বৃষ্টির মন্ত্রণা
বৃষ্টির মন্ত্রণা হচ্ছে এই যে তা শয়তানকে করে তোলে কবি আর কবিকে পরিপাটি দেবদূত। বৃষ্টিভেজা কিছু হন্তারক শব্দ আজ এসেছিল। শ্রাবণকে কখনো শাওন আর বৃষ্টিকে বরষা বলে ভাবতেই দেখো চকিতেই হাতের মুঠোয় ধরা দিবে কিছু তরতাজা ভাঁটফুল, কিশোরী কদম বুক, রিকশায় উড়ে আসা প্রজাপতি।
আর অলীক পিয়ন এসে তোমার বুকপকেটে ভরে দেবে কামিনীর চিঠি। ফেলে দেওয়া লগবুক খুলে হাহাকার ছাড়া আজ কিছুই খুঁজে পাবে না। বৃষ্টির পেরেকগুলো শুধু গাঁথা পাবে কীটদষ্ট শেষ পরিচ্ছেদে।
বাইরে জলের শব্দ, অপেরার ব্যান্ডবক্সে বেজে যাচ্ছে একটানা বৃষ্টির চামেলি। শাদা পাতা জুড়ে রূপসী পয়ারে মেতে আছে এক বৃষ্টিদগ্ধ কবি। সিনোরিটা; তোমার দরজাটা আজ খোলো, এবার বৃষ্টির শব্দ হাতে হাত ধরে শোনা যাক।
বরষা বিভ্রম
০১.
এ বড় বিভ্রম মায়া বৃষ্টির আদলে
মিলিয়ে তুমি কি যাবে বর্ষা চলে গেলে?
০২.
বৃষ্টির বিভ্রমে জানি মেলে লাভক্ষতি
ছাপচিত্রে উড়ে বসে বর্ষা প্রজাপতি!
০৩.
আকণ্ঠ কুহক পান করেছি দু’জনে
কণ্ঠস্বর পান করা যায় কি শ্রাবণে?
০৪.
বরষা আসবে বলে জঁপেছি প্রহর
কবিতার অন্য নাম ঘূর্ণি আর ঘোর!
০৫.
রেস্তোরাঁয় ঠাণ্ডা হচ্ছে জমে যাচ্ছে ছিপি
হাওয়ায় উড়ে যাচ্ছে বর্ষা পাণ্ডুলিপি।
বৃষ্টি পরিপূরক
বৃষ্টির শব্দের সাথে আরও কিছু বেজে ওঠে; অপেরার বিউগল, প্রেসের চাকার ধ্বনি, চাপা কষ্ট, গহিন গোঙানি! জলের সেতার হাতে মেতে ওঠে যশরাজ, জারুলের ঘন বন, শূন্য ডাকবাক্স খোলে অচেনা অজানা এক অলীক পিয়ন! বৃষ্টির মাতাল শব্দে আরও কিছু জেগে ওঠে; রেলিঙে জমাট শাড়ি, হাওড়ের রূপশালি মেঘ, না-বলা কথা পরিপূরক, বৃষ্টির কুহক শব্দে রাধিকার বুকের ভেতর জেগে ওঠে কুমারী কোরক!