বোবা ভিখিরির গান
পা-হারা লোকটা পাহারা দেয় একজোড়া জুতো
রোজ দেখি এই শিল্পদৃশ্য, অফিস পাড়ায়
সমুখে থালার শূন্য, টাকাকড়ি নেই
হাত-পাও ছেড়ে দিয়ে পড়ে আছে কিছু হাহাকার
পাশের ভিখিরির কিছু হা হা-ও ভেসে আসে তাহার স্বরবোধে
কৌতূহলের কাতুকুতুতে একদিন তার কাছে যাই শুধাই কাহিনী, কিন্তু;
ঠোঁটস্য কারার দ্বার ভাঙতে পারে না বোবার ভাষা
আলজিব অন্ধকারে পড়ে থাকে সব স্বর
ইশারাবনে হারাই, কংফুমান ভাষার
কিছুই বুঝিনি, জানাও হয় না কখনো—
লোকটা কি ভিক্ষা চায়?
টাকা? না কি হারিয়ে যাওয়া পা?
ম্লান স্মৃতির পাশে
অধিক ক্ষরণের অনতিদূরে দাঁড়িয়ে থাকে
জোড়া-অশ্রুবিন্দু
এ-কে তুমি কী নামে ডাকবে?
শোকাশ্রু না কি সুখাশ্রু?
অস্ত যাওয়া তারাদের নামে কোনো রাস্তা থাকে না
সৌরশূন্যের-কক্ষপথে,
তবে তুমি কিসের ভিত্তিতে আঁকো নাম
পাথর ফলকে; হৃদয়-প্রবেশিকায়?
নতুন ক্ষত পুরনো জখমকে স্মরণে আনে চিরদিন
তথাপি বারংবার বিরহে
আমাকেই পড়বে মনে ভাবি না এমন;
হোমো পাখির চিৎকারে
আঁধার আড়াল করে নেমে এলে আলো
প্রত্যেক পুরনো ভোরই কি মনে পড়ে তোমার?
কিংবা কারও?
ম্লান কোনো স্মৃতির পাশেই দাঁড়িয়ে থাকে মানুষ
দেয়ালে যেমন লেগে থাকে পুরাতন পোস্টারের
স্মৃতি।
টাইম মেশিন
টাইম মেশিনে চড়ে ফিরে যাওয়া যেতো যদি, বাটানা ও মার্বেল খেলার দিনে। আন্টিস খেলায় হেরে গিয়ে আবার রাখতাম মুষ্টিবদ্ধহাত বাঘার সমুখে। শৈশব যেন নারকেল পাতা, বাঁশি দিয়ে তাকে বাজাতাম তুমুল আর খোলা চশমায় দেখতাম পৃথুলা পৃথিবীর রঙিন। আহা! যাওয়া যদি যেত, ফায়ার বাক্সের টেলিফোন-টেলিফোন খেলায় দূরত্বের পারাবত উড়িয়ে দিতাম দূরে। দুপুরের দুরন্তপনায় আবার ভুলে যেতাম কোন দ্রাঘিমায় ভাতের ভূগোল।
বারোমাস ভাতের হাতেই খুন হচ্ছে কিনা পৃথিবীর মানুষ।