বেঁচে থাকা
বিশ্বাস করুন
আমি বেঁচে আছি।
ওরা আমাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল
যখন আমি নিশ্চিন্তে শুয়েছিলাম
মাতৃগর্ভে—
কিন্তু আমি বেঁচে গিয়েছি।
ওরা অ্যাসিড ছুড়েছিল
আমার মুখে
আমার স্কুলে যাবার পথে—
কিন্তু আমি বেঁচে গিয়েছি।
ওরা কেরোসিন ঢেলেছিল
আমার শরীরে
যৌতুক না পেয়ে—
কিন্তু আমি বেঁচে গিয়েছি।
আর
বিশ্বাস করুন
আমি বেঁচে আছি।
কারণ
কামানের চাই গোলা
আগুনের চাই পতঙ্গ
আর
পুরুষতন্ত্রের চাই নারী।
বন্দি
জেলবন্দি জীবন
মাঝে মাঝে
ভীষণ সহজ;
এমনকি ছোটবেলা থেকেই
অভ্যস্ত হওয়া যায়।
যখন বাবা বলেন:
‘শুনছ ছেলের মা?
ওকে রান্না শেখাও
ওকে সেলাই শেখাও
ওকে চুপ করতে শেখাও’—
এক শিশুবন্দির জন্ম হয়।
যখন পড়শী জানতে চায়:
‘ইস্কুলে পাঠিয়ে কী হবে?
এমন পোশাক পরে কেন?
ছেলেটা কে?
বিয়ে কবে দেবে?’—
এক কিশোরীবন্দি বেড়ে ওঠে।
যখন স্বামী বিচার করেন:
‘রান্নাটা অখাদ্য!
তুমি বড় সেকেলে!
ভদ্রতা জান না!
সারাদিন শুয়ে বসে কাটিয়ে দিলে’—
এক যুবতীবন্দি বৃদ্ধা হয়।
যখন ছেলে রাগে ফেটে পড়ে:
‘তুমি দিনদিন অসহ্য হয়ে যাচ্ছ!
আমায় একটু একা ছাড়ো তো!
তোমার তো লোক-দেখান ভালোবাসা।
তোমার হোমে যাওয়াই উচিত’—
এক বৃদ্ধাবন্দি কুঁকড়ে শূন্য হয়ে যায়।
যখন নিমন্ত্রিতরা অভিমত দেন:
‘খুব সুখে জীবন কাটিয়ে গেলো!
কতবড় বাপের মেয়ে!
স্বামী কত বড়লোক!
ছেলে কত খরচ করেছে শ্রাদ্ধে!’
এক আজীবন-বন্দি তার ফ্রেম-বাঁধানো স্বাধীনতা খুঁজে পায়।