সময়ের রঙিন বোঁটায়
কিছুটা দূরত্ব রেখে—উঠেছিল, আলোর সেতার
অপরাজিতা গুঞ্জন ভুলে বিস্মরণ কূলে;
বিমুগ্ধ প্রত্যুষে বাজে একটানা দিনের হাঙর
হাড়ের বেসাতি বুকে—ফুটেছিল, বিমুগ্ধ কথারা।
পরাস্ত বিকেল এক—স্তব্ধতায়, ডানা ঝাপটালে
মরে যায় ক্রুদ্ধ হামাগুড়ি কার হাতে তবে!
কালের কলস ফেলে বহু বহু দিনের ঝালর
হেমন্ত বাতাসে তবু—জীবনের, গল্প বোনে?
ধুলোর আঁধারে, আজও কিছু স্নিগ্ধ মনস্তাপ
সময়ের রঙিন বোঁটায়—অবিরল ঝরে!
পরিক্রমণ
ব্যর্থতাগুলোর সঙ্গে দেখা হয়, বলি তাকে: ঋজু পায়ে হাঁটতে শিখেছ বেশ! অনুভব করি—এইপথে সে আসে না আর, যে পথ মাটিলগ্ন; যে পথ চলে যায় উত্তরায়নে—অস্পষ্ট আমার ধারণা, কণ্ঠে চিরঞ্জীব হননের গান, বসে থাকি মিথের নৌকায়; গন্তব্যের ঢালু বিমোহিত হয়ে উড়ে আসে রক্তের সৌগন্ধ; তবুও বিশ্বস্ত জন্মদাগে এতটুকু আঁচড় লাগে না!
মনে করো—উড়ে যায় দূর ছায়াটোন; অবিকল পিছুটান খেলার ভেতর জাগরণ ওড়ে, ওড়ে তাপময় বেসাতি আলো; যেখানে যুদ্ধ নেই, ক্লান্তি নেই, নেই মনোবিকারের হোলি; শুধু একটুকরো ঐতিহ্য- গ্রহণ ও অগ্রহণের প্রথাজড়তায় নির্ঘুম!
ব্যর্থতাগুলোর সঙ্গে দেখা হয়, বলি তাকে: বেঁচে আছি, ভাষা ও ভাষ্যে নিজেকে অতিক্রম করে তীক্ষ্মতর স্পর্ধা এক—
বেগানা সময়ের শিরদাঁড়া
প্রাচীন স্লোগানের ভেতর ম্লান হয়ে যাচ্ছে শরতের পর শরৎ; রঙহীন হয়ে পড়ছে চারিপাশ; সময়ও থমথমে; দৃশ্যত, আমিও রঙহীন কোনও ঋতুর জাতক; স্রোত গড়ানো নদী, বাঁশফুল আর ভাঙন কবলিত জনপদ সাক্ষী রেখে বলতে পারি: যখন, আশ্বিনের মাঝরাত অস্তিত্বে হানা দেয়—যখন, দূর থেকে ভেসে আসে অশ্বখুরধ্বনি; ভালোবাসার মৃদু-উল্লাসে নিঃশব্দ করোটিতে জমতে থাকে বেদনার জল—নিরীশ্বর জীবনের বড়সড় একটি লোভে, তখন কাতর হয়ে ওঠে সকলে; মনে করো, নিষ্পন্ন এমন বাস্তবে দাঁড়িয়ে, বহুকাল, আমিও পান করেছি—অহঙ্কারী রাতের হিম…
চলেছি ভেসে, বেগানা সময়ের শিরদাঁড়া বেয়ে—ভাটিঅভিমুখী; ক্লান্ত এক ডাহুক যেন, চিরকালীন—