গুপ্ত ঝরনার দিকে অভিযাত্রা
বেরিয়ে পড়েছি সাপ-নাচা জোছনার ভেতর, যারা উঠে যেতে চায় সাঁচীর স্তূপ বেয়ে, তারা সব ফণা তুলে আছে; বেশ, তারা আলগোছে গেঁথে দিক বিষদাঁত, এর চেয়ে চলো লরিয়া-নন্দনগড়ে, ওখানে আকাশের দিকে মুখ করে সারি সারি অশোকস্তম্ভ খাড়া হয়ে আছে, চলো, তার সিংহমুখ-চূড়ায় চুমু খেয়ে আসি। তারপর চলো, গুহার ভেতরে সেঁধিয়ে দিয়ে আসি উত্থিত ফণাগুলো, কে না জানে আমরা তুখোড় বেদেনি, একদিন যক্ষীর দেহ নিয়ে শুয়ে ছিলাম দিদারগঞ্জে, পাটনার উপভূমিজুড়ে, প্রত্ন-প্রতিমা ভেবে আজ যারা উপচার নিয়ে আমাদের অপেক্ষায় আছে, যাই, তাদের মুঠোয় তুলে দিয়ে আসি কাঙ্ক্ষিত আপেল…
ওরা দেখুক, কালো মেঘের কিনার ঘেঁষে দুটো তারা, তার নিচে ফুটে আছে গোলাপ, ওরা নিপুণ অভিযাত্রিক, আপেল বাগান রেখে পৌঁছে যাবে মাথিনের কূপ, এরপর মাড়িয়ে যাক আরও কিছু গুল্ম-বিরুৎ, এরপরই ঠিক ঠিক পেয়ে যাবে গুপ্ত ঝরনার খোঁজ—
এইবার, এই উষ্ণ জলে, ওরা সেরে নিক স্নান
প্রকৃত ঈশ্বর
বাড়ছে চন্দ্রকাতরতা—আমরা চলেছি মঘা-অশ্লেষার রাতে—গন্তব্য জানি না বলে খুঁজে ফিরছি সপ্তর্ষিমণ্ডল—গুরু নানক, এই তো সেই পথ, যে পথে ফিরে এসেছিল ভাওয়াল সন্ন্যাসী—
পেরিয়ে যাচ্ছি ঘন কুঁচবন—কেউ কেউ বলে, যেতে হবে বিশাখাপত্তম। করোটিতে প্রশ্ন-পিপাসা—অথচ বিস্ময় ছাড়া আর কোনো যতিচিহ্ন নেই। কেউ কেউ বুঁদ হয়ে আছে পাণিনি ও চার্বাকে, কেউ সাংখ্য বা যোগে—অথচ আমরা যেতে চাই, যেখানে শূন্যই প্রকৃত ঈশ্বর।
সঙ্গে নিয়েছি উইকিপিডিয়া আর সুমহান ঘড়ি—সূর্য ও চন্দ্রের যিনি নির্ভুল অনুবাদক। মহাশূন্যে কেউ নেই—শুধু ঊষার ইশারা—
ভোর হলো—আমাদের চারপাশে ক্রুশকাঠ, শিবলিঙ্গ; সারি সারি ভেজাবুদ্ধের দল…
অলৌকিক অশ্বারোহী
সবাই নক্ষত্রের মালিকানার কথা ভাবে, আমি তার আভাটুকু চাই—কেউ কেউ বলে, এ অসুখ কবিতাবাহিত—মেনে নিয়ে চলে যাই, যেদিকে মুখ করে ফুটে আছে রক্তজবাগুলো—পথের সন্ধান দেয় শীতনিদ্রা থেকে উঠে আসা পিঁপড়ের সারি—তাদের নির্দেশনা শিরোধার্য মানি—
যদিও নাবিক নই, ধ্রুবতারার আলোক দেখে চলি—কম্পাসে বিশ্বাস নেই—সে শুধু মেরুপ্রীতি জানে—
আমি যে ঘোড়ার সহিস, তাকে দিই স্বপ্নমোড়া ঘাস—তামাম গ্যালাক্সিতে তার অগম্য কোথাও নেই—ফলত, মুহূর্তে চলে যেতে পারি নেপচুন ফকল্যান্ড জাঞ্জিবার; ভানুয়াতু অথবা শাকিরার গোপন বেডরুমে—আমি তাকে কল্পনা-অশ্ব বলি—
পালাবার সময় হলো আজ—আলো ফেলো ধ্রুবতারা, পুনরায় উল্কাপতনের আগে পবিত্র পাহাড়ের দিকে যাই—