বিভ্রম
বহুকাল দেখা হয়নি কিছুই—
অনুজ্জ্বল স্মৃতির ভেতর ডুবে আছে মেঘ,
নিমগ্ন চাঁদের পিঠ আর হলুদ রঙের খেলা
নদীর ওপার থেকে উঠে আসছে গান…
শুয়ে আছি পাখিদের পালকের পাশে।
কার কথা ভাবে আজ অনুবিদ্ধ কাল…
অরণ্য গভীর হলে
রতিমত্ত হরিণীর ক্রন্দন উঠে আসে।
উপগীত
হাত বাড়াতেই সন্ধ্যা এসে ছুঁয়ে দেয় হাতের আঙুল ।
এইসব মুগ্ধ করা অন্ধ বায়ুচলাচল
ক্রমাগত দোদুল্যমান… অদৃশ্য হচ্ছে হাতের ভেতর।
কে তোমাকে স্পর্শ করে ফিরে যাচ্ছে দূরে…
অন্ধকারে কোথাও কি খেলা করে পড়ন্ত বিকেল!
হাত বাড়ালেই পথের আড়ালে ছায়া নামে পথে
সন্তর্পণে ডুবে যায় বাণবিদ্ধ সন্ধ্যার শরীর।
ভুবনচিল
অজানা বছরগুলো থেকে উড়ে আসে অসংখ্য ভুবন চিল,
আর আমি ঘুমগ্রস্ত নদীর ভেতর ডুবে যাই।
কেউ একজন আমাকে টেনে তুলে
দাঁড় করিয়ে দিয়েছে হাতখোলা জানালার পাশে…
আমার ডান স্কন্ধ থেকে বেদনারা ফিরে যাচ্ছে বাম স্কন্ধের দিকে।
একটি সন্দেহের তীর আমাকে আঘাত করতেই
জল-মগ্নতা ফিরিয়ে দিল তাকে।
এইসব আঘাতগুলো পুতুলের মতো নরম আর শ্রেণীচ্যুত,
আমি কাউকে আঘাত করিনি
তবু ভুবনচিলের ডানা থেকে ঠিকরে বেরোচ্ছে আলো।
ছিন্ন কবিতা
প্রতিটি স্পর্শই অনুচ্চারিত…
. নিকটে আকাশ—
একখণ্ড মেঘ ছড়িয়ে দিয়েছে রঙ,
কয়েকটি তিতির খেলা করে
শ্রাবণ রাঙানো রোদে।
টুকরো টুকরো স্মৃতি ভেসে উঠলে
আমরা ছুঁয়ে দেই
ডুবে যাওয়া চাঁদের শরীর।
অনুক্তকাল
ছায়া ভেঙে গড়িয়ে পড়ছে জল,
একটি নোয়ানো বিকেল
স্খলিত স্বপ্নের ভেতর শুয়ে আছে।
সম্মুখে নিবিড় সন্ধ্যা,
ঘুলঘুলিতে সাজানো সংসার।
বাশি হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছি—
শীতকালে কোনদিকে যায় ট্রেন…
গাঢ় কুয়াশার ঠোঁটে
দুধগন্ধ স্মৃতি রেখে
ফিরে যাচ্ছে বয়ঃসন্ধি কাল।