ঢেউহীন সমুদ্রের কাছে
স্থির হয়ে আছে শৈশব। স্থির হয়ে আছে বিকেল।
সূর্য ডুবতে চেয়েও পারছে না স্পর্শ করতে
আনুগত্যের সিঁড়ি। কিংবা ভাঙন সম্পন্ন করে যে ঢেউ
ফিরতে চাইছে পশ্চিমে—তার হাতেও কেউ পরিয়ে দিচ্ছে
হাতকড়া। বালি ও বর্ষণের মাঝখানে লুটিয়ে পড়ছে
প্রেমের উজ্জ্বল চুক্তিপত্র।
সমুদ্র সবসময়ই ভঙ্গ করে ঢেউয়ের সাথে তার
অলিখিত চুক্তি। যারা স্পিডবোট সাজিয়ে মধ্যসমুদ্র
সফরে বেরোয়, তারা সেই বেদনা দেখে আহত হয়।
ভ্রমণকামী পাখিরা সমুদ্রের নীল ছুঁয়ে উড়তে উড়তে
পরখ করে ঐক্যের মূল্য এবং দামের মৌলিক পার্থক্য।
গর্জনের গরিমা
দূরে যেতে ভয় করে। দূরে গেলেই চারদিকে জল,
চারদিকে পর্বত আর অনেক অবিশ্বাসের কালোচাঁদ
ঘিরে রাখে বেলা। বৃষ্টি নামে না—শুধু বিজলী চমকায়
গর্জনের গরিমা এসে দখল করে নেয় ভোর আর বিরহ।
যে বোধনের স্মৃতি নিয়ে বাঁচে মানুষ, তার কোনো
লিখিত লাবণ্য থাকে না। থাকে না আগামীর জন্য
কোনো নিশ্চয়তার সুখসংকেত।
তবে কি প্রেম চেনে না উজান,
কেবলই ভাটিপথে যায়—
জমা রেখে মেঘের মতো নিমগ্ন প্রচেত।
পিপাসার পাতাল থেকে
জল উঠছে। ছুটছে আলো, ছুটছে রাগরশ্মির রেখা
পিপাসার পাতাল থেকে উঠছে যে ঢেউ,
তা এখন আর নির্ণয় করতে পারছে না
ভালোবাসার অমোঘ আশ্রম। তবু মানুষ ভালোবাসছে—
তবু পাখিদের আমিষ উৎসবে কেউ ঢেলে দিচ্ছে নীলমেঘ।
মন, মেঘের চেয়েও উড়তে পারে দ্রুত—
শরৎ-রাত শেষ হলে, কাশফুলের ভেলায়
আকাশ কেবলই লিখে, প্রেমই জীবনের পরম শব্দবীজ।