জীবনানন্দের বাড়ি…
এই নবান্ন বিকেল, বিশেষ সন্ধ্যা, চেনা পাখির অতিথি উড়াল
তোমার জন্য রেখে দিলাম উদ্বাস্তু পদ্য-খাতায়। ভুল-ভ্রমণের পর যখন
বাড়ি ফিরবে, শপিং ব্যাগটা মেঝেতে রেখে চোখ ফেলবে উদাস টেবিলে;
খোলা জানালায় চোখ পড়তেই দেখবে কবিতার রোদনকাল উঁকি দিচ্ছে
তোমার উঠোনে। প্রফুল্ল চাঁদ কৈশোর পেরোতেই প্রতিবেশী মুখগুলো
আয়না হয়ে উঠবে। কোনো পরাবাস্তব ভাবনা ছাড়াই তুমি বিন্যাস্ত হবে
দালির ক্যানভাসে। রক্তবর্ণ সন্ধ্যা এসে ডাক দিতেই ঘোরভাঙা মুহূর্তের মতো
চমকে উঠবে মন। পরক্ষণেই আমি ও কতিপয় বিষণ্ন সন্ধ্যা মৌসুমি বাতাসে
ভর করে উড়ে যাব জীবনানন্দের বাড়ি…
তুমি সেই আদি এবং অপলক…
ফেরা
নিশ্চেতনের পাশে উদ্বাস্তু এই মুখগুলো
ফেরা ও গমনের রেখা বরাবর চোখ ফেলে আছে
নিরাক পরা পৃথিবীর পথে—যন্ত্রের ভেঁপুর মতো
কিছু শুনছিল তারা। সামনে ধূ ধূ পেছনে রোদনের
ছেড়া ছেড়া গান…শিশুগুলো সদ্য বৃন্তচ্যুত কুঁড়ি
আহা! গৃহী আর সন্ন্যাস মিলে
যে যৌথ খামার নির্মাণ করেছিল এই পাদদেশে
এখন তারা প্রস্থানের উপকূলে এসে অনিশ্চিতকেই
বাস্তব জ্ঞান করে ফিরে যাচ্ছে শূন্যতার দিকে…
আমি নির্ভার কথাশিল্পীর মতো কথাই বুনছি
আর আড়চোখে ত্রাস ও শাসনের কোমল সেলাই
প্রক্রিয়া অবলোকন করছি উপ-বুদ্ধিজীবীর মতো
কসম
গাঢ়-গুমোট আকাশ। কোথাও বা রঙচোরা মেঘের বাগান। তারপর শীতল বাতাস এবং এখন—
অবিরাম রিমঝিম। রামধনু পেতে আছে বর্ণিল মাদুর! যেন এক মুগ্ধ আমন্ত্রণ!
তবুও স্নিগ্ধ পাতার খোঁজে কিছু মন—খুব ছটফট!
সামান্য এগুতে স্তব্ধ পা! হাত মাটিমুখী
চোখ রক্তময়। অদূরে নিঃসাড় দেহ থেকে পটকার মতো বেরুচ্ছে ঘৃণার শীৎকার আর মুমূর্ষু
বুদবুদ!
কারা এই স্বপ্নহন্তারক? কার কাছে এই অনাবিল সবুজ গচ্ছিত?
ভদকার মুগ্ধ ঘ্রাণে যে আমার বৃষ্টিকে পান করছে হামেশা
আর কোমল অঞ্জলিকে পানপাত্র করে তুলছে গোত্রময়!
বৃষ্টি আর খোয়াজখিজিরের কসম—আমরা ওদের পারদ নয়—গ্রীষ্মের রোদেই পোড়াব
আলোর ময়দানে। বুমেরাং বর্শায় বিদ্ধ হবে ওদের বুক। ঘাম, রক্ত-পুঁজে একাকার হয়ে যাবে ওদের
জীবন। আড়ষ্টতা ভেঙে—
সতীর্থরা, এসো—পাতাকুড়ানিয়া বোনটিকে সাথে করে মায়ের মমতা নিয়ে আসি। সমরে মা-ই
থাকেন ছায়ার মতো।