খুন!
রক্তমাখা ছুরি হাতে যখন হাঁটছিলাম! তখন পথজুড়ে অনেক লাশ! মানুষের লাশ! ভেবেছিলাম বেছে বেছে হত্যা করবো! অথচ, পথজুড়ে শুধু লাশ পড়ে আছে! পথচারীবিহীন এ কেমন পথ!
শীতল ছুরি ক্রমশ হত্যা করে চললো অজস্র মানুষ! মানুষের গলাকাটা দেহ থেকে রক্তের স্রোত বয়ে গেলো রাস্তায়, নর্দমায়! মেঘের দেহ ভারী হলো! আমার মন গললো না, বৃষ্টি এসে ছুঁয়ে গেলো তবু মনের উত্তাপ কমলো না।
লোভী, সর্বভুক মানুষের লাশে ভরে গেলো নগর, বন্দর, কাচারি! আনাজের বাজার থেকে সুপার সপ, ফুটপাত থেকে সেক্রেটারিয়েট; সবখানেই কেবল লাশের স্তূপ! ডাক্তার থেকে মোক্তার, মুদিওয়ালা থেকে দুধওয়ালা; কেউ রেহাই পেলো না শীতল ছুরির দেবে যাওয়া থেকে!
ইঞ্জিনিয়ার থেকে কৃষিকর্তা, কর আদায়কারী থেকে নগর নির্মাতা; সারিবদ্ধ দাঁড়ানো অসংখ্য মানুষ! যাদের জিভ নেমে গেছে নাভি অবধি! যাদের চোখের মধ্যে কোনো মণি ছিল না! যাদের বুকের মধ্যে কোনো হৃদয় ছিল না! অথচ কী আশ্চর্য! আমি মরিয়া হয়ে ওঠার আগ পর্যন্ত এরা বেঁচে ছিল!
দ্বিতীয় জন্মের গান
তারপর একদিন মনে হলো পৃথিবীটা আমাদের নয়, অথবা একেবারেই অনুপযুক্ত; বসবাস থেকে সহবাস, কোনোটাই বৈধ নয় এখানে। একটা অবৈধ জন্মের পাপ মোচন করতে করতে মৃত্যুকে ডেকে নেওয়ার অপেক্ষা ছাড়া আর কিছুই নেই আমাদের জীবনে!
এরপর যদি জন্ম নেই, তবে শর্ত বেঁধে দেবো স্রষ্টাকে; বলবো, প্রেমই আমার ধর্ম, চুমু আমার চিকিৎসা, আর আলিঙ্গন আমার একমাত্র আরাধ্য!
বলবো তোমার জন্য আমি প্রার্থনা করবো না, ক্ষমাও চাইবো না; কারণ আমার কোনো পাপ নেই। পাখিদের পৃথিবীতে যেমন, সে রকম আমিও তোমাকে ডাকবো সুরের মূর্ছনায়; গাইবো, হাসবো, উড়বো! আর হঠাৎ যদি পেয়ে যাই তোমাকে, চুমুর শিকার হবে তুমিও!
সীমানা
অ্যাকুরিয়াম নিয়তির স্ফটিক দেয়াল! প্রতিবার রাস্তা বদল অথবা ফিরে আসা! তবুও অনন্ত সাঁতার…কৃত্রিম বুদবুদ অথবা পাথরকুচি, পৃথিবীর অবয়ব নয় হয়তো।
মাছের মৃত্যু নিয়ে শিশুরা হয়তো ভেবেছিল, এই যেমন পাখির মৃত্যুশোকে খাইনি একদিন। ‘আমাকে তোমরা দাঁড় করিয়ে দিয়েছ মানুষের সামনে!’ একটা অভিযোগ কাউকে বলা হলো না আজো।
পথগুলো ফিরে আসে। আমি যেতে চাই চড়ুইভাতি রেখে আসা সেই অরণ্যে; যেখানে পোষা কুকুরের সমাধি। নাটাই থেকে কেটে যাওয়া ঘুড়ির বিচ্ছেদ।