দর্শনপরাগ
৩.
নিয়তি যারে খাবে সহজে হজম সে হবেই
ফুল ভাগাড়ে থাকলেও রূপ-ঘ্রাণ ছড়াবেই
৪.
ল্যাবে যন্ত্র বিকল হলে রোগীদের অবস্থাটা যেমন,
রেজিম হলে ভূতের বাড়ি, রাষ্ট্রের অবস্থাও তেমন
৫.
গন্তব্য সোজা হলে মন্তব্য পাতলা হয়ে যায়
২১৯.
ফাঁদে ধরা পড়েছে যে মাছ, সেই লোভী মাছ আমি
ফাঁদ পেতেছে যে শিকারি, সেই অভিনয়শিল্পী তুমি
২২০.
জীবনের
ফরমাল স্বপ্নগুলো
যেন
বিচ কার্নিভ্যালের
রঙিন ছাতা,
ফুটিয়ে রাখা হয়
থরে থরে
যেন
পতঙ্গশিকারি ফুল
২৩৪.
মানুষের ধর্মজালে ওঠে শিকার, আর ফুলেদের ধর্মজালে ঘ্রাণ
পৃথিবীতে শিকারি বাঁচে না, টিকে থাকে; সঙ্গী দুর্গন্ধ-অভিধান
২৩৮.
সুশাসন কীটনাশকের মতো, ফসলের বন্ধু, কীটের শত্রু
২৪৪.
মানুষ মূলত জলহস্তী, মাঝে মাঝে ডাঙায় এসে স্বরূপ দেখায়
২৮২.
খড়কুটা ভাসিয়ে দেওয়া যেতে পারে, কিন্তু ডুবিয়ে দেওয়া যায় না
২৮৪.
খুলে দাও প্রিয় বুকের পাতা, হয়ে যাক তা ভূর্জপত্র
ময়ূরপেখমে এঁকে যাব সেখানে শিহরণ, অর্ঘ্যশাস্ত্র
২৮৯.
বন যত ঘন হয়, ততই সংগঠিত মাটি
মানুষ যত বন হয়, ততই সমাচ্ছন্ন বৃষ্টি
হেজিমনিক কবিতা
উন্নতি
ন্যাটো—বোকো হারাম—ধর্মপার্টি—দখলবাজ—একনায়ক…
এসবই আমার নাম, এসবই আমি
আমার উন্নতি ক্রমশ উত্তল—নিউক্লিয়ার ডাব : খেলেই মেনোপজ…
টিকটিকির ডিম থেকে সাপের থলথলে গোলাপি ডিম, বেশ উন্নতি!
উন্নতি—চেরনোবিল—আমাজনের পেটে পারমাণবিক প্রেমিক…
এই উন্নতি তোমারই দান, এক রাতের আদরের ফসল নয়
এই উন্নতি অন্ধ অভিসারের, এক শতাব্দীর প্রেমের কাজ নয়
এক চুমুতে এত উত্তল হয় না কারও বুকের ধন—অবাধ্য স্তন
উত্তল আরও উত্তল হোক, হোক আরও লম্বা ধনেশের ঠোঁট—শ্যেন!
কেবল বারান্দার টবগুলোতে ঢিল দিয়ো না, ওতে বেলিরা হাসছে
শিগগিরই এর যথেষ্ট উন্নতি দেখবে, এত সুঘ্রাণ ছড়াবে, মনে হবে—
পৃথিবী একটি বর্তুল সুবাস-স্কুল—বহমান নদী…
ত্রয়ী
কাঁটাতার
রাজনীতি—কাঁচি : পৃথিবীর মহাবিগ ব্যাং…
সুখ
টবের ফুল—মডার্ন সুখ : আইসিইউতে বাঁচে, হাসে বাল্বের রোদে…
দালাল
কসবিব্যাপারী—থানার মালি—
উত্তর মেরুর হাজার বছরের বরফে ঢাকা
সমূহ শরম ও কিরণ—শীতের শীর্ণ সূর্য
ক্ল্যাসিক মানবী
পাখির হৃদয়
নিজেই এক পাইলট—জমকালো মেঘ, পশুর হৃদয়ও তা-ই
আইরন ডোমের
স্বয়ংক্রিয় মিসাইল যেভাবে খুন করে আগন্তুক মিসাইল—ন্যাটো…
তোমার হৃদয় কি তেমনই জাহাজের এক স্বয়ংক্রিয় ক্যাপটেন?
মানুষ এক উইজডম—ব্রহ্মা, যার অনন্য গৌরব চিন্তাবৈভব
তবে মানুষের হৃদয় তো ককপিট—ফসলি জমি : মহাবাগান…
সোনালি ভূমির দিকে, মহাসুরভির দিকে যেভাবে উজিয়ে আসে
গায়কের কণ্ঠে সংগীতের ঝিরি, সেভাবেই আসো হৃদয়-সৈকতে
খুলে যাক অন্ধ-বন্ধ দরোজা—রাতের দেয়াল—চাঁদের সরণি—
যে কিনা কেবলই ভেলকি দেখাতে জানে—বিচ্ছুরিত মরীচিকা…
তুমি তো পোষো মানুষের হৃদয়, চাঁদের তো নয়, নয় কোকিলের
ব্রহ্ম-সাধুর হৃদয় নয়, যাতে থাকবে না রংধনু, নদীর আবাহন,
ডাকাতের পরান, খুনির রক্তখেলা, শিশুর কাকলি, নবির শরাব….
এই মহাদুনিয়ায় তুমিই এক—
ক্ল্যাসিক মানবী—প্রেম-খুন—নার্স-ফার্স—ফুল-কংস—কৃষ্ণ-শিশ্ন—
যোনি-অশনি—বৈরাগী-সংসারী—মালাকার-ধর্ম-বিজ্ঞান-অজাচার…
ভালো তোমাকেই বাসি, ঘৃণা তোমাকেই করি, আরাধনাতেও তুমিই