বেইলি রোডের থিয়েটারি সংলাপ
জনারণ্যে দেখেছি, দেখেছি মৃত্তিকায়।
প্রতিটি শব্দ, উচ্চারণ গেঁথে আছে দেয়ালের গায়
স্লোগানের ছদ্মবেশে, পোস্টার আকারে
তোমার মহিমা দেখি—পান থেকে খসে গেছে চুন
শহরজুড়ে মাছের সাঁতার, আঁশটে ঘ্রাণ—আহ, রমণ!
নতুন রাঙানো ফুটপাথ, ধসেপড়া ইটের দেয়াল
হঠাৎ ফাঁকা হয়ে যায় সব অলি-গলি, কুড়িল বিশ্বরোড
ফ্লাইওভার ঘিরে বনসাই, আর ওদের চাইনিজ ভাষা
এইসব দেখে মনে হয় কসমোসিটির বুকে ব্যথা
বেইলি রোডের দিক থেকে উড়ে যায় থিয়েটারি সংলাপ
ঝুলছে—উড়ছে—ছাই হয়ে মিশে যাচ্ছে
রগরগে দোতলায়।
… দেখছি, দেখছি, কেবল দেখছি।
আমার বাড়ি
আমি তার ডাকনাম ভুলে গিয়েছি। অলস বৃষ্টিতে
ঝোপঝাড়ে অতিবেগ আসে
ভুলে গিয়েছি তুচ্ছ সাপ ও দড়ির খেলা
জলের প্রস্রবণে তোমাকে বলছি, শোনো,
দৃষ্টি ও দৃশ্যের আঁতাত থেকে বাইরে এসে বলে দাও সেই নাম,
যার কুহক বাসনায় বধির হয়ে আছি বৃষ্টি আর আলস্যের দেশে
কোথাও শব্দ নেই, পানকৌড়ির অন্তহীন ডুব একমাত্র ভাষা
তারপাশে খসখসে কাশ বন
ছদ্মপ্রেমিকের ঠোঁটে বুক রাখেন অমিত অপ্সরা
ত্রিভুবন শুধু রাস্তাময়, তবু পথ খুঁজে পায় না কেউ-কেউ
কাশবনে মৃদু চিৎকার, গলিত লাভার মতো উষ্ণজল
এই দৃশ্যের পাশে আমার বাড়ি—তারপর ধুধু মাঠ; শস্যহীন
স্বপ্নে
ভগবানের বাড়ি যাই। তার প্রেমময় বৌ আশ্রয় বাড়িয়ে দেন।
সেই আশ্রয়ে নিরালায় ঘুমি পড়ি—
স্বপ্নে রাধারানি, মানে রাধিকা শ্রীমতি স্মিতহাস্যে যমুনায় যান
ঘুমের তোড়ে সেই দৃশ্য গুলিয়ে যায়। ঝাপসা, ঝাপসা…
রাধিকে, তোমার হাঁড়ির জলে লুট হয়ে যাচ্ছে সব অস্পষ্টতা।