দার্শনিকের দ্বিধা আর হৃদয়ের প্রেম
মানুষের অল্পপ্রাণতা মানুষকে মলিন করেছে
আজকাল নদীর জলও ভুয়া জল,
মানুষের একাকী হৃদয়ে কত কিছু অজানা থাকে!
ব্যস্ত জীবনের রোজনামচায় সৌন্দর্য, রুচি ও আত্মপ্রত্যয়—
একসঙ্গে কদাচিৎ—ও কি দেখা মেলে?
দার্শনিকের দ্বিধা আর হৃদয়ের প্রেম
একসঙ্গে চলে না,
মানুষের ইতিহাসে কত কত প্রভাত আসে—
অন্ধকার তবুও দাঁত বের করে হাসে।
হৃদয়ে অমেয় বিপ্লব না হলো—
কোথায় তবে সুপ্রভাত?
অচেনা এক ড্রাগন
আলোর অভিযানে নেমেছে অন্ধকারের যাত্রী
অন্ধকার কিভাবে আলোর সাথে মিশে যায়—
সে রসায়ন আমি জানি না;
কেউ আবার বলে নারী—পুরুষের আদিম
আঁধারের ব্যাপারটা নাকি গহন—গহীন।
এই পৃথিবীতে প্রথম যেদিন ভোর এসেছিল
সেতো অনেক আগের গল্প—
সেই ভোরে নাকি শোনা গিয়েছিল
সাগরকণ্ঠী পাখির গান,
নারী নাকি পাতাল খুঁড়ে আলোর সিঁড়ি
বেয়ে ওপরে উঠেছিল।
বিশুদ্ধ হাওয়ায় হাওয়ায় একাকার সব,
নীল আকাশ আর ধুলো-মাটি সমান সুন্দর ছিল।
জলের কলরোলে মায়াবিনীর ছায়ার পরিভাষা আমি জানি না
ছায়ার মায়ায় নতুন সময়ের গল্প আমি শুনিনি,
নতুন সময়ে এখন যন্ত্রগিরি জ্বলে,
ভোরের শিশির এখন দুপুরের সূর্যে।
জলদেবীর যাত্রা নাকি সুধার মরুভূমিতে
মায়ামৃগ, মরুভূমি-মরীচিকা
আর সময়ের খাঁচায়
মানুষের স্বপ্ন-আশার কতো কিছু সাঁতরায়।
মানুষের কত কিছু যে বন্দি হয়ে আছে—
বসন্তের জ্যোৎস্নায় এখন উজ্জীবিত মৃত বেবিলন;
ক্লেদে—ক্লান্তিতে ক্ষুদ খাওয়ার মতো
অনু-পরমাণু খায় অচেনা এক ড্রাগন।
পাথরকুচির পাতায় জীবনানন্দ দাশ
গৃহপালিত মন নিয়ে শব্দের দীপ্র ফানুস উড়িয়ে
নতুন বছরে শব্দের ক্যান্ডেল লাইটের সামনে
কী করে দাঁড়াই আমি!
শব্দের অমরাবতীর প্রতি অবহেলা
আমার সবকিছু লণ্ডভণ্ড করে দেয়।
আমি নগণ্য এক
কাউকে আকাশ দেবো দূরের কথা:
নিজের আকাশই চিনি না আমি
তারায় তারায় আমি তোমাকে সাজাতে পারবো না
আমার শরীরে প্রেমের আলপনা আঁকা নেই।
পাথরকুচির পাতায় জীবনানন্দ দাশকে কবিতা লিখতে দেখেছি আমি
ভালোবাসার অনুভূতি অবশ হয়ে গেছে কবেই,
তোমার নরম আলিঙ্গনের কথা আজ আর মনে নেই
হয়তো কোনো একদিন ভালোবাসার কথা বলবো তোমাকেই।
প্রেমের মুখোশ
যানজট কিংবা জলজটের মতো বজ্র মেঘের জট হয় না
হলে ভালো হতো কী, মন্দ হতো রাধা মাধব তা বলতে পারতেন,
সুরের বরফ গলিয়ে পৃথিবীতে বৃষ্টি নামান মিয়া তানসেন।
ব্রহ্মপুত্রের ঢেউয়ে বাঁধা আমার প্রেম
তেপান্তরের কন্যা হয়ে ঘুরছে
বনতরুদের ছায়াতলে,
এই ভাবতে নিত্যদিন মানুষ
প্রেমের মুখোশ পড়ে ঘুরে বেড়ায়
জিদের বাঁশি বাজিয়ে সুর তোলে
আমি যোগাসনে বসে থাকি।
এই জীবনের সব কিছু বাকি
আর ফাঁকি
শূন্যের পর শূন্য লিখে জীবনের ছবি আঁকি।
কথা ফুরিয়ে গেলো
কথা ফুরিয়ে গেলো
শিশিরে ধোয়া তোমার কথাগুলো
শস্যময় হয় না কোনোদিন
যে পাখি ফেরার কথা
সে পাখি ফিরে না নীড়ে ।
আমি থাকি বেশুমার খিদের ভিড়ে ।
পৃথিবীর সবঋণ নিয়ে আসি ব্রহ্মপুত্রের তীরে ।
একটি ফুল ফুটেছিল
আমার জন্যে
সে ফুল ঝরে গেলো
গন্ধ নেয়ার আগেই।
কতো কিছুর পরও নদী অবিচল থাকে
জলের পরশে পরান জুড়ায়
আর সব ফুরায়:
সঙ্গে নিয়ে ঘুমের ভাষায় ।