মানুষের ব্যর্থতাসমূহ
জুতা তো নয় কোনো গোপনীয় পরিচ্ছদ
তবু তোমার, নীল জুতো হৃদয়ে জোয়ার,
আনে। মাঝে মাঝে মনে হয়, জুতো হয়ে
গলে যাই তোমার পায়ে!
ভিজে যাব ঘামে—বুকে নিয়ে উষ্ণতা।.
আমার মন মানে না
বাঁধতে পারলে খুব হতো
বুনো মোষও জাবর কাটে থাকলে নাকে দড়ি
তার কী সুন্দর শয়ন—আর তো আমার মন!
সে বেঁধেছে।
বাঁধলি যদি
গোয়ালছাড়া এই যে সকল ঘোরাঘুরি রোজ
যদি বলদ যায় হারিয়ে, না থাকে তার খোঁজ!
আর যদি না দৌড়ে ফেরে,
আর যদি না বলে, ‘আমার এমন লাগে ক্যারে’
হইলে দড়ি টান।
ওরে
আমার লক্ষ্মী সোনা—ওরে আমার শয়তান!
আমাদের রূপকথা
কত রূপকথাও তো সত্যি, দেখো আমাদের প্রেমও একদিন রূপকথা হবে!
এই যে তুমি চলে গেছ, চলে গেছ প্রতিদিনের মতো কত স্বাভাবিক নিয়মে
একটুও বুঝি নাই, সেইসব ছল! বুঝি নাই তোমার হাসি-খেলার সহজতর
পাঠ! চেনা রাস্তায় তুমিই প্রতিদিন নতুন নতুন সকাল, আলোময় দুপুরের
রোদ্দুর।—চলে গেছ, কত রূপকথাতেই তো, নায়িকার অমন আকস্মিক
প্রস্থান!
তবুও লক্ষ্মী, বিষাদের দিন গুনি। বিস্ময়ের মোড়ক খুলে দেখি সেইসব দিন,
কত রূপকথাও তো সত্যি, দেখো আমাদের প্রেমও একদিন রূপকথা হবে!
যতটা প্রেম প্রাপ্য নয়
প্রেম,
তুমি আজও বেঁচে আছো। কিন্তু,
জানি একদিন ঠিক মরেই যাবে।
এই যে হৃদয়ে
আলুথালু বেদনা সারাক্ষণ বসে
রয়। চিন্তা পোষা বিড়ালের মতো,
তোমার পায়ের কাছে ঘুরেফিরে
জড়ো হয়, সব বৃথা। শুধু যেসব
যন্ত্রণা হচ্ছে জমা, সত্যি তাইই।
জানি,
এই যন্ত্রণাও একদিন হয়ে যাবে
খুব সাধারণ। মগজের নিউরণে,
পড়ে রবে সামান্য স্মৃতি, সুখের!
তবু,
তোমাকে পাওয়া হলো না, এই
বোধ শুধু পৃথিবীতে একজনের
বুকেই জমা রবে। একজন তো
আর পৃথিবীর সব নয়!
ফুল ব্যবসায়ীর বাণিজ্যযাত্রা
তোর বাধ্য পা, রয় দূরে দূরে,
আমার অবাধ্য মন কেবলই তোর কাছে ঘোরে।
জানি, এই প্রেমে পৃথিবীর, কিচ্ছু আসে যায় না
জানি, এই রীতি—এ নগরে একেবারে ফেলনা।
জানি, তুই ভাত খেয়ে ধুয়ে রাখিস, হাত ও মন
জানি, তুই জাবেদা-খতিয়ান কষে, ব্যস্ত ভীষণ।
তবু,
এই শহরে আমার হঠাৎ একলা লাগে। চারপাশ
শূণ্য করে মনের মাঝে তোমার জন্য—গোলাপ
ফুটে ওঠে।
আমার অবাধ্য পা।
গোলাপ নিয়ে পথে পথে হাঁটে। গোলাপ শুকায়ে
গেলে দেখি ফের নতুন গোলাপ ফোটে।—পায়ে,
তোমারই পায়ে!