বিভক্ত মন্দিরের ঈশ্বর
তোমার ঈশ্বর তবে তোলা থাক বিভক্ত মন্দিরে
দেহরতি আত্মার পরাগে মেখে সাধুকে পেয়েছ
সন্ত ভূ-গোলকে এত তীব্র বাসনা মেখেছ
বুঝি চাই বিপুল সহাস্য ধরে দেবীর গোলকে
অতিধূর্ত চড়ে আছে প্রহ্লাদের পরম প্রাসাদে।
তুমি যদি তুমি হও, আমি তবে তুমি
তোমার আমার নামে কেঁপে ওঠে ভূমি।
আমার ঈশ্বর তবে পূজ্য হোক বিভক্ত গির্জায়
আত্মার পুষ্পদানে পরমার্থের অলীক মেখেছি
ভ্রান্ত কক্ষপথে এত অগুণিত নক্ষত্র ছুটেছে
বুঝি আলো বিপুল পেখম মেলে দেবীর বাগানে
প্রভাতে প্রকাশিত বৃক্ষমণি শত গানে গানে।
ভুবনে সকল জাতি গলাগলি ভাই
ঈশ্বরে ঈশ্বরে কোনো ভেদাভেদ নাই।
পুত্রদের বিষাদমাখা মুখ
পুত্রদের বিষাদমাখা মুখ বুকে করে অন্ধ পৃথিবীতে এসেছি
অজস্র সন্তানচিহ্ন পথে পড়ে আছে
মনে হলো ওরা এলো পুঞ্জিভূত, ঝাঁকে ঝাঁকে আলোকপ্রদায়ী
আর্যসূর্য ঘিরে নৃত্যানৃত্য এলো দশদিকে
আমারি শুক্রাণুকীট বিঁধে গেল বহুভিন্ন গর্ভবিবরে
ফোটাল বিচিত্র ফুল, প্রাতে দেখি প্রান্তর আছে ভরে।
প্রান্তরের হর্ষলেপা বুকে বিজয়ীর বধির উল্লাস
পরাজিতের সহস্র মৃত্যুচিহ্ন মাঠে পড়ে আছে
মনে হলো ওরা যূথবদ্ধ, দলে দলে তিমিরবিদায়ী
অনার্য নক্ষত্র ঘিরে নৃত্যানৃত্য গেলো দশদিকে
তাদেরি তীরবর্শা বিঁধে গেল বহুভিন্ন বক্ষবিবরে
ঝরালো বিপুল প্রাণ পৃথিবীর বধির প্রান্তরে।
স্বাস্থ্যনিবাসে এসে
স্বাস্থ্যনিবাসে এসে মুখ গুঁজে পড়ে থাকি কোমলতা, বিপুলতা পাই
এখানে পাহাড় খুব সুস্থ কোমল মলিনতা চারিপাশে নাই
শস্যশোভার কাছে পড়ে থেকে দেখি নীলোৎপল আকাশ টাঙ্গানো
ঈশ্বরীর মুখের নিকটে ভাসে চাঁদপনা মুখের গোলক
এখানে বসন্ত খুব নিকটবর্তী, অনুপুঙ্খ নক্ষত্রলোক
যে ঘ্রাণ আবিষ্ট রাখে তাকে ফেলে উঠে পড়া দায়
যে প্রাণ আবিষ্ট রাখে তাকে ছেড়ে চলে যাওয়া দায়…
সকল গৌরব শেষে সন্তানের মুখ ধরে ফোটে
সকল দৌড়ের মাপ জায়া মেলে রেখেছে চৌকাঠে
অনির্বচনীয় নির্বাচন শেষে এসে গেছি ঘোরের প্রদেশে
ঘুম থেকে জেগে উঠে অন্য এক ঘুমের জগতে;
মাঝে
পান্থনিবাসে এসে চোখ মুদে পড়ে থাকি দেবারতি, নীরবতা পাই
সমতল দূরে দূরে ঘোরে, পাহড়ের কাছে দাঁড়াবার সাহস তো নাই
নক্ষত্রশোভার কাছে উল্টে থেকে দেখি এক মখমল দিগন্ত বিছানো
মৃন্ময়ীর দেহের নিকটে ফোটে চিন্ময়ীর দেহের ভূগোল
সেখানে কবিতা খুব জানুবর্তী, অনুপুঙ্খ দেবীর বর্ণন
যে প্রকৃতি জড়িয়ে রাখে তাকে ফেলে চলে যাওয়া দায়
যে প্রেম জড়িয়ে রাখে তাকে ছেড়ে পদ্য লেখা দায়…