মুভির ভূতের মতো আওয়াজ করে চলে গেল অতিদূর ট্রেনের বগি!
সেইখানে পাবে মেঘজর্জর আকাশের দেখা,
কত শত নির্জন বুকে চলে কাঠচেরাইয়ের কল,
কত বুক মহাশূন্য!
আর নিজ বিষয় আশয় ফেলে এসে
দূর মফঃস্বলে ঘর যে বেঁধেছে হাওয়ায়,
তাঁকে পাবে নিঃসম্বল বার্ধক্যে,
অথচ তাঁহার শব্দ জমানো ঝোঁক আর
বইপত্রে ঠাসা মস্তিষ্কে ছিলো শনে বাঁধা গেরস্থালি,
সামান্য আলোয় ফোটা এক ফুল দুই পত্রের প্রেম,
একদিন, কোনো একদিন প্রেমে!
মুভির ভূতেরা যেন খামচে ধরেছে গলা
শোক নেই, প্রতিরোধ নেই, শুধু কবিতার ছলে
বুনে রাখা আছে জীবনাবৃত্তি!
প্রেম এক সুজলা প্রার্থনা, কখনো সে পাপ।
এই পাপবোধে যেন রক্তও ছাড়ে না রক্তরে পণ গুনে,
প্রেমের মাশুলে পোড়ে স্বজন-সম্পর্ক !
এ-রকম ভাবনাবৃত্তে এসে এত যে নিস্তরঙ্গ লাগে,
উলবোনা মেঘ নিয়ে হাবুডুবু মস্তিষ্ক-
থামছেই না এরকম রেডিওর গান মনে করি আজ,
মনে করি সাতানব্বুই সাল, মেঘের ফাটলে ঝুঁকে আছে মালতীমদিরা চাঁদ!
এতো যে নীরবতা নিয়ে চেয়ে আছে বাজারের ব্যাগ,
গলা উঁচা করে আছে চিচিঙ্গা, ভারাক্রান্ত লাগে নাকি তোর,
ধীরে ওড়া ঘুড়ির মতন সরু কণ্ঠে ডাকে নক্ষত্রপুঞ্জ
নাকি সুপ্ত কোনো গ্রহের আলেয়া?
যে আজো নিজেকে দেখে রাখতে জানে না
তার ঘর আলো করে আছে মুঘলবর্ণ ঝার;
সেইদিকে চেয়ে থেকে গাঙে যে ঢেউ ওঠে তার বুকে এসে
মিয়া তানসেন জপ করে নাকি কালরাত্রি?
মনের বাগিচায় ঘুড়ি ওড়াচ্ছে কেউ, আর কারো
মুখস্থ জ্ঞান হতে সানাই বাজায় আহসান মঞ্জিল!
এতসব দৃশ্যকল্প মাথায় জড়ো করে যারা প্রকৃত কবিতা লেখে
তারা ভাবে কেউই শত্রু নয় এক জীবনে,
তারা ভাবে তাবড় হরপ্পা এসে তাদের বুকে আয়েশ পেয়ে ঘুমায়,
তিস্তাবাধের ওপর দ্বন্দ্ব সমাস বসে রৌদ্র পোহায়!
চোখের ভিতর মেন্দি পাতার ঝিরি,
মাথার ভিতর মাঘের শুকনা খাল!
গরুকে ঘাসের মহাল বুঝিয়ে দিয়ে,
ঘুমিয়ে পড়েছে রাখাল; নাকি সে-ই মহাকাল?
মেঘ থেকে নেমে আসা সবুজ টিলার বাঁকে এসে
মানুষের অজস্র ভণিতা সয়ে যার চোখে তন্দ্রা এসে গেছে!