প্রেমের শিকড় খুঁড়ে
নির্বাসন দিয়ে গেছ গভীর দুপুর
মাদকতা মেশানো আবেশে, তৃষাতুর
প্রেমে, আবারও সেইসব দিনগুলো
ভেবে যা কিছু তোমার অর্জন, তীব্রতা
তার পথ সীমানা ছাড়িয়ে গেছে ক্রমাগত
বিগত দিনের সব স্মৃতির মতোই
ঝুঁকি নিতে পারা প্রেমের শিকড় খুঁড়ে
স্নায়ুর নিবিড়ে নিমজ্জিত হয়ে আছি
সারারাত ধরে জেগে অদৃশ্য স্নায়ুর
প্রগাঢ় শ্রুতির বেদনায় হারিয়েছি
আমার গোপন নগ্ন স্বপ্ন, অনুভব
অনেক হাঁটার পর মনে হয় উপকূল
থেকে যদি ফিরিয়েই দেবে তবে কেন
জলের সঙ্গীতে তুমি ভেজালে আমাকে?
অপেক্ষা
কতবার পালিয়েছি অনন্ত সময়ে
বালিয়াড়ি ছেড়ে, তবু বৃষ্টিতে ভিজেছে আড়িয়াল
অপেক্ষা কী মধুর সুদীর্ঘ চোরাবালি
বিম্বিত প্রাচীর ভেঙে তবে কতদূর যায় চোখ
বেছে নেয় কখন কে কাকে
ঊর্মির বানের মতো ভেসে
আসে অতীতের শঙ্খচিল
জীবন মায়ার গুচ্ছ মেঘে
চিত্রকল্পে, কথোপকথনে
আমার চোখের ভেতর পতঙ্গ হয়ে
মাতাল প্রহরে ডোবে তোমার দুচোখ
গূঢ় অভীপ্সায় স্থির লয়ে
আগুনের খুব কাছাকাছি
নির্লিপ্ত ছায়ার মতো নাচে একা গোপন দর্পণে।
ভাষাহীন গল্প
তোমার চোখের চিঠিতে লিখেছ নীল
বৃষ্টি, অবিরাম ঝরে পড়া তীক্ষ্ণ সুঁইয়ের উপেক্ষা, বিষাদ
অপার্থিব আলোর উদ্ভাস ছড়ানো বেদনাভার
শৈলপ্রবাহের সাথে ভেসে আসা অদম্য বরফ কুচি আর
বৃষ্টির রোদন এসে নেমেছে আমার চোখে-মুখে
কেউ তবু দেখেনি ধূসর কান্নাভেজা অভিমান
অনুভূতির নৈঃশব্দ্যে বিস্তার করছে অবহেলা
তখন হয়তো আমি আর নেই কোথাও, শুধুই
আছে ভাষাহীন কোনো গল্প ।
অনুরাগ
মমতার বাথান ভেসেছে স্নানঘরে
শিরার স্পর্শের উদাস নিঃশ্বাসে বেজেছিল
এস্রাজ। ঝরনার তরঙ্গের অনন্ত সঙ্গমে, কত
অনুভূতির বাহাস সাজিয়ে রেখেছি
ঐশ্বর্যের অনলের মাঝে,
মগ্নতা দূরত্ব ভুলে গেলে
টুপটাপ কিছুটা ঝরে পড়ে অনুরাগ
গিরিখাতে যে নোঙর ভেসে যায় তাকে
পার্থিব স্পর্শের মোহজাল পরখ করেছে কবে
অচেনা পথের খোঁজে সে একাই যাবে
মৌনতাবিলাসী বৃষ্টি শরীরে মেখেছি
যে যাবার যাক আমার ভাসান তো অতলে…
শিউলির ল্যান্ডস্কেপ
দূর পাহাড়ের কোনো নিঃসীম দিগন্তে
যেখানে নিঃশব্দে ঝরে পড়ে শিউলির ল্যান্ডস্কেপ
আমাদের দেখা হয়েছিল সেখানেই
আমার সঙ্গীতে মিশে আছ
শুধু তোমাকেই খুঁজি আমি
নীল বেদনার ঢেউ অবিন্যস্ততায়
আকাশগঙ্গার ছায়া পড়ে শামুকের
খোলের ভেতর। লুকিয়ে রয়েছ হেমে
প্রেমের অদৃশ্য তোরঙ্গের ভাঁজে ভাঁজে
স্ফটিকের মতো জ্বলজ্বল করছে দেখো
আমাদের বিহ্বলতা আর স্মৃতিগুলো
এক মুহূর্তের জন্যেও পারিনি ভুলতে তোমাকে
কখনো ভেবেছ কী করে ভুলবে আমাকে?