জুতার কিরণ
কবির হৃদয়—নদীর খেরোখাতা—অনিলবৃত্ত…
ভাঁজ খুলে হারিয়ে ফেলি আবেশি ফুলের ছাল…
জিবমাখা মহিষের কাছে কন্ডমের শির—ফণা…
নদীর হৃদয়—খানকির আবাস—আবমজলিশ…
ফসলের ঘড়িতে আকাশ, পাতাল, বৃক্ষ, পাখি…
যেখানে নেই যিশু, মুসা, বুদ্ধ, নবী,রক্তাভিধান…
ভানভরা কূট-আমলা—ইঁদুরদাঁত—রাষ্ট্রখোর…
হনুমানপাল থেকে যে ফেরারি নামায় মৃত ভগ্নাঙ্কুর…
তার হৃদয়ে দেখি বনশৈশব, মীনের হুর, তিতুমীর…
যত মাংসের পুতুল—ভেড়ার র্যাপার—জুতামানব…
সাগরের নভোতলে বিনোদনে স্ফুট কৌস্তুভরশ্মি…
বিস্ময়কারুর মুখ—প্রাণীর আয়ুশালা—ঈশ্বরদাবা…
গিরিনদে তওয়াফ-মাসেহ—নলকূপচাপা জামপ্রিয়া…
ফুলের সৌরভে তায়াম্মুমে নত ভেজা বালির তীরে—
মীনের খলবল ছেড়ে সমস্ত প্রার্থনা শেষে সাপঘুম…
হরিণশিং—মাইনাস-পেন্টি—সদর দরজার গার্ড…
ভ্রমর দূরদেশে, টবের ফুলে ফোটে আস্ত গ্রীষ্ম…
জমি-চাষায় থাকে না সাঁকো, থাকে শুধু বিরহ…
নদীর মিজান মাছ, মাছের মিজান নদী—বহুগামী…
গানের পাপড়ি থেকে ঝরে বসন্ত অস্তের লাহান—
গুহায় জমে মোমডুমুর, ঘুমপাড়ে ঘোড়ার মীন…
চোখের দূরত্বে পাখির চোখ—দূরের টুপিশিস…
জানুয়ারি যদি অনাহূত তেঁতুলের রসে সয়লাব,
কুকুরের লালায় জন্মায় বৈষম্যকীট—জলাতঙ্ক…
বিয়ের মওশুম—সুন্দর ডাহুকে জন্ডিস-প্রসূতি…
বুকের মাঝে টিলার লাহান ফোটে অমার ক্ষত
ছায়ার দিকে লোভ দিয়ে তাকায় লাউমতো রশি…
বন—যৌথ পরিবার; পারাবার—মাছ‑বেশ্যা…
হিটলার, মুসোলিনি, চেঙ্গিস, ব্লাডি মেরির বাণ—
নরম মাংসের ওপর ছড়ানো আগন্তুক কলেরা…
দাঁতের লাল বৃষ্টি—লাখো খিস্তির ডিগ্রি তাপ…
তিলের লাহান ফুটছে কাবা পাড়ে, যেন চুম্বক—
ঘূর্ণিঝড়ের লাহান ঘুরছে মাছ, ঘোড়া-চক্ষুমণি…
গানমাঝি—মণিহারে খেলোয়াড়ই রেফারি…
আদমশুমারির ফলদ বাগানে আত্মত্যাগী বৃক্ষে
ঘোড়ার দৌড়, মহিষের দৌড়, সারসের দৌড়…
ক্ষীয়মান আপেল—হেলানো পিরামিড, ক্লান্ত…
নদীর হাফেজ মাছ, বোঁটার হাফেজ—ঠোঁট…
প্রেমিকার চোখ ও মুখের হাফেজ কুচের কলব…
পরিবারের কর্তা—দুধের গাই—ডেহার ঈশ্বর…
সিরকায় ভিজিয়ে রাখি বলাকার কুঁড়ি ও চোষক
বালির তীরে হেরেম খুলে ফুটে ওঠে কুঞ্জ…
জ্বলজ্বলে নারীরা চাঁদের লাহান রাক্ষস—চিম্বুক…
জেব্রাছায়া কুমিরের হলুদ চোখে রটিয়ে তোলে
বিড়ালের মিউ মিউজুড়ে বাঘের হালুম ও দাঁত…
সাগরের পাতাল—জেনানামহল—তারাহৃদয়..
না‑বৃশ্চিক কতবেলে যদি নামি কুমকুম মুখে
খুচরা কিছু বক উড়িয়ে দিয়ো হাওয়াড়ালে…
সভাকবি—মিশিওয়ালা—দাঁতরেন্দা প্রলেপার…
হুঁকার নলের লাহান উঁচু ঢিবির অপর হাতছানি
সাপের লাহান দেহ থেকে ছড়ায় আজান-খুশবু…
কর্মী মৌমাছি—সাংসদ-জমকালো খুর—যিশু…
শঙ্খে ঘষা শরীর প্যাঁচিয়ে নদী সাঁতরায় হৃদয়ে
আবলুশ-কাঠের পুতুলও সারসডানায় ওড়ে…
দুঃখ—চোকারগাছের গুটি—কিম্ভূতকিমাকার…
বেহুদা চেহারায় ফল ও ফুলের প্রলোভ, ক্যামেরার
সায় কি সহজ! পাখির চোখে পোশাকই আসল…
ফাঁকা গদিনশিন—মসিবতভৈরব—ঘাস-মাড়ানি…
গাঁইয়া-নগর, জল তুলেই লাথি মারো মাটির ওপর!
হে হিপোক্রিট, গ্রামীণার মুখেই ছুড়ো গাঁইয়াগালি!
মহব্বতদরিয়া—সুশির—ওঝা—বেজি—প্রেমী…
গহনাবাক্সের ধুলার আস্তরণ কোন হৃদয়ের বেশ?
পাঙ্খা গায় না গান, মরীচিকা-যে করে আয়োজন!
ফ্যাসিবাদী আপেল—সমান্তরালে হাঁটা বাস্টার্ড…
বিধবা রাখাল ঘাসের সাথে কথা কয় তার চোখে
ধানকাটা ন্যাড়া নিদালি প্রান্তর, রাফবেলার গোধূলি..
মা—ছিন্ন নাড়ির সাইকালগার—লতাদেহের নার্স…
গন্ধকের ভাপে শুকানো পৌষাল বান্ধবীর মুখ-শিষ
চোখের কামরাঙায় আতর ছড়ানো সংগীতমিতালি…
কালো মেয়ের দাঁতে ফুরফুরে রাজহাঁস—চাকুকিরণ…
উঠাননিকানো যুবকে ন্যাড়া গাছের সুনসান আলাপ
আপাদের চোখে একাকী তালগাছের সান্দ্র বিকাল…
গাছের আত্মহত্যাপ্রবণ…বরইজুড়ে পৃথুল জজবা…
মাল্টা বাগানের রঙে কলকল খানকির বেশরম ভঙ্গি
পুরুষব্যায়ামে মায়ের আদরে ঘুঘুর উষ্ণ বিরহমাঝি…
ঘোড়ার গ্রীষ্মদ্বৈরথ—মাঝারি দুপুর—ঘামপাথার…
বাগানের শেষ ফুলটি ঝরার পর থির অলির নিদালি,
ভ্রমর তুলে রাখে প্রতিহিংসা হৃদয়ের দূরের শিকায়…
সম্পর্ক-গিঁট—ইগোর সতিন—লাল বাছুরশালা…
সবুজ টিলার দূরে তালগাছের নিসঙ্গ ভানফোয়ারা…
জন্ডিস রঙের হৃদয়ের চোখে নিধুয়া টেমেটো-লাল…
ভানেভরা ঘোড়াখুর—গুটিবসন্ত—উই‑সহোদর…
মাঝির হল্লায় ঝিমোয় নৌকার শরীর ও বাগান…
জিপসি মেয়েদের চোখের লাহান কারো হৃদয়…
পাখিডানা—জিওল মাছ—নৌকা-লগি—ওঝা…
পুরুষের সিনায় তাকানো আত্মহারা মেয়েচোখে
ফসফরাসের রঙ ও বাইজিনাচের বেহুদা বসন্ত…
হৃদয়ের ফুলঝরি—সারসের লাহান কাফেলা…
পাড়াগাভির সালোয়ার—ফুলের কুটিল সুরভি…
ডুবে গায় ফুলের পাপড়ি জম্পেশ মাগির মঠ…
চোখ—প্রেম-মাখরাজ, মাইনাস—যোগ-সই…
ছইতোলা নৌকার দুলুনির সুরে মাঝরাত ওড়ে,
ঠোঁটের তেমন মঞ্জরিজুড়ে রটে বাগানের গড়…
রায়তের মুখ—উইপোকার ঢিবি—জোঁক-রথ…
যে মেয়েটির কোমরজুড়ে উজিয়ে ওঠে সারস,
কবুতরের ডিগবাজি, তারই গ্রীবায় আঁকি ময়ূর…
কাফনের মুখ—নদীসরলরেখা—ভাঙা ব্রিজ…
মেহেদির লাহান মুখোশে টেমেটোর লাল
পিতাহারা মাছ, গানের নিচে ঝিনুকবিরহ…
নক্ষত্রবই—কারো শপ্ত আত্মা—মরণত্যক্ত…
হৃদয়ের মিনারে বসা কাছিমের মাথার লাহান
গ্রীবা বাঁকিয়ে জিরাফ দেখে ভরা বসন্তকুঁড়ি…
ঘড়ি হারালে শিরের চোখ—কর্পোরেট হৃদয়…
পাতার মোজেজা বোঝে কাণ্ড, জেন্ডার‑মিজান…
খোঁপার তমসায়ও পিলপিল মধুমাস, সৌরভ…
আমাদের হৃদয়—ছাপাখানা, পিঁপুলকষ—নদী…
আখমাড়াহৃদয়ে ফুটাই দীপশিখারূহ—আদিম…
নত আলো ও ছায়ার রোয়া, ঝলমলে পারাবার…
নিঝুম গার্ড—ছুটন্ত ঘোড়া—এক তবলচি…
ষাঁড়কুঁজের প্রতি ফসলের স্তুতি, নত বীজশির;
পারদের শিষজুড়ে নামে দূরের পিয়াসাকুণ্ডলী…
রাতের ঝিলিকশুঁড় নামিয়ে আনে বিশ্রুত ট্রেন…
নাবিকের ঠোঁটঘষা মসলার ঘ্রাণে স্ত্রীহিংসা,
হিস্ট্রির ধাতব হরফে পরকীয়ার পৌর-মৌবন…
হ্রদ্দিওয়ানা—শুকনো মূল—আবাবিল পাখি…
পেঙ্গুইন-রঙের রাতে বীণ অহেতু মহিমাপিল…
মাতৃস্নেহ—সেজদাঢঙে নামা কৌমার্য শিশির…
শিষবেতের জালে ঝুলন্ত ঘুষ—নদীর চৌরাস্তা…
হিলসামারির তীরে গোঁসাইয়ের কবর—সৌর…
নরোম জেলাসিহ্রদ, শিশ্নভরা ক্যারিশমার গান…
পিঁপড়াকামড়—ফাঁস-রশি, বিধবা—ভাঙা ব্রিজ…
মৃত সাপের লাহান লতানো পথে কুস্তির আখড়া…
পাখির চোখ থেকে তালিম নিই দুধগাই-কবি…
কামারের হাতুড়ি—বয়রা তুফান—ধনুষ্টঙ্কার…
অকালসন্ধ্যা নামে, পৃথুল পিপাসায় তাকায় কেউ
বাবার কফিনে, হৃদয়ে গেরুয়া রঙ, খোঁচা—বাণ…
সারসছিপি—আকাশের খিরকা—মানচিত্রজাল…
বাগিচার লাহান কোথাও কোনো মেয়ে দুলছে
দূর-পুরুষের হৃদয়ে ঝুলন্ত আতাফলের ঢঙে…
রাষ্ট্রের স্তন—ঝুলন্ত ডাব—শিরারোহীর মিত্র…
মমিনের নামাজে নত শির—অসুখে মার হাত…
ঈশ্বরের দৃষ্টি মমিনে, সন্তানের দৃষ্টি মায়ের মুখে…
জিনব্যাপন—স্টিমারস্নান—চির ছুটন্ত মাতৃপা…
বাদামতোলা নৌকা ও মাঝিহীন নদীর মাস্তুল—
কফিনপ্রাপ্ত পুত্রের শোকের বুধ—ঝরাপাতাচুপ…
দূরের নির্জন দ্বীপ—কোনো পিতার গম্ভীর মুখ…
বরাতফেরা পথে ডলফিনের বুক—খাবি-দ্বীপ…
বেশ্যার রহমে তাকায় অরণ্যের চোখের মণি…
হৃদয়ের অপারেশন থিয়েটার—বুদ্ধের আখড়া…
মাল্লার বইঠায় এগিয়ে যায় জেব্রার পা ও সংগীত…
পিতলের রঙে ঘুষরোগে আচ্ছন্ন পৃথুল হংসচুমু…
এই সুগোল আকাশ—এক অনন্ত বেপর্দা যৌবনা…
বানোয়াট খদ্দরে ধরা পড়ে যেদিন প্রেমের মুকুল…
জঙ্গল পোড়ানোর ধোঁয়ায় ঢাকে ঊরু, উদ্যানফল…
ঘাস-বিকাশের নদী—কূজনে ফোটা পাখিনিম…
এনভেলাপভরা সম্পর্ক থেকে কখনো উড়ে যায়
ফিনকি দিয়ে হাজির মৃণালনির্যাস, ধবধবে রাত…
ইমারতের টোপ ইশতিয়ার—সৌধপেষা ফুল…
দরজার ভেতরের আকাশ না করে পাঠ, শুনি,
কী করে করবে কুচিকুচি বাইরের আকাশ?
মাংসাশীর দাঁত ও মাছ—ধনুকফুল—বইঠা…
লাঙলে পাখির দুই চোখ—আদর্শ সহপাঠী…
নদী ও আঁধারের ভঙ্গিমা মুখস্থ করি দিনমান…
রুকুর লাহান নুয়ে পড়ি মানবমুখ—শ্রীগণ্ডুষ…
মাঝে মাঝে ঘুষের লাহান মুখশ্রী চুইয়ে ঝরে
পিতলের আলো—ভাঙা চাঁদ—অমাসুন্দরী…
এই ভূমি—তরঙ্গকূল, ডিম—সরকারি নটী…
রোজ বাবার মেগাস্টার হৃদয়ে ফুরায় সূর্য…
ফসলের অন্তরে কিরণ ও বৃষ্টির লাহান!
মায়ের বিজোড় হৃদয়—সাদা-কালো মুভি…
শুষে লাথি-ফি মাটির বুক—ব্লটিং পেপার…
ভূমি—রহম্ময় সবুজ ডিম—প্রাণের আত্মা…
গরুর পরগনা—ঘোড়া-সওয়ারির মানচিত্র…
ঘড়ির বনেদিয়ানায় ডুবলে মাংসের চৌবাচ্চা
জাগে মানুষ‑মানুষ সমযোজী বন্ধনের সৌরভ…
দিনশেষের স্ত্রী—বসন্তপথ—কৌস্তুভহোটেল…
পুরনো গন্ধভরা হৃদয়ের গলিতে নেমে দেখি—
মানুষ-কারবার, আকর্ষীর ষড়্রিপুর অন্ধপ্যাঁচা!
মার্জিনে ফোটা প্রেম—বিবাহিত—পাঠ্যসূচি…
মানুষের মুখের কারুকার্য, নারীর দেহের শৈলী…
ফুল, পাখি, মাছ, গাছের চেয়ে বেশিই আকর্ষী…
মাকড়সা-জালের শরিক—বাঁটোয়ারায় সমান…
হলুদ ইশারায় ফুটে উঠে শেষ কিস্তির পরিচয়
তবুও রক্তবাদী ‘শিকড়বন্ধন’ রেওয়াজে মশগুল…
লোভমতো ঝুলন্ত শিরের ফল—ভানসাঁড়াশি…
পচা হৃদয়ের গন্ধ হাগুর চেয়েও কটু, ফুল জানে…
পাখি জানে, আপাপাড়ার গুঞ্জন—ফুলের সতিন…
খেতে বেগানা বাছুর—মাল্টিন্যাশনাল ড্রাগনেট…
কোথাও হেঁটে যায় মাটির বোন দুই অন্ধ চোখে…
হৃদয়ে ঝুলছে তার জ্যামিতির লাহান অরণ্যবেণী…
বইপোকা—ঘুলঘুলি—হাওয়ার মউমউ ঘড়ি…
লালদিঘির কুমকুম হ্রদে পাক খায় মাছরাঙা-চিল…
কেন্দ্রে নামার চিঠিতে কারো হৃদয়ের সমস্ত মিড়…
আপার ক্লাস—ঝুলন্ত ব্যালকনি—শিকারধনুক…
ধান ঘাঁটে, কোমর নাচায় পাড়ার ভাবি উঠানে…
দূরচোখে কারও হৃদয় ঠিক কলকল করে ঘামে!
জ্যামিতিক হৃদয়—আকাশ—মাকড়সার জাল…
যত গভীরে গান তত গভীরেও কার্তুজ ও শির!
রপ্ত মেয়ের রাত আনে বসন্তবানের মহামঞ্জিমা…
পদাবলি—নদীর মতিগতি—কুঁড়ি-সান্দ্রবয়ান…
বড় আপার কাঁখে পিতলের কলস, নির্মীয়মাণ
রেডিও তরঙ্গ, বড় ভাইদের দূরচোখে হাঁস…
দখলদার—স্বর্ণলতা—কৃমি…সমান্তরাল রেখা…
বাগানের বৈভবে পিতলের রঙ, দূরে সুমেরু…
ডলফিনের চেহারায় পাখির নমুনা, কলকাকলি…
রি রি প্রেম—সম্পর্কের বায়না—নদী-আজান…
জালিম-মিথুনে ঢালে কারো ঘুঘু পুরাভিশাপ…
এই ঘাস—প্রাণীর জুতা—সমুদ্রের লাহান…
কিছু হৃদয়—লবণ, কিছু বিবাহ—সেলাইকল…
যুবতীর নির্মীয়মাণ পাড়ায় ওড়ে ভ্রমরগুঞ্জরণ,
সালিসে হাঁসের রিউমার ছলকে পড়ে দূরে…
ইলিশের স্নান বেজে যায় ঘণ্টায়, পাতায়…
কলতলা ফেটে গেলে ছিঁড়ে যায় বিবাহ—
তালেবে ইলমের সমাজে হিজলে ঘনত্বে…
গুহায় ভেরি—মুসোলিনি—ঘা-কাফাই…
আকাশের নিলামে বেচে দিই সমূহ হৃদয়
যেখানে উজিয়ে উঠে গানের দুর্লভ হাওয়া…
এই হাওয়া—আপ্রাচীন কণ্ঠের মিউজিয়াম…
ময়ূরের কুঁড়ি তুলা‑ঢঙের, সাদা মিনার…
পর্ণাহারী ফসলে ঘড়িখোর—রইরই চাকু…
ময়ূর-আঙিনা—জোড়া জোড়া আকাশফুল…
মানচিত্রের মাঝি এক দক্ষ অভিনেতার শির…
তামাম রেখা মুছলে ভাসে কাফনের ক্ষীর…
রাত ঘষলেই ফোটে—আমি, খোলা গান…
গাণিতিক মাপের বিবি গানের আড়ালে…
হিজলের ঘনত্বে বৃষ্টির ফোঁটা ছলকে পড়ে!
বাগান ও মালি—ঠিকরানো মাতৃভ‚গোল…
জিওল মাছের দরবারে পিতলের প্রলেপ—
সিঁদুর রঙের সন্ধ্যায় নিঝুম হৃদয়ের জজবা…
রাষ্ট্র—মাগি—ফুল—মাছ—নদী সমান্তরাল…
প্রেমিকার জংধরা দফতরে হিজিবিজি আকাশ…
লাল দাগে লেখা ‘জটিল ইগোর সরল রোদ…’
নৌকার আকারে নামার উদরে সন্ধ্যা ও হ্রদশ্রী…
বাসরশয্যার লাহান মেকি বাগানের পারাবত—
পুঁজির বেশ্যা…! রুগ্ণ পাখি—ভাষানিঃসঙ্গ মল্লি…
সার্বভৌম আয়ুর পিলার—পিঁপড়ার কাফেলা…
গাড়োয়ানের আসর ঘুমালে পাখির কণ্ঠ নেভে,
যেখানে পারদের ওঠানামা ঝিমায় বাছুরহীন…
পাভাঙা হাতি—গো-ডিম—খাবি খাওয়া ফুল…
কাফাইয়ের ঘুঘুর সব ব্যালকনি নীরব, থির হ্রদ…
নিভে আর জ্বলে সে হৃদয়—হাসপাতাল-গন্ধক…
নিলীয়মান চাঁদে তাকিয়ে কোথাও নিভছে বাঁশি…
তামাম নির্মেদ শিরার নিচে মমের ঢিবি—তারা…
যেখানে বৃষ্টিমঞ্জরি ও গুনগুন গানের মায়াবীথিকা…
নোনা ঝরনা—বীজের ইজা—সূর্যমুখীর বংশসূরি…
ঈদগাহ ডুবে গেলে মজলিস ফেটে একা তালগাছ,
হিজাবের নমুনায় কোথাও নামে ফ্যাসিস্ট গম্বুজ…
রসগাছ—নদীর উপকণ্ঠে জামবাগ, মাছের কুটুম…
পানপাতার দিকে দাঁত ও রাতের ত্রিশূল—ব্যাধ…
রাষ্ট্র ও ঘাসের চোখ বিপ্রতীপ যেন পলি ও নদী…
নৌকার গলুই—জায়নামাজের কুসুমিতা—ময়ূর…
দানবের আত্মা পেকে গেলে নামে এঁদো মহামারি…
গান খেয়ে যায় চঞ্চু—ব্লেড—কাফন-রঙের বাণ…
ফসলের আরশে ঝরে তুমুল তর্কবিজ্ঞান—রক্তিম…
মেয়েদের আয়াত পাঠে কে বুঝেছে আত্মার রঙ?
নৌকার প্রিয় মাল্লার সিজদা—জলে নামা ঢঙ…
মাটি-ঘাস-প্রেম হৃদয়ে নামায় কখনো গলনাঙ্ক…!
রাত নামার ভঙ্গিমায় নেমে আসো সাদা ডানায়;
টুপিশির ও বজরা খুলে দিক সমস্ত বাগানলজ্জা!
প্রেমে নত ভৈরব—ময়নার কণ্ঠ—সুদূর কাকলি…
পানের পথে তামাকি অজস্র অভ্যাস ও বলয়,
পলায়নমান ফুলের অহমে খরিদে আজানি কুয়া…
কোথাও বাজে এসরাজে নীল বাগান—মাতৃসদন…
সিনার উঠানে কালো চাঁদ—সাগরে ফোটা দ্বীপ…
কিনে নিতে চাই হৃদয়সম কবিতার বিনিময়!
ভাবিদের ঝুলবাগ—মাচানের কুমড়া—ঋষি-ঋষভ…
স্ফুটমান কুঁড়ির হাওয়া লেগে যায় বেগানা মাল্লায়,
বেজে চলে থিয়েটার ও বায়োস্কোপের সৌরভ…
এই পিস্টন—আইড়ি—প্রাচীনে ধাবমান অতিথি…
ধেইধেই ভাষায় বিপুল দুগ্ধের পারাবার-কাকলি…
ঘড়ির প্রাইমারি হ্রদে তরঙ্গের পাশে কাব্যমঞ্জরি…
অরণ্যে জ্বলে হৃদয়—নিঝুম নিশুতির হেডলাইট…
পাখির নীড়হীন পাতায় জমে গ্রীষ্মদ্বীপের বিচ্ছেদ…
জমিন কাঁদানো নাগলোক—লোভের অঙ্কুরোদ্গম…
কবি সরীসৃপ—হৃদয়ে ভর দিয়ে হাঁটা নির্বিষ সাপ…
দিগন্তে ছড়ানো আমাদের সংসার ও লীলার নাও,
ফসলের খেতে ভাত পোড়ার তুমুল গন্ধ ও শিস…!
ক্লোরোফিলে না-মঞ্জিমা—দাদার জুতার কিরণ…
দুধের সরের মুখ নিয়ে উড়ুক্কু অভিধান—বসন্ত…
তারও গহনে দেখি, গ্রীষ্ম নেমে পড়ে পারদহ্রদে!
সরোদে নামা বৃষ্টির কুচকাওয়াজ—যুক্তদরগার মৃগ…
ছায়া ডাগর হলে ভেঙে যায় সুষুপ্ত পারদের ঘুম…
তখন অরণ্যে ঘাম নামে, জারণে ভাঙে ছাদলিপি!
ঘোড়ার খুর—ডিঙার বইঠা—শিরদের ক্রাচ…
যত পাকে ফলের শরীর তত ঝোঁকে দ্বিধাকরণ,
রটে বিচ্যুত সংসার, জল-জঙ্গলের গোঙানি…
ফসলি জমির দফতর—তামাম বীজের স্বরাড়ত…
মানুষের হৃদয় ফেটে গেলে ছড়িয়ে পড়ে বাজার—
সারস-মাগি‑কুত্তা‑দাঁত‑কুমির‑পীরের তাবৎ রঙ..
আস্তাবলে জাবর কেটে কেটে শুকায় নদী—ফুল…
ছুঁইছুঁই মুখ সমস্ত নাইফে গীত সানসিল্ক রিলেশনে—
সরলরেখার আলো মৃত দেহের নিথর অর্থ—বন্ধ্যা…
পৃথিবীতে এই ধর্ম, বিজ্ঞান—মূলত একখান ঢেঁকি…
দুপুর‑দুপুর সময়ে লম্বা সন্ধ্যা নামে, বাঁকে নাশপাতি…
বিষ মেখে পথ চলে সারি সারি বরুণের ফাঁকে বন্ধু!
চকচকে শির ও বাহুবল—মসলাবনে কূটগন্ধখোর…
দেমাগের ছাদ ভাঙলে দেখি ফকফকে তারার বাগান…
জীর্ণ যদি জেব্রার ছাতা ও মাকড়সা, আয়ুতে কুঠার!
রাতে চিলচিল করে জমরুদের আশরীর—ঋষিফুল…
দীয়মান ইতিহাসের ব্ল্যাকমুন ও জঙ্গলি রক্তে ঢাকে
ফসলের স্কুল ও নার্সের অ্যাপ্রোন—কুমকুম হৃৎশ্রী…!
চির আমূক গন্তব্য—স্ফুটমান, কুঁচকানো আকাশ…
রাতের লাহান নীরবে ঝরে কোথাও কারও ডানাবাগ…
মাবুদ জানে, মালি ভুলে না বাগানের কুঁড়ি, ঘ্রাণ…
পুরুষতীর্থ—মাচানে বসা পাখির দুচোখ—কৃষিক…
ঝবঝব বৃষ্টির লাহান যেমনি আসে জ্বর কারও গায়ে
তেমনি এসো শাদা ফ্রকের আজান আমার বসন্তে…
প্রকৃতির গালিচা—বিড়ালচোখের লাহান দীপ্ত স্কুল…
পানের আস্তানায় ঢেউ ও নৃত্যে বেশুমার সরোবর…
পৃথুল সৃজন বেদনায় নীল আমৃত্যু ঋষির ঝরনা!
শেওলাধরা ঘড়ি—নিথর আগ্নেয়গিরি—বেসুরো…
বেগুনি দ্রাক্ষার জাজিমে কাঁপে সমস্ত দ্রব ও পাখি…
সুচয়নীর করচ নাড়িয়ে নাড়িয়ে তখন হৃদয় ঘুমায়—
কুসুমের পাথারে দূরপনেয় দাগ—ভাঙা বাঁশির বৃষ্টি…
জানালার নওরোজে আসে পাড়াতো জামের আঁচল,
গাইনিগন্ধে খিলখিল করে লাল-কাতর দুরবিনঢেউ…
তাতানো রাত—ফোড়া—গান ও সুরভির করিডর…
ডেওয়া ফলের নিকট নাকউঁচু বড়লাট সুরভি ছড়ায়
বিস্মৃতির গরাদে সমীহ নামা অর্জুনের ছাল, সেঁজুতি…
ইঁদুরের দাঁতে ঝাঁঝরা রাষ্ট্র—দাদির কুঁচকানো স্তন…
পড়ুয়া দাঁত খেয়ে ফেলে বাজেটের সমূহ রান্নাবান্না…
তামাম ফ্যাসিস্টের চঞ্চুতে ছিন্নভিন্ন এজমালি বাগান…
বারান্দার টবোদ্যান—পার্লারের ভূষা—অন্তরফাঁকা…
মসলাখেতের অভিধানে দীর্ঘায়ুর রসদভরা কাফেলা—
মাঝির বইঠা, হৃদয়ের খিলে কলকল ফোয়ারা-নূর…
আরও পড়ুন: মন, আয়না ও জঙ্গলে ॥ মাসুদুল হক