ঢেউগুলোকে ডুবে যেতে বলি
বলি, তোমরা হারিয়ে যাও। রেখে যেও না কোনো স্মৃতি
রেখে যেও না, দাগ
. কিংবা অনুতাপের ভগ্নাংশ। পাথরকুচির মতো কঠিন
কোনো দুঃখ। কিছুই রেখে যেও না;
এমন কিছু, যেখানে মানুষ শুধুই বেদনায় ডুবে যাবে—
মানুষ শুধুই খুঁজবে জীবনের হাহাকার।
যে আকাশ মানুষের জন্য ছায়া নির্মাণ করে
যে শস্য মানুষকে পড়ায় সবুজের অভিধান
যে বায়ু অক্সিজেনের বাড়তি বরাদ্দ করে
এবং মানুষকে বেঁচে থাকতে শেখায়
আমি তার জন্যেই আরাধনা করি। বলি—
অবশিষ্ট দিনগুলো সহায় হোক কাব্যময় পৃথিবীর
অনাগত সময়ের পাশে বেড়ে উঠুক বলিষ্ট শিশু।
গতকাল দুপুরের দেয়ালে
ধরে দাঁড়িয়ে ছিলাম দীর্ঘক্ষণ। এই যে দুপুরের
দেয়ালটি তুমি দেখছ, এখানেই লিখে রেখেছিলাম
তোমার নাম। তোমার লেখা কবিতার কয়েক পঙ্ক্তি
মাফলার জড়ানো শীতকে কণ্ঠে ধারণ করে
গেয়ে উঠেছিলাম তোমার লেখা একটি গান।
মানুষেরা সঙ্গীতপ্রিয় হয়ে উঠলে পাখিরা তাদের
ডানা বিছিয়ে মানুষের বশ্য হয়ে ওঠে। সুরের দ্যোতনায়
মিলায় নিজের গলা। আর পাদদেশে বয়ে যাওয়া
নদীকে শাসন করে, নিতে চায় সাথে।
আমি একটি সন্ধ্যাকে সাথী করতে চেয়েছিলাম।
একটি বিকেলের সূর্যকে বলেছিলাম,
তুমি তো ফিরবে ঠিকই, নতুন আলো নিয়ে
ঠিক বারোঘণ্টা পর। আরেকটি দুপুর পার হবে বলে!
ব্ল্যাকবোর্ডের রেখাজীবন
কালো পিচে ঢাকা সড়কটিকে আমার ব্ল্যাকবোর্ড বলেই
মনে হয়। কত মানুষ তার পায়ে পায়ে লিখে যায়
নিজেদের কাহিনি। কত যানবাহন, নিজেদের নিশ্বাস
ছাড়তে ছাড়তে কখনো ছড়ায় কার্বনের স্তর—
কত অনাথ শিশু চোখ মুছতে মুছতে খুঁজে, মা’কে!
এই সড়ক দিয়ে কেউ যায়। কেউ আসে নতুন করে
সাজতে কিংবা সাজাতে বাসনের উষ্ণতায় ভরা সংসার,
দিনের প্রতিচ্ছায়ায় নিজের মুখ।
ব্ল্যাকবোর্ডের রেখাগুলোকে জীবনের সমান্তরাল উপাখ্যান
বলেই মনে হয় আমার।কাটাকুটির অঙ্কে অথবা
অক্ষরে;
. প্রাণগুলোই থাকে প্রাণের স্মৃতি আঁকড়ে ধরে।