কৌতূহল
কখনো স্বপ্ন দেখোনি, জেগে অথবা ঘুমে!
রৌদ্রের ঘ্রাণে সকালের পাখি যখন গান গায়
তখন ঘুম ভেঙে—বুকের ওপর কারও গরম শ্বাস
অথবা বাস্তবতায় তলিয়ে যাবার ভয়ে আঁকড়ে ধরা
কোনো নিশ্চিন্ত হাত, যে তোমাকে অবলম্বন
ভেবে হেঁটে যেতে পারে মহাশূন্যে!
মূলত পৌরুষত্বের অলংকার নির্ভরতা দানে
কখনো স্বপ্ন দেখোনি—
যখন, জীবনানন্দের মতো সকল আয়োজন ফুরায়
সমস্ত পৃথিবীর রঙিন কারুকাজ আঁধারে যেতে চায়
জেগে ওঠা প্রলয় যখন তীর খোঁজে
সমাপ্তির একান্ত সান্নিধ্যে কারো নিগূঢ় যাত্রায়!
প্রত্যাশা
নীল প্রজাপতির নীলাভ বিচরণে ঠোঁট খুলেছো
আর—নীরবে কণ্ঠের মধু ডানায় মেখেছি
যতবার ছুঁয়েছি কণ্ঠ ততবারই নতুন পুলক
ছুটে ছুটে রঙ খুঁজি—নমনীয় মনে দাগ পড়ে
মেঘ আর রৌদ্র মিলেই রামধনু; জেনেও হোঁচট খাই
মিলল কই! ডানাজোড়া এখনো অপূর্ণ
কানের দুলে রূপ বাড়িয়ে কী লাভ—
মস্তিষ্কের গোবরসার যদি রঙ না ফলায়!
নিভৃতে পাঠিয়ে দাও—উন্মুক্ত করো অভিজ্ঞান
যুগ-যুগ ধরে কুড়ানো রঙে আমার ডানা রাঙিয়ে দাও।
শঙ্খচিল
একটা কায়া মন বেয়ে শরীরময় দৌড়ে বেড়াচ্ছে
কায়াটি ক্রমশ মায়ার পরশে
মন পিঞ্জিরায় ঘণ্টা বেজেই চলেছে
একদা খেজুরগাছে চড়বার কৌশল অজানা ছিল
এখন—
শীতের সকালে রসের চিন্তা জিভে জল আনে
খেজুরবিদ্যার পাঠ চুকিয়ে অনবরত
রপ্ত করি আকাশে ওড়ার আদি-অন্ত
পড়ন্ত বেলায়—
বন্ধুর দৃষ্টিতে আকাশ উড়ছিল
আকাশে ওড়ার কৌশলী বর্ণমালা
রপ্ত করা কঠিন নয়, কঠিনতর।
আকাশে উড়ালে—
অনন্ত অন্তরে শুভ্র মেঘের নাচন
বৃষ্টিতে মাখামাখি হবে,
বিশাল সমুদ্র একদৃষ্টে দৃষ্টি জুড়াবে…
ওগো মায়া—
ক্রমশ শঙ্খচিলের ডানার ঘ্রাণ পাচ্ছি
ডানা জোড়া মোহমায়ায় আচ্ছন্ন
দৃষ্টি অবয়বের ভিতর গুলিয়ে গেল
চোখ, নাক, ঠোঁট তলিয়ে যাচ্ছে
শঙ্খচিলের রঙে রঙ মিলিয়ে
ছায়া ডুবিয়ে দিচ্ছে, অন্যরূপে
ডুবি—ডুবি ডুবসাঁতারে…
বেঁচে ওঠার সুখ
প্রতিবার প্রিয় ধর্মগ্রন্থটি বন্ধ করে মেতে উঠি
প্রাচীন বিবিধ খেলায়
আশ্চর্য দ্যুতিময় যাদু ভর করে শরীরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে
অবয়বে অবিশ্বাস্য আলোকচ্ছটা বিকিরণ ঘটায়
ঘন হয়ে আসা নিঃশ্বাসের আগুনে ঘেমে যায় বস্ত্র শূন্যঘর
জলে তলিয়ে বেঁচে ওঠার সুখ ভুলিয়ে দেয় জীবনের অলিগলি
আস্বাদন হয় সকল আস্বাদের প্রিয় স্বাদ
জিহ্বা পার হয়ে ঠোঁটের কোণে গড়িয়ে পড়ে সকল অমিয়
আর—
কখনোই পুরনো হয় না এই আদিখেলা
পুরোপুরি শিখে ওঠার পর—
প্রতিবারই নতুন অলিম্পিকের উত্তেজনায়
উড়ে আসে নতুনত্ব
হারিয়ে যায় একেকটি অপঠিত ধর্মগ্রন্থ
চন্দ্রের সওদা
সওদাগরকে দেখে রৌদ্রের খরতাপ ভীত পায়ে
নদীর ওপার পাড়ি জমায়; বাতাসের হিল্লোলে
পুষ্প পল্লবের ঘ্রাণ হাজির হয় নীল ওড়নায়।
মুদ্রার প্রলেপে নয়; তীর থেকে সহসা বালিকা
অবগাহনের ছোঁয়া দিলো মুখরিত যমুনায়;
বাঁচবার ইচ্ছায়; হয়তোবা জীবন বাসনায়!
মেঘ জানে—আকাশের সঙ্গ মেলে বিষণ্নতায়।
চাহনি করুণাভরা; বন্ধুত্ব যেন অমিয়বাণী
জ্যোৎস্না ঝরায় জ্ঞান আর মাদল বাজায় সুর
যাক তবে অভিলাষী মন—একবার চন্দ্রের সওদায়।