হাত পা ও চোখ
হাত থাকে না হাতে।
কি আর ক্ষতি তাতে!
হাতের কাজে বরাত এলে
উঠতে পারি জাতে।
হাত থাকে না হাতে।
পা-ও থাকে না পায়ে
উলটে পড়ে কাতর আমি
চৈতী ঢেলার ঘায়ে।
পা’কে এখন শক্ত রাখা
ভীষণ রকম দায়-এ।
পা-ও থাকে না পায়ে।
চোখ কি আছে চোখে?
অনেক কথা এই বিষয়ে
বলছে নানান লোকে।
কার বা এমন সময় আছে
ওদের ভাষা রোখে।
চোখ থাকে না চোখে।
রেখে এলাম চোখের জলে
তোমার এখন মুক্ত আকাশ
আমরা দু’জন রেখে এলাম।
পোকামাকড় থেকে তুমি অনেক দূরে
আমরা দু’জন রেখে এলাম।
ইঁদুরগুলো যায়নি সাথে,
বিড়ালগুলো কাঁটা বাছার মহান
ব্রতে পিছু পিছু
যাবার জন্যে হাত পাতেনি
আমরা দু’জন রেখে এলাম।
অবারিত নীলের মাঝে
তোমার এমন আলোর খেলা!
আর কখনো তোমার পাশে
চেয়ারগুলো
কাউকে দিয়ে পূর্ণ হবার
সুযোগ তো নেই
মাকড়সাদের সুতোর জালে;
ওসব থেকে তুমি এখন অনেক দূরে,
আমরা দু’জন রেখে এলাম।
জাম জারুলের ঝোঁপে ঝোঁপে
বাঁশের ঝাড়ে, নদীর বাঁকে
তোমার এখন অনন্ত দিন,
তোমার এখন অনন্ত রাত!
তুমি এখন মুক্ত টিয়ে
অন্ধকারকে পিছে ফেলে
আমরা দু’জন রেখে এলাম।
তোমার সঙ্গে দেখা হবে, তোমার
শব্দে শব্দে মোড়া হরিতকির
বনের ভেতর। দেখা হবে মনের ভেতর।
শব্দে ছন্দে মালা গাঁথা
চারুকলার নরম ত্বকে
তোমার সঙ্গে দেখা হবে, কলাই খেতের
ভেতর দিয়ে যেতে যেতে, শালিক টিয়ের
দিনমোড়ানো মাঠের ভেতর।
আমরা দু’জন রেখে এলাম
চোখের জলে।
ন’ নম্বর রাত
নবম রাত্তিরে এমন সংহার
পৃথিবী কোনো দিন দেখতে চায় নাই
এবং পারে নাই দু’চোখে পরবার
করুণ ঠুলিখানি। তবুও আমি জানি
এসব ঘটনার আগে ও পিছে থাকে
নানান ফিকিরের ধান্দাবাজ সব—
তাদের জিকিরের মহান আয়োজনে
যিশুকে এইভাবে প্রাণও দিতে হলো।
এবং তারা সব ষোলটা কলা বুনে
আঙুলে গুণে গুণে
শুদ্ধ সমাবেশে জীবনটাকেও তো
সহসা পার করে উর্ধ্ব বেগে সুতো
অভয়ে কেটে গেলো।
তাইতো দিনক্ষণ সময় মেপে মেপে
আমরা থেকে যাই ভয়ের আস্তিনে।