পতিত
কেউ কেউ পতিত নয় সকলেই পতিত
যে অভিযোগ অনুযোগে
কেউ কেউ ঝরে গিয়ে পতিতা হয় স্ত্রীলিঙ্গে
সেই একই নিমিত্তে মহামান্য পুংলিঙ্গের বালও ছেঁড়ে না
মহান সমাজ।
সমাজের দাঁতের ফাঁকে ফাঁকে লেগে থাকা জীবাণু
কিলবিল করে পুরুষ শুক্রানুতে
কত শক্তি-মহাশক্তি This is not poison
this is only power-হা-হা-হা
একটা চশমা পেয়েছি
বিবাহ-বিচ্ছেদের উপহার হিসেবে
যার মাধ্যমে-
পুরুষ চেহারার চামড়া ভেদ করে বুকের হরফ পড়া যায়
তাই সহসা চামচিকাগুলো
খুলে দেয় হৃদয়।
আহা, কী হৃদয়! কী প্রকাণ্ড জমিন!
পুরুষ বলে কথা—সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত;
গাছেরটাও তাঁর তলারটাও তাঁর।
ওফ্ মহামান্য পুরুষ।
ঘরও বজায় পরও বজায়
এ এক আজব লিলাখেলা
দেখাইলা মওলা।
কাণ্ডজ্ঞানহীন মূর্খ নারীরা—
বাতাস ছড়ায়, বাতাস লাগাই পতিতার অলঙ্কার।
কাণ্ডযুক্ত পুরুষশেয়ালগুলো পতিত নয়!
that is power. যদি কেউ গণিত জানে, সূত্র জানে
তবে বলবে সে প্রকাশ্যে—স্বীকার করবে সে
কেউ কেউ পতিত নয়—
মূলত সকল পুরুষ শেয়ালই পতিত।
এসো দেখি কে কত সাহসী…
কলমের আঁচড়
হৃদয়ে কলমের দাগ লেগে আছে তার
চোখের বুননে হারানো জল
স্কুল বালিকার কলমের আচড়
উড়ে গেছে যতবার
ততবার খুন হওয়া মাছের মতন
ছটফট করা বাদুর ফিরে গেছে জানালায়।
প্রেম কিছু নয়—
ভালোবাসা দীর্ঘ বিশ্বাস, দীর্ঘ-দীর্ঘশ্বাস
যা নিয়ে প্রতিটা বছর বৈশাখ আসে
আবার চলেও যায় না বলে।
একটি খাম ছেঁড়া কাগজও রূপান্তরিত
রাখিনি অবশিষ্ট, হাওয়া বদলের মতো
তাই বদলে যায় সবাই,
যে ভাবে বদলায় গোল্ডফিল্ড পাখির পালক
ঋতু বদলের সাথে সাথে।
সেভাবেই জন্ম নেই বুকে—অদ্ভুত সব ক্ষত।
জল
অপার বিস্ময়ে পড়ে আছে মেঘ
আকাশের কোলঘেঁষে জল ঘেঁষে;
ওড়ার বাসনা বুকে লালন করে কতদূর যাওয়া যায়!
আকুল করা ঠোঁট ব্যাকুল করা ললাটের বন
নির্জীব বসে থাকা ভূ-তল টানে অহর্নিশ
বুঝে আর না বুঝেই।
এভাবে উচ্ছ্বল জল নিয়ে বারবার পালক ফেলে
স্বপ্নের গন্তব্য ঝাপসা হয়ে আসে
টুপ করে পড়ে যাই, যাই গহীনে
স্বপ্ন-স্বপ্ন বড়ই জ্বালা ধরায় আসে বুদবুদ;
পুনরায় ঊর্ধ্বগতিতে উড়ে খুঁজি আকাশ
ও আকাশ—আছ কোথাও?
কৈ! ব্রহ্মাণ্ডের তৃষ্ণার জল খুঁজছে তোমায়
শূন্য-শূন্য-শূন্যতায়
ঢেউ ঢেউ খেলা করি—বুকে রাখো সুখে রাখো
সাদা করো কালো করো
অতপর ও নির্দয় হয়ে ছুড়ে ফেলো
আকাশ নেই আকাশ ছিল না শুধু ভ্রম।
ছিল বন ছিল মন ছিল প্রেম
চির আশ্রয় ভূ-তল
তুমি প্রেমজল
জ্বলি, পুড়ি দগ্ধবেশে বাষ্প হয়ে ফিরি
তুমি আমাতে আমি তোমাতে তবুও—
যাওয়া আর আসার প্রকাণ্ড যন্ত্রণায়
হাড়ে-হাড়ে বুঝাও জল নিরুপায় জল কৌতিক
ফিরবেই ফিরবেই ভূ-তলে তোমার।
দৃঢ়তা এতটা প্রকট—শুধু ছুড়ে ফেলো;
সাহারার হাহাকারও শঙ্কা দেয় না
মনের ভুলেও ভাবো না—
জল ছাড়া পতনের শব্দ থাকবে তোমার!
ওড়ার কৌশল
একটা বালুর ঘর অথবা কাগজের নৌকা
চারু ও কারু ক্লাসে শেখাতে পারি।
শিক্ষক সব শেখাতে পারেন
কিভাবে পাতার নিচে আঠা দিয়ে ফুল বানানো যায়
আর ছেঁড়া কাগজ দিয়ে স্বপ্নের মেঘ
আমি সাদামেঘের ভেতর উড়তে চেয়েছিলাম
কৌশলটা শেখাতে পারেননি আমার জীববিজ্ঞান শিক্ষক।
কিন্তু আমি উড়েছি, উড়ছি সাত স্তবক আসমান
মেঘেদের দেশ আমার খুব চেনা।
যে বৃষ্টি ঝরে অথবা ঝরবে ঝরবে করছে
তাদের ইতিহাস আছে আরও আছে প্রেম
তুমি উড়তে, বসবাস করতে
অথবা অঙ্গে মেখে মজা লুটতে পারবে
শীঘ্র যোগাযোগ করো—
এসো ফুলেদের হীম-সন্ধ্যায়
যেখানে থোকা থোকা প্রেম থাকে
ফুল আর প্রেম
প্রেম আর ফুল
শিখাবে কৌশল।
দীর্ঘশ্বাস
বাঁশপাতা ঝরে গেলে হেঁটে যায় দীর্ঘশ্বাস;
মেহগিনির বনে লুকনো কুমিরের হাড় দেখে
পুনরায় ফিরে যাওয়ার বাসনা লালন করে বুকে।
আহা প্রেম, পথভরা প্রেম; এতসব সুখ দেখে দুঃখগুলো
কুকড়ে কাঁদে, হাসে হাওয়াদের মিছিলে।
যে সরীসৃপের লেজ ধরে বয়ে যাওয়া কথা ছিল
তা একযুগ আগে অতিবাহিত হয়েছে
তাই থাক—কান্নার জল শিশিতে ভরে রাখো
জানো তো, বাজারে মরিচের খুব দাম
যারা ছোট্ট খুকিদের জন্য দুধ কিনতে পারে না তাদের
একটা বাচ্চা মেয়ের লাল ফ্রক কিনতে জলগুলো
কাজে লাগাও।
এখন এমব্রয়ডারি জামার ফোঁড়গুলো গুনে রাখি
অথচ গতকাল বাচ্চাটা বলেছে—
‘মামনি শাড়ি দেখছ কেন, তোমার কাছে টাকা আছে?
ভুলে যাই মায়ের সখের তোলা আশি থেকে একশতে ওঠে।
তবুও একটা লাল সাইকেল আর হারমোনিয়ামের
বাজারদর জানতে হবে জনে-জনে
তবেই সুর উঠবে তুলসিগঙ্গার জলে।