হালাল ফুড
পল্ট্রি ফার্মের গল্প—ফিটের সঙ্গে মিক্সড ভিটামিন সি। জল ও হাইড্রোলিক এসিড—বিজারিত পুষ্টি আমিশের অভাবপূরণে অঙ্গিকারবদ্ধ। সমান্তরাল বাঁশ মুরগির খাঁচায় নিক্ষেপিত জিয়াতারের গিঁট। ঘোরপ্যাঁচে ইলেকট্রিক শক—ফেঁপে তুলছে অস্থিমজ্জা।
মাংসের দোকান—কর্তিত মাথা, পাঁজর ও রান। ঝালফ্রাইয়ে গন্ধ মাখছে স্টার কাবাব। জিহ্বার ডগায় কুকুরের লালা—ফুড হ্যাভেন, হুইজ পিপল ট্রিট ইউ! হাউ ফানি! ডিম হাতে পালিয়ে যাচ্ছে—অদেশীয় মুরগি। আর তুমি অসাধুপায়ে খুঁজছো হালাল ফুড।
বাবার জায়নামাজ
সযতনে গুছিয়ে রেখেছি বাবার জায়নামাজ। নিপুন বুননে লেগে আছে কপালের ঘাম ও অশ্রু। আলতো ছুঁয়ে দেখি বাবার শরীর রোদে পোড়া বৃষ্টি ভেজা ফসলি গা, আদরে ডাকে—গ্যাদা আয় শুনে যা। বাবার আঙুল চেপে শুক্রবার আসে, হাটবারজুড়ে থাকে খুরমা কিংবা জিলাপি ঘ্রাণ। শৈশব ঘিরে বাবা হন মহাপুরুষ, কাঁধে চাপে আবাদি ধান—মান অভিমান ভুলিয়ে সাত পরীর কেচ্ছা শোনান।
বাবা বৃদ্ধ হলে আমরাও বাবা হই, হামাগুড়ি খায় ভবিষ্যৎ। স্মৃতিগুলো জমা রাখি বদ্ধ কবরে। বেলা—অবেলা ঘাম গন্ধে বাবা বাবা ঘ্রাণ ওঠে, পুরনো অ্যালবাম খুলে দেখি অম্লান হাসি ফিকে হয়ে আছে। অদূরে দোলে জায়নামাজ, দু’রাকাত নফলে কাঁদি—বাবা কখনো বলা হয়নি তোমাকে বড় বেশি ভালোবাসি।
পোস্ট অফিস
পরিত্যক্ত ডাকবাক্সে কলার খোসা ঢুকিয়ে ভাবি—এটা কোনো ছাগলের খামারে চলে যাবে। এরও আগে পিঁপড়ে পেয়েছে টের—এখানে জীবন আছে।
ডাকবাক্সের মতো পরিত্যাক্ত পোস্ট অফিস—চশমাপড়া আশি বছরের বুড়ো, ভাঙা সাইকেল চেপে পোস্ট মাস্টার, রানারের পিঠে ঝুলে আছে বৃটিশ পিরিয়ড, মাস মাইনে।
পোস্ট অফিসের ঝুল বারান্দায় দাঁড়িয়ে—ইসাবেলার চিঠি। হলুদ খাম—মেয়ে হয়েছে, পিয়নের চাকরি আর নেই, ব্যবসা করছে স্বামী। পুরোনো দিনের স্মৃতি, ডাকবাক্সের মতো মলিন।
রাঙামাটি
ওরা আমাকে রাঙামাটির গল্প শুনিয়েছিলো। শুনে শুনে রাঙামাটি যাই, পোড়ামাটির গন্ধ মেখে নেই—রক্তের ঘ্রাণ । বাঙালি না পাহাড়ি এমন অমীমাংসিত নৃবিজ্ঞানে ভাগ করি এ কাঁধও কাঁধ।
এ কাঁধে ভর সইবে তো আর্মি জোয়ান? না সহ্য হলে বুকের স্তন খুবলে পাহাড় ধসের গল্প লিখিও। এসএমজি চার্জ করিও রমণীর যোনী বরাবর। চিৎ হয়ে দাহ্য হবে ওয়ানগালায় যাওয়া বালিকা।
চৈত্র সংক্রান্তি শেষেও ফিরবে না নতুন বছর। জুম চাষের ভেতর হারিয়ে যাবে রাঙা রামধনু—তোমরা আমাকে রাঙামাটি নিও কফিনের ভেতর।