একটা উজ্জ্বলতম ভোরের জন্মগ্রহণ পদ্ধতি
বেহালার মদ শেষ করে শহর ঘুমোতে যাওয়ার যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করতেই আচমকা একটা পাগলা হাতি নেমে আসে অন্ধকারের অরণ্য ভেদ করে। সামনে যা কিছু আসে পাগলা হাতি তা পিষে দিতে থাকে চরম নির্মমতায়; নারী-নাবালক-সভ্যতা নির্বিশেষে।
উপশহরের দিকে ঢলে পড়া কুঁড়েঘর থেকে এক দেব শিশু পাগলা হাতির সামনে এসে দাঁড়ায়। তার এক হাতে মানচিত্র, অন্য হাতে অপ্রতিরোধ্য দেহ; সে চিৎকার করে বলে, ‘সাহস থাকলে এগিয়ে আয়!’ পাগলা হাতি পিছু হটে। ফিরে যায় অন্ধকারের অরণ্যে। শহর পুনরায় ঘুমের ভেতর ডুব দিয়ে অনেক-অনেক পায়রা উড়ে যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর থাকে।
একটা উজ্জ্বলতম ভোরের জন্মগ্রহণ পদ্ধতি শেষ হয় এভাবেই ।
মৃত্যুর পূর্বে আত্মহত্যাটি
অবাধ্য পায়ে সগৌরবে হেঁটে বেড়ায় কুয়াশার প্রেতাত্মা, মৃত্যুর চাদরে নিশ্চিন্তে শুয়ে আছে একটি সদ্যপ্রসূত আত্মহত্যা, বয়স কত আর হবে? হয়ত হবে সাত, সেটারই স্বরূপ উন্মোচনে নিয়োজিত ঘড়ি, কাচা ডেটল চোখে ঠাঁই দাঁড়িয়ে মৃত্যুর করিডোর। হাসপাতাল তাকে চেনে না।
বালিশবিহীন মাথাটা বাম কাতে হেলানো, কাছেই সভ্যতার পুতুল কাঁদছে সঙ্কোচে, মুদ্রিত কয়েন উঁকি মারে স্থির পর্দার মুখে, মৃত্যুর পাশে অপ্রাপ্তবয়স্ক স্মৃতিদের আসা নিষেধ, গৌণতার উদরে ঘাড় ঘুরিয়ে তাই কাঁদে বন্ধুত্ব।
কিছু নগ্ন কালি পড়ে আছে সময়ের উরুদেশে। আত্মহত্যাটির ঘাড়ে, গলায়, পিঠে, বুকে, পেটে, আর কেউ নেই। কোনো সূত্রও মেলে না, বিচারিক কলম তবু খুঁজে নিয়ম, নিয়ম কি মেলে? দৃশ্যপট দাবী করে বসে পরিচয়।
পুনশ্চ: মৃত্যুর পূর্বে আত্মহত্যাটি ছিল অপরিণত, এই বয়সেই তাকে করা হয়েছে আহারের শিরোনাম।
পুরুষ
আমার আব্বায় কয়,
‘আয় বাপ আমরা নিজেগোরে অদলবদল
কইরা ফালাই’
আমি কই আব্বা, দাদায় যখন কইছিল
তুমি কি রাজি হইছিলা?
আব্বায় কয়, ‘না।’
আমি আর আব্বা পাশাপাশি বইসা থাকি।
আব্বায় দাদার মুখটা মনে করবার চেষ্টা করে,
আর আমি চাইয়া থাকি আমার পুলার দিকে।
অট্টহাসির কাটা মুণ্ড
মেদের শেষকৃত্যে পরিবেশন হয় উষ্ণ স্বাস্থ্যকুশল
যেখানে নায়ক তার চরিত্র থেকে নির্ধারিত অভিনয়
খুলে রাখে বিশ্রামের পেয়ালায়।
ক্ল্যাপস- ক্ল্যাপস- ক্ল্যাপস! হস্তরেখার চর্চায় অট্টহাসির কাটা মুণ্ড,
আর ভাবা যায় না। আর ভাবা যায় না! পর্দা পুড়ে এলো?
বেয়াড়া কবিতা
আমার ভেতরে একটা হ্যারিকেন লুকাই আছে, আমি তেলের খনি নই বইলা আলো হইতে পারতেছি না।
আলো হইবার লোভ আমারে শিখাইছিল আমার নিরক্ষর আদ্যোপান্ত কৃষক রক্ত।
আমার আলো হইবার লোভটারে মাতুব্বর সলতে হিসেবে ব্যবহার করবার চায়, হে কয়, ‘তর হ্যারিকেনটা দে,
আমি সলতের পাছায় আগুন জ্বালায় দিব নে।
প্রকাশ্যেই আমি নিজেরে শুয়োরের বাচ্চা গালি দিয়া কই আমি তো আগুন হইতে চাইনি আলো হইতে চাইছি।