পিতৃহীন বাংলাদেশ
একটি মৃত্যুর সাথে জড়িয়ে থাকে বাংলাদেশ
শেষ গোসলের জল কল-কল করে কাঁদেছিল
কেঁদে কেঁদে গড়িয়ে পড়েছিল বাঘিয়ার বুকে।
সেদিন শ্রাবণ ছিল, বৃষ্টি ছিল। থেমেছিল
রক্তজল গড়িয়ে গড়িয়ে মিশেছিল বুড়িগঙ্গায়।
সেদিন আকাশে পাখি ওড়েনি, পতাকাও না!
বাংলাদেশের পা
অনেক এলোমেলো ভুল পথ পাড়ি দিয়ে তুমি ক্লান্ত, তোমার পা অসুস্থ
কষ্টে কদম ফেলতে পারছ না।
ব্যথাক্রান্ত ভারী, ফোস্কা পড়া, ফাঁটা গোড়ালি
এবং ময়লা মাখানো খালি পা,
এভাবে নুলো হয়ে যাবে, পঙ্গু হয়ে যাবে পা!
তোমার প্রিয় পা দুটো দাও
সামুদ্রিক ফেনানো সাবান
বঙ্গপোসাগরের ঢেউ দিয়ে ধুয়ে গামছায় মুছে
যত্নে করে মালিশ করে দেই মাটির মলম।
গুরুত্বপূর্ণ যুগলপদে জড়িয়ে ধরা আদর মাখি,
তোমাকে হাঁটতে হবে বহু দূর, যেতে হবে অনেক পথ;
ইতিহাসের শেষ সীমান্তে।
বাংলাদেশ, এবার একটু ঘুমাও
ক্লান্ত বাংলাদেশ, তুমি একটু ঘুমাও!
মূল্যহীন মৃত্যু; তোমার বুকে কবর ঘুমাচ্ছে;
তুমিও ঘুমাও। একটু ঘুমাও…
চুলে বিলি কেটে দিচ্ছে বাতাসের সুবাস
মাথা বুলিয়ে দিচ্ছে জোছনার স্নিগ্ধতা!
বাংলাদেশ, এবার একটু ঘুমাও।
তোমার কপালে স্পর্শের মৃদু স্রোত,
চোখে চুম্বন, লজ্জাবতী পাতার মতো
বাংলাদেশ, এবার একটু ঘুমাও।
তোমার চিবুকে আঙুলের স্নেহাদর,
নিদ্রার ভেতর ছড়ানো স্বপ্নের ঘ্রাণ,
বাংলাদেশ, এবার একটু ঘুমাও!
তোমার নাভিতে জড়ানো কুসুম-কস্তুরি
ঘুমপাড়ানি তন্দ্রায় মেশানো ঘুমমন্ত্র!
বাংলাদেশ, বাংলাদেশ, আমার বাংলাদেশ…
তোমার জন্য জাপানে বপন করেছি ভোর!