বেওয়ারিশ
খুব ভোরে অথবা রাতে
দূরের তন্দ্রায় কোনো রোদ্দুর থাকে না
থাকে নদীর কংকাল
তারা ভেজা পায়ে হাঁটে।
দিনের আলোতেও তার ছায়া পড়ে
মিশে থাকে চোখের কোণের পিচুটির ঘামে
যা থেকে ছড়ানো ভয় আরও ঘনিষ্ঠ হলে
জৈষ্ঠ্যের বিকেল মৃত গন্ধে ভরে যায়
পিঁপড়ের সারির পাশে ধুলো জমা শোক
মিশে যায় কুয়াশা বৃষ্টিতে।
খুব ভোরে অথবা রাতে
কোনো শব্দ থাকে না
অভুক্ত অন্দরজুড়ে শুধু নদী পড়ে থাকে
যেন তারা একেকটি বেওয়ারিশ লাশ।
জোড়া হাঁস আর কিং কোবরার গল্প
পানিতে ভাসছে জোড়া হাঁস
পাশে পদ্মকলি একাকী দুলছে
শ্যাওলায় জমা হরিৎ সন্ত্রাস কলিটির কাঁধ ছুঁয়ে
নেমে গেল গভীর নীলাভ জলে।
অনেক বছর পরে
ছায়ার ভেলায় চড়ে শালুক খোঁজার দিন শেষ হলে
সেই নীলাভ সন্ত্রাস উঠোন পেরিয়ে ঘরের পিঁড়িতে
কিং কোবরার মতো পেঁচানো শীসের ডগায় হাই তোলে।
জোড়া হাঁস ঘরে ফেরে
মধ্যরাতের কিনার ছেড়ে চাঁদের গোপন শ্বাস ভোরের বাতাসে মিশে গেলে
হাঁস দুটো খাবি খায় অঘোষিত সুনামির তোড়ে।
একদিন হাঁস, সোনালি সন্ত্রাস আর কিং কোবরার গল্প
আরব্য রজনী ছেড়ে ঠাঁই নেয় অচেনা গলির মোড়ে
যেখানে দূরের তালগাছ শুধু স্বপ্নময় মায়া, আক্ষেপের তোতলানো সুর
যার মিহি গুঞ্জরণ থামেনা কখনো
শুধু সব গল্প আয়েশে লোপাট হয়ে যায়।
টংকার
নেশাতুর জাফরিতে কুণ্ডলী পাকানো এই ভোর
আমি আগেও দেখেছি
তুমি ভাবো, নতুন?
গুল্মভেজা শ্বাস গড়াতে গড়াতে উঁকি দিয়ে দেখে
তারপিনে সেঁটে থাকা শ্যাওলা জড়ানো দিন
কীভাবে ঋতুর পাড় ভেঙে মিশে যায় পাহাড়ের গায়ে
পাখিরা বিষন্ন তাপে পুড়ে পুড়ে সূর্যগামী হলে
সুরেরা হারিয়ে যায় ভস্মের জীবন্ত কোলাহলে।
মেঘ ছুঁই ছুঁই ইচ্ছের আকাশে মেঠো ঘোমটায় ওড়ে
দিকচিহ্নহীন জটায়ু জীবন;
আর তুমি ভাবো,
মোহনার কাছে বসে এখনো বিড়বিড় করে
বৈঠকি বিকেল ঘেরা স্মৃতিশূন্য এক জলের টংকার!