অ্যাকুয়া অ্যাকুইস্টিক খেলা
ঘুমাতে ঘুমাতে এত যে বিষমন্ত্রের ছবি এঁকে যাই
তাও তো ভাঙে না ঘুম
জীবন শুয়ে আছে মরফিন মিডিয়ায়
চুপ করে থাকা ঠোঁটে গান শুরু হলে কার কী আসে যায়
খেলাদিনে চেনা হল লংকা পোড়া ঘ্রাণে
দেখা যাবে দূর জমানো বরফ ঠেলে বেরিয়ে আসা এক
মৌলিক ছবি চেনাজানা শেষ করে
অ্যাকুয়া অ্যাকুইস্টিকের ধ্বনি মেখে দেয় জলপৃথিবীর সুরে
এমনকী হারিয়ে যাওয়া কথাগুলোতেও
সত্যিই কি খেলা শেষ হলো, না কি বাকি আছে আরও
চমক লাগানো ওই গন্ডোলা ভেসে যায় ভেনিসের জলে
পাথরের সিঁড়িতে একজন দেবদূত জলে ঝাঁপ দেওয়ার ভঙ্গিতে
একঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে, অপেক্ষার মন্ত্রজাল বাহবা টানে
সবই খেলা এইবেলা। দেবদূত জানে
কতবেলা বয়ে গেলে খিদে পাবে আর সে তখন
দেবদূত থেকে মানুষ হয়ে সিঁড়ি বেয়ে মাটিতে উঠে আসবে
বিশ্বাস না হয় অপেক্ষা করো, প্রমাণ পেয়ে যাবে
হুডিনির জাদুবিদ্যা থেকে
অনেক দূরে চলে গিয়েছিলাম। ফিরিয়ে আনতে একজন পিছু পিছু
চেনা জানা ছিল না বলে কেউ একজন সারাজীবন পেছন পেছন
ডাকও দেয়নি, অথচ ফিরিয়ে আনতে ঠিক এসেছিল
এটা জেনেছিলাম হুডিনির জাদুবিদ্যা থেকে। কী করে জানলে
তার গায়ের গন্ধে মিহিন কুয়াশা কাঁপছে। সারা পথ একাকী
চিত্র চলচ্চিত্র ছবি ছুঁয়ে দীর্ঘশ্বাস ঘুমিয়ে পড়ে, কুয়াশা কাঁপে
পাখা মেলে। ঘুমছুট দৌড়ে একটানা ছুটতেই থাকে
এসব ঘটনা বেছে বেছে আমাতেই ঘটে জাদুকর জানে
মনোহর, দেখো মন হরণের উপায় না বলো ক্ষতি নেই
শুধু সুনসান দুপুরে স’মিলে কাঠ চেরায়েই শব্দ তাকে
ফিরিয়ে আনতে গিয়ে ভুল করে নিজেরেই চিরে ফেলো না
হুডিনির জাদুবিদ্যা এতসব শেখায় না
হিউম্যান–মাস্ক মাইম দেখায়
পথে পথে রক্ত ধুয়ে যাই। যেতে না যেতেই আবারও নতুন রক্তবন্যা
পরিষ্কার করতে করতে দিন যায়, মাস যায়, বছর যায়, শতাব্দী যায়
হাওয়া কাঁপিয়ে হঙ্কার ওঠে! তা শুনে কেঁপে উঠি কি না, তাই দেখতে
গোল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে কিছু চোখ। কোটি বছরের পুরনো মাটিতে
কী দেখতে চায় ওরা, হাওয়ার উল্লম্ফন না পৃথিবীত যাবতীয় শোক
একটি হিউম্যান-মাস্ক মাইম দেখায়, বাজারে দাঁড়িয়ে সেসব দেখায়
মাঝে মাঝে হাসতে হাসতে একে তাকে ধরে ধরে খুব জিজ্ঞেস করে—
মানুষের মতো লাগে না যখন, তখন মানুষ বলে ডাকি কী করে
তারচে’ একটি নতুন শব্দ ভাবো। যদি নাই পাও
না হয় মুখোশ নামেই ডাকো
অনেকেই মুখ চাওয়া-চাওয়ি করে, নিঃশব্দে কেটে পড়ার রাস্তা খোঁজে
তাদের নীরবতার গুণকীর্তণ করব না কি নতুন রক্ত ধোব, ভাবছি
ভিনগ্রহে পাঠিয়েছি বখাটে সংবাদ
যখন যেখানে যত দুঃখ ছিল, সকলের বুকে
আগুনের চাড়া লাগিয়ে দিয়ে বলেছি, জ্বালাও
যতটুকু শক্তি আছে তাই দিয়ে জ্বালাতেই থাকো
হে অনল-অহং এসো, পরিচিত হই এইবার
তোমাদের দেশে নাকি জিপসিদের আনাগোনা খুব বেড়ে গেছে
ওদের ঝুলিতে থাকে চরস-গাঁজার বিবরণ। দু-একটি পুরিয়া কিনে
টান দিয়ে পেতে পার যার যা খুশি। কী মজা, দেই হাততালি
কুড়াতে থাকি বিনিসুতোর সম্পর্ক, বেঁচে থাকার জারিজুরি
কাল পরশুর গল্প রাখ তো বাপু, আজকের কথা বলো। জানো নাকি
জিপসি নারীদের মতো জিপসি পুরুষেরাও কমোর দোলাতে পারে
তাদের দুলে ওঠায় সিটি বাজায় তামাটে নারী, শীৎকারে কাঁপায় স্তন
না এসব মিথ্যে নয়। না মানলে এই বেলা তবে পরীক্ষা হয়ে যাক
হা হা হা ওতে আমার কিচ্ছু হবে না। এর চেয়েও আরও বেশি
তীব্র নেশার ঘোরে কেটে যাচ্ছি বাতাসের নাড়ি, সঙ্গম যন্ত্রণা
উজাড় করে গিলছি হাজার হাজার ক্রীতদাস আগুন এবং
মরচে ধরা সিংহ দরজায় উড়িয়েছি বুদ্ধের রংহীন চীবর
তারপর, ভিনগ্রহে পাঠিয়েছি বখাটে সংবাদ
এখন অপেক্ষায় আছি
পরজন্মে কমলা রোদ রঙে
ক্ষমা কর, ওগো ভিনদেশি বালক। পৃথিবী কমলালেবু
সূর্যকে ভোগ করা যাবে। এভাবেই ঋণশোধ ধরো
বেশ বুঝতে পারছি
কেউ একজন কোথাও বসে অবহেলা করছে
কিন্তু সে কি জানে আমিও সব টের পেয়ে যাচ্ছি
অবহেলা দিয়ে সাঁকো বানাচ্ছি
সব টের পাচ্ছি, সাঁকো বানাচ্ছি
টের পাচ্ছি, সাঁকো বানাচ্ছি প্রতি মুহূর্ত
স্রোতের বিরুদ্ধে রেগে থাকা শ্বাস ওঠা নামা করে
ভালোবাসা মৃতগ্রহে নির্মম নিমগ্ন প্রহার
এতকাল শুধু শুধু উপহার ভাবা হলো তাকে
আস্তে আস্তে সেই ব্যথাগুলোকে ভুলে যেতে হবে
প্রহার উপহারের মাঝে লুকানো ব্যবধান ঘুঁচে দিয়ে
কয়েকটি বিজ্ঞাপন উন্মাদ পর্যটক বেশে নাইটশো ভেঙে
দংশন জর্জর ব্যথাদের সাথে হাত মিলাবে
যে ব্যথারা জন্ম নেবে পরজন্মে কমলা রোদ রঙে