্দরা জেগে উঠবে?
হয়তো তুমি মিশে গেছো কটেজের রেলিংয়ে
সাদা
কাগজের ঢেউয়ে ঢেউয়ে
পাহাড়ের নীলাঁচলে, শামুকের খোলে জবুথবু
তোমাকে জড়াজড়ি জটাজল ভালোবাসা অনেক
কাছাকাছি।
খাঁচার পাখি
মাথায় ঢুকে গেছে অসংখ্য নষ্ট বুদ্ধি
হয়তো মধুর ঘুম
বুকের ওপর বই রেখে ঘুমুতে চাইছে
অপ্রিয় পাখির মন
দেয়ালের বর্ষপঞ্জিতে শান্ত সাঁতার
খুঁজছে চিরকালীন ছুটি
দীর্ঘবিশ্বাসের জালে অনুরোধ ব্যাকুল বাদ্যের
মূর্ছনায় জেগে থাকে
ঘরের কোণে টেবিল নড়ে গেলো
নিরপেক্ষতার সতর্ক নিদ্রায়
ছেঁড়া বইয়ের সঙ্গে তেলাপোকা রঙ
মিশে আছে, ওখানে নিম পাতার ছাই
পবিত্র পোড়া মুখ দেখেছি
আরো দেখেছি তোমার বিনয় উৎক্ষেপণ
আঞ্চলিক
প্রতিদিন দেখা হলে খিস্তি শোনে
বন্ধুদের এই এক রোগ
চারপাশের সন্দেহ
অশ্লীল কবিতা ছুঁয়ে দেয়
জানুপাখি
ফতুর করে দেয় আমাদের বালককাল
দশকের কবিতায় মজেছেন
নয়া জামানার কবি
এইতো বিবস্ত্র কবিতার
আস্ত সংকলন
আসুন কবিতায় ফিরিয়ে আনি
মানুষের হারানো জীবন
ঘুম
বালিশের কাছে একটা অদ্ভূত মৃত্যু
অন্ধ হয়ে গেলো
অন্ধ সন্ধেবেলায় রাত্রি নামিয়ে আনে
নাচো হিম সুন্দরী নাচো ঘর-ভর্তি নিষ্ফল আলো
অবসাদ অন্ধকার
আবছা কিছু কি বলতে চায়?
শূন্য গণ্ডুষে ধর্ম বেচে রাজনীতি লিখেন কেউ কেউ
রক্ত যায় ঝরে প্রতি ধর্মঘটে
ঘুমের ঘোরে স্বপ্ন কেবলই দোষ নিয়ে কবিতা লিখে
বিষ
কত অজানা, তোমাকে যায় না জানা
এলোমেলো বন
এ কেমন রঙে আঁকা গাছ?
ধুলোয় লুটোপুটি ফুল-পাতা-গাছ।
মনের ভেতর আকাশ ধরতে থাকি
ওই হাওয়াতে চলি
ওখানে অনেক বিষাক্ত হাওয়া বয়ে যায়
কেউ জানে না কেউ জানে না