কুড়িগ্রাম
কোনোদিন আমি যাইনি কুড়িগ্রাম।
রাত গভীর হলে আমাদের এই প্রচলিত ভূপৃষ্ঠ থেকে
ঘুমন্ত কুড়িগ্রাম ধীরে ধীরে আলগা হয়ে যায়।
অগ্রাহ্য করে সকল মাধ্যকর্ষণ।
তারপর তার ছোট রাজ্যপাট নিয়ে উড়ে উড়ে
চলে যায় দূর শূন্যলোকে।
আমরা তখন দেখি বসে বসে আকাশ কত-না নীল
ছোট গ্রাম আরো ছোট হয়ে যায় আকাশের মুখে তিল।
অনেকক্ষণ একা-একা ভাসে নিখিল নভোভারতের রাজ্যে রাজ্যে।
দক্ষিণ আকাশে ওই যে একনিষ্ঠ তারাটি,
একসময় কুড়িগ্রাম তার পাশে গিয়ে চিহ্নিত করে তার অবস্থান।
তখন নতুন এই জ্যোতিষ্কের দেহ থেকে মৃদু-মৃদু লালবাষ্প-ঘ্রাণ ভেসে আসে।
সেই দেশে, কুড়িগ্রামে, ওরা মাছরাঙা আর পানকৌড়ি দুই বৈমাত্রেয় ভাই
কুড়িগ্রামের সব নদী শান্ত হয়ে এলে
দুই ভাই নদীবুকে বাসা বাঁধে
স্ত্রীপুত্রকন্যাসহ তারা কলহ করে।
নদী শান্ত হয়ে এলে
শাস্ত্রবাক্যে বাঁধা যত গৃহনারী
প্রাচীর ডিঙিয়ে এসে নদীকূলে করে ভিড়
প্রকাণ্ড স্ফটিকের মতো তারা সপ্রতিভ হয়।
হঠাৎ বয়নসূত্র ভুলে যাওয়া এক নিঃসঙ্গ বাবুই
ঝড়াহত এক প্রাচীন মাস্তুলে ব’সে
দুলতে দুলতে আসে ওই স্বচ্ছ ইস্পাত-পাতের নদীজলে।
কুড়িগ্রাম, আহা কুড়িগ্রাম!
পৃথিবীর যে জায়গাটিতে কুড়িগ্রাম থাকে
এখন সেখানে নিঃস্ব কালো গহ্বর।
কোনোদিন আমি যাইনি কুড়িগ্রাম।
আহা, এ-মরজীবন!
কোনোদিন যাওয়া হবে কি কুড়িগ্রাম?
বৈশ্যদের কাল
ধীরে ধীরে এই ভূমিপৃষ্ঠে ফিরে এল বৈশ্যদের কাল।
সার্থবাহ নিয়ে আসে ঝলমলে বাসকপাতার কোলাহল
দুঃখ সেরে যায়, অসুখ সারে না।
প্রতিদিন লাল রং ভালোবেসে অনূঢ়া অনল
খেয়ে নেচে নেচে বেঁচে যায় ছেলে।
অসুখের ওই পার থেকে ছোটমাসি পুরো নাম ধরে ডাকে,
‘আয় দ্যাখ্, বৃক্ষেরা কর্তব্য করে না
কেবলি কলহ করে মেঘেদের সাথে।’
অমনি মাথাভর্তি ঝিলিমিলি হিলিয়াম নিয়ে
নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে
ওই উঁচু-উঁচু মেঘ থেকে তিনচক্রযানে চেপে
ছুটে আসে ছেলে।
বাতাসে বাতাসে ঘর্ষতড়িৎ জ্বলে ওঠে।
চকচকে নিকেলের মতো তারাবাজি পোড়ে।
তারপর একদিন ঘুমন্ত স্ত্রী আর পুত্র রেখে ঘন রাতে
নিরুদ্দেশে যায়
নিরঞ্জনা নদীকূল শুধু কাঁপে অকূল তৃষ্ণায়।
প্রকৃতি অলস ঢঙে এসে উপগত হলো ওই পুরুষের
পিঠের ওপর
কালচক্রে জন্ম নিলো জন্তু
অর্ধেক জলজ আর অর্ধ ঊর্ধ্বচারী প্রাণীর মতন।
রক্তচক্ষু,
শিরদাঁড়া কাঁটাঙ্কিত, অসম্ভব বর্ণাঢ্য যুগল ডানা
নিম্নাঙ্গে জলজ পিচ্ছিলতা, লেজ
মুখ দিয়ে অবিরল তেজ বের হয়ে ভাসালো ভূখণ্ড
কী যে কাণ্ড হলো!
ডাকো বৈদ্য। আহা, ডাকো না বুদ্ধকে।
সে তো বোধিপ্রাপ্ত, সে এসব জানে, তাকে ডাকো।
তারপর ধূলিঝড় হলো, হিমবাহ গেল শতযুগ,
ধীরে ধীরে এই ভূমিপৃষ্ঠে ফিরে এল বৈশ্যদের কাল।
ওইখানে হইহই রইরই পঞ্চকাণ্ড মেলা বসতো
হাজার বর্ষ আগে
আজ শুধু একজোড়া নিরিবিলি জলমগ্ন বৃক্ষ বাস করে।
দূরে ওই বৃক্ষমিথুনের থেকে, থেকে-থেকে মিথেন জ্বলে উঠলেই
ছেলেরা ও মেয়েরা একালে বলে ওঠে, ওই যে ভূতের আলো দেখা যায়
নীল-নীল আলো দেয় ছেলেটির শরীর, অশরীর।
কন্যাসংহিতা
১. নদীকূলে করি বাস
কন্যা বারবার ঘুমিয়ে পড়ছে নদীতীরে
আজ সকাল থেকেই।
বারবার কেন ঘুমিয়ে পড়ছে?
যদিও নদীকূলেই বাস চিরদিন আমাদের,
একেবারে নদীতীরে নয়, একটু দূরে।
তবে কি বিশ্বের সব বিস্ময়ের শুরু এই ঘুমবিন্দু থেকে?
২. প্রাচ্যবচন
সকল উদ্বৃত্ত নিদ্রা আর আচ্ছন্নতা
পরিত্যাগ করে কন্যা একসময় গাত্রোত্থান করবে,
সকন্যা আমাদের উজ্জ্বল গৃহযাত্রা হবে–
সেই দুর্মর অভিলাষ ঘিরে এই সাধ্যসাধনা নিরন্তর।
ওই যাঃ! কন্যা আবার ঘুমিয়ে গেল!
আর আমিও এই বসে পড়লাম লালধূলি নদীতীরে
কন্যাজাগরণ সাধনায়।
৩. প্রথম অধিকরণ– ঊর্মিকুমার ঘাট, ১ম বৈশাখ, ১৩৯৯ সাল
কন্যা ঘুমিয়ে পড়ে নদীকূলে আজ ঊর্মিকুমার ঘাটে
আজ শুধু একটি বৃক্ষ নদীতীরে—একা আর হরীতকী।
৪. সাধ্যসাধনা
আগুনে আকাশ আজ সারাদিন দোহন করেছে মৃত্তিকাকে।
বেলা পড়ে আসে
কত নিদ্রা যাও রে কন্যা…
গাত্রোত্থান করো
বাসকপাতা ধরে ধীরে উঠে এসো।
রৌদ্রস্রোতে আহা রূপ ধুয়ে যায় নিরন্তর
চলো এইবেলা গৃহে যাই ফিরে।
৫. সাধ্যসাধনা
তোমাকে বিধৃত করে থাকে
অশেষ-ছড়ানো দুপুরের ক্ষীরমাখানো হরীতকী বীজ
নিচে অকথ্য আন্দোলন,
ধীর চলমান জীবাশ্ম জ্বালানি, ম্যাঙ্গানিজ।
তবু
কত নিদ্রা যাও রে কন্যা…
জাগো, জাগো একটুখানি।
6. পৌনঃপুনিক
পুনশ্চ ঘুমিয়ে পড়ে কন্যা নদীকূলে, ঊর্মিকুমার ঘাটে।
৭.সাধ্যসাধনা
এইমাত্র শেষ দোহনপর্যায়।
ফেনা-উৎসবে, এখনই, উপচানো সার-সার গোলাকার মাটির বালতি।
বিশ্বের সব পাখি আজ ভিজে যাবে বালতিতে বালতিতে,
দণ্ডিত সারসসমেত (একেন পাদেন তিষ্ঠন্তম)–
চঞ্চু চঞ্চু থেকে ফেনা, সঙ্গে ধ্বনির তুঙ্গ মড্যুলেশন, ছিটাতে ছিটাতে।
দূর চক্রবালে ওই গোল দেয়ালে দেয়ালে
অযথাই জাগছে বৃষের পুরীষপিঠা
কোটি-কোটি গুটিবসন্তের আকারে
আচমকা, ঝলকে ঝলকে।
পালাই,
ছড়ানো সকল তৃষ্ণারেখা গুটিয়ে নিয়ে
চলো কন্যা পলিয়ে যাই এইবেলা নদীতীর থেকে।
৮. যখন ঘুমের ছায়া পড়ে নদীর ওপারে, ঘাসে
তোমার ঘুমের কাঁপা-কাঁপা ছায়া শুষে
স্ফীত হয় ওই বৃষের কুকুদ, নদীর ওপারে, ঘাসে।
পিঠাপুরাণ
যে-উত্তাপ, শৈত্য, আর জাদুর প্রভাবে
পোড়া পিঠাতেই উদগম অঙ্কুরের,
শুধুমাত্র রূপচিত্র বলে আটকে রেখেছ উপাখ্যান
ব্রোঞ্জ-মেহগনি কৌটার গহ্বরে।
পিঠায় পিঠায় ভরে গেছে সব গাছ।
আজ, সে রাখাল, সেই অলস সৃজনকর্তা,
ছিটকে বেরিয়ে প্রকাশিত প্রথম নদীপথে ম্লেচ্ছভাষায়,
প্লাস্টিক ছেঁড়ার মতো শব্দ করে বায়ুতে বায়ুতে।
তার সব আফিম-কামাখ্যা-দশা নিজেই খারিজ করে দিয়ে
মুচড়ে উঠে আসে সারা দেহে চূর্ণ-চূর্ণ অক্ষরসমেত,
প্রবাদপৃষ্ঠার।
একবার কালো, আরেকবার দিগম্বর
যথাক্রমে কালো ও দিগম্বর হয়ে
ওই দঁড়িয়েছে পিঠাবৃক্ষতলে প্রকাশ্য দিবালোকে।
বিস্ফারিত তার চক্ষু ত্রিভুবন
অসংখ্য ঝকঝকে ঝুলমান পিঠার প্রকাশে।
এতকাল পরে, আজ এই পরম জঙ্গম দিনে
পুনর্বিবেচনার জোর দাবি হেঁকে হেলেদুলে আসে
ওই নাঙ্গা কালো কমলিওয়ালা
আমাদের মন্থর ম্যাজিশিয়ান আহা আলস্য মধুরেণ…
পিঠাকীর্তি-পুরাণ ওই…
বিছানো কম্বলের ওপর দু-চারটি টুপটাপ পিঠাফল।
সমাবর্তন
স্নাতক যাচ্ছে গুরুগৃহ থেকে ফিরে
সমাবর্তন আজ সমাবর্তন।
স্নাতক মিশবে ব্রহ্মপুত্র-জলে
ভাসাবে ব্রহ্মচর্য নদীর স্রোতে
সমাবর্তন আজ সমাবর্তন।
আবর্জনাই মানুষের শেষ উত্তর-অধিকার
ব্যাখ্যাবিহীন দাঁড়িয়ে রয়েছি যুগ-যুগ প্রাঙমুখ
পূর্ব দিকটি অধিক মৌল, অধিক অর্থবহ
দাঁড়িয়ে রয়েছি অনিঃশেষের প্রশ্নে আন্দোলিত।
স্নাতক যাচ্ছে গুরুগৃহ থেকে ফিরে।
সম্প্রসারিত উপবাস আর তৃষ্ণার কাচ ফেটে
গড়িয়ে পড়ছে ছাইরঙা স্রোত জলে
বহুবল্লভ যাবে আজ খুব দূরে
তার সাথে যাও, দক্ষিণে যাও, যেখানে ইচ্ছা খুশি
ট্যান্টালাসের উত্তরসূরি তুমি।
স্নাতক যাচ্ছে গুরুগৃহ থেকে ফিরে।
জেব্রা আসবে ব্ল্যাক-আউটের রাতে
লাফাতে লাফাতে। কাকভোরে কাকাতুয়া।
পশম পিছলে ঝরবে তাদের তির্যক দস্যুতা।
উত্তল সন্ত্রাসে
বিরামচিহ্ন কাঁপতে কাঁপতে ঝুঁকে পড়ে যাবে খাদে।
স্নাতক যাচ্ছে গুরুগৃহ থেকে ফিরে।
ব্রহ্মপুত্রে ভাসে মৃতদেহ অনুজ্ঞাপত্রের।
মানুষ
প্রাণীশূন্য নদীচরে নির্বাসিত একটি বিড়াল।
কালো ও নিঃসঙ্গ।
চুরি করে পাত্র ভেঙে দুধ আর মাছ খেয়ে ফেলে,
উপরন্তু ইঁদুরও ধরে কম,
তাই উত্ত্যক্ত প্রতিপালক
বস্তাবন্দি করে এনে ছেড়ে দিয়ে গেছে বালুচরে, আজ ভোরে।
বিড়াল বারবার লাফিয়ে লাফিয়ে উঠতে চেয়েছিল
প্রভুর প্রত্যাবর্তনকারী নৌকায়।
পানির কিনার ধরে হাঁটে।
দু-একটি উচ্চিংড়া, ব্যাঙ, লম্ফমান মাছ
কৌতূহলে আড়চোখে দ্যাখে–
এ-জমিনে নতুন মখলুকাতের আবির্ভাব ঘন চৈত্রদুপুরে।
পানির কিনার ধরে হাঁটে।
বামাবর্তে সমগ্র চরটি ঘুরে আসে।
একবার দাঁড়ায় উপদ্রুত মনীষীর মতো দৃষ্টি মেলে দূরে–
প্রসারিত পলিথিনের মতো টানা জল, মরুরং;
তীব্র ফড়িং-শিহরণসহ ভেসে ওঠে
পরপারে প্রবাহিত সবুজ সিরামিক-ব্যান্ড, ঘনবসতির;
ছায়া
শিশু-ইঁদুরের মায়াকরুণ চাহনি
মনিবের সর্বশেষ মুখভঙ্গি
নিরিবিলি উঞ্ছজীবিকার স্মৃতি।
খুব ম্রিয়মাণ হয়ে ধরা দেয় মালিকের দূরনিয়ন্ত্রণী সংকেত–
তিনি এখন এতটা দূরে, প্রাক্তন।
স্বকাল
এবং আবার তীব্র চাপ
রক্তস্রাব
ইতিহাস-ক্যারাভানচ্যুত পশু ও মানুষ
আবার নতুন কার কাটা মুষ্ককোষ ঘিরে আবর্তিত
সৃষ্টিশীল ফেনাপুঞ্জ!
ফের বস্তুবিকাশের সমতলে কর্পূরের উদ্বায়ী প্রতিভা।
এবং ফাটিয়ে সর্বনাম ঢোকে জল তিন দিক থেকে
প্রেক্ষা ভেঙে লাফ দিয়ে ঢুকে পড়ে দুর্বিনীত উদবিড়াল।
কালে কালে হাড়ের কাঠামো অতিক্রম করে
ছলকে ছলকে ওঠে মাংস,
পচনপ্রবণ, শুধু মাংসের ছোবল।
পঙ্গু ভিখারির বিষণ্ণ আত্মমৈথুনের মতো
কাঁটাতারে হঠাৎ-আটকে-যাওয়া ভুবনচিলের
লাল দীর্ঘ চিৎকারের মতো
এইবার দ্রষ্টব্যে শুধু অবদ্রব, নাব্যতা-হারানো মেঘ,
শুধু শাদা, শুধু ডিসক্রিট, শুধু দগ্ধকালো কার্বনের মতো…….
বিমোক্ষণ
আজ
এই পূর্বাহ্নেই
সমস্ত ঘটনাতরঙ্গের
চূড়া-বিন্দু-বিন্দুতে পুঞ্জিত ছিল হলাহলফেনা
দিগবিদিক বেপরোয়া বিষের উত্থান–
তোমার শরীর থেকে বিচ্ছুরিত স্বর্ণধূলি গিয়ে
মিশছে রশ্মির রবিশস্যীয় প্রতিভায়
এতে যে সর্বপ্লাবী বিষরসায়নের বন্যা
তাতে বুঁদ হয়ে ডুবে ছিল আজ সমগ্র নিখিল।
এখন, এই সন্ধ্যাক্ষণে,
রাঙা আলো-অন্ধকারের এই মৃদু-মৃদু ঘর্ষণমুহূর্তে
বিষের সকল দিগবিদিক সম্ভাবনা
দপ করে স্তব্ধ হয়ে আসে
সাপও অহিংস হয়ে যায় এই ধীর কমলাপ্রবণ সন্ধ্যায়।
কবরের উপকথা
একটি কবর পড়ে থাকে একা ঘোর দুপুরের রোদে
ফলকে খোদাই বাইশে পৌষ তেরোশো বিরাশি সাল
মাটির ভেতরে কে এক শ্রমণ গড়ছে প্রতিষ্ঠান
রশ্মিমথিত শোণিত এবং শাণিত মনীষা দিয়ে।
মূর্খ মানুষ প্রত্নের লোভে কবরের দেশে যায়
বাঁকা বসবাস, অনুসন্ধান, বক্র সমান্তর;
ক্যালেন্ডারের ভস্ম ফলক ছুঁয়ে ছুঁয়ে উড়ে যায়
মূর্খ মানুষ, ওই নির্মাণ ভ্রান্ত প্রকৌশলে।
সাদা ও কপিশ, সাদা আর শুধু সাদাদের বিন্যাস
একটি মানুষ বহুবিভাজিত বিষম সমানুপাতে
ক্যালেন্ডারের ভস্ম ফলক ছুঁয়ে ছুঁয়ে উড়ে যায়
একটি মানুষ রূপান্তরিত পাথরিত যৌগিকে।
চেরাগজন্ম
বাতাসে ভাসিয়া যায় বহু ব্যঞ্জনধ্বনি, ঘ্রাণ আর
প্রলাপবিলাপবিকিরণ, নিরুদ্ধার, যুগের যুগের।
লণ্ঠন তুলে ধরো চারণপুত্র,
আজ ভাষা ভেসে যায় সন্ধ্যা-, অন্য কালের।
ভাষা পাঠোদ্ধারহীন যায় ব্যাসকূটসহ,
ধরো খপ করে চঞ্চুক্ষেপে একে একে
আলো ফেলে লালা ফেলে করো অর্থভেদ দেখি এইবার।
চারণ, তোমার চেরাগজন্ম বৃথা যায় যায়…
মন্দ গাইছে লোকে দিকে দিকে পুনর্বার
চিমনি চিরে যায় আজ উন্মার্গ জলের ছিটায়
লোকের সকল মন্দ চন্দনচূর্ণ করে বলো,
এ-ই মাখিলাম এই অখণ্ডমণ্ডলে।
চারণ তোমার চেরাগজন্ম বৃথা যায় যায়
চিমনি চিড় খায় আজ উন্মার্গ জলের ছিটায়
চিমনি চিরে যায় আজ চক্রবাল থেকে
তেড়ে আসা অভিশাপে, ভর্ৎসনায়।