কবিতার খাতা
এলোমেলো কাটাছেঁড়া কবিতার খাতা
অক্ষরে অক্ষরে কী যে হাহাকার
আলোহীন, জলহীন—
যেন কোনো নিষ্প্রাণ পাতা।
ভাঙনের দিন শেষে—
দাঁড়িয়েছ কখনো কি বিষণ্ণ নদীটির পাড়?
কান পেতে শুনেছ কি তার চিৎকার?
এখনো তো ফিরে আসে চৈতালি রাত
আলো দেয় আধো ভাঙা চাঁদ
চাঁদটাকে দেখবার ছলে—
কত রাতে এসেছিলে
নিজেকে ভেজাতে এই জোছনার জলে।
মনে পড়ে নাকি—
কবিতার ফুলগুলো একসাথে কুড়াবার দিন
কতোটুকু বাকি
জোছনাজলের কাছে দু’জনার ঋণ।
ভোরের ট্রেন
নির্বাক সময় নিখুঁত বুননে
ইটভাটার মতো নিশ্বাস ফেলে রাত্রির পারদে
অনাগত স্বপ্নের বীজতলায় কুয়াশার কারসাজি
ধোঁয়াশার জাল ছিঁড়ে দিগন্ত মাড়িয়ে
. ছুটে চলে ভোরের ট্রেন…
নীড়হারা পাখিরা রাত জেগে থাকে
চোখের কোঠরে এঁকে বসন্ত বিকেল
দো-আঁশ মনে অবিরাম ঝরে শিলাবৃষ্টি
ছুটে চলে ভোরের ট্রেন কুসুমপুরের দিকে….
বেলা শেষে
বিদায়ের দিন
শুধুই কি শুনেছিলে—পাতাদের মড়মড় ধ্বনি
ঝরেপড়া পাতাদের বুকে কত হাহাকার
একবারও কি তুমি শোনোনি?
শুধুই কি দুটি চোখে—রেখেছিলে চোখ
একবারও সরেনি পলক?
যেই তুমি—ডুবেছিলে গহন-গোপনে
সেই তুমি—পারলে না
বুকের কাঁপনটুকু বুঝতে
অজান্তে চলে আসা জলটুকু মুছতে।
অব্যক্ত কথাগুলো আজও চাপাস্বরে
দু’চোখের জল হয়ে প্রতিরাতে ঝরে।
নিঃসঙ্গ নির্জনে বেঞ্চিতে এসে
কুড়াই যে স্মৃতিগুলো আজও বেলা শেষে।
কুড়াতে কুড়াতে আমি—পথ ভুলে যাই
মায়াদ্বীপে যেতে চেয়ে—
বারেবার নিজেকে হারাই!
আরও পড়ুন: পোস্ট অফিস ও অন্যান্য ॥ মীর রবি