বর্ষারাতে কোথায় ফোটে ফুল
বর্ষারাতে কোথায় ফোটে
নাম-না-জানা ফুল,
পরাগরেণুর ঈপ্সাজুড়ে
জাগ্রত বন ব্যাকুল!
বাবলি এলো রাত্তিরে বাজিয়ে পায়ের মাদল
টিনের চালে নৃত্য করে ঘাগড়াপড়া বাদল।
নিঃসঙ্গতার কান্না ঝরে মাঠে
হৃদয় যেন শুকনো মরা কাঠে,
কোথাও নেই বর্ষাকালের সাড়া
কেউ দেয়নি জলস্তম্ভে নাড়া।
বাবলি এলো রাত্তিরে বাজিয়ে পায়ের নূপুর
মনপ্রাসাদে উঠলো বেজে বৃষ্টিমাতাল সুর।
জীবন ছিলো শুকনো মরুভূমি
কোথাও নেই শ্যামলতার ছায়া
চৈত্রতাপে পুড়েছে প্রেম, মায়া
পরানকথার বাজে না ঝুমঝুমি।
বাবলি এলো রাত্তিরে বাজিয়ে পায়ের ঘুঙুর
বিহ্বলতার খিলান চূড়ায় জলের টাপুরটুপুর।
জীবনচক্র
গতকাল যে শিশুরা কাঁদতে কাঁদতে এসেছিল
আজ তারা হাসতে হাসতে ফিরছে বাসরে,
আগামীকাল ফের কাঁদতে কাঁদতে যাবে
অকূলের মাঝে ঐ চিরঅমলিন স্রোতে।
তাদের শিশুরাও পেছনে পেছনে আসছে
আসছে আর কাঁদছে অবিরল
যেন এই কান্নার নদী চিরবহমান।
তারা কি ফিরে আসবে
আরো বেশি হাসির উৎসবে? তাদের বঁধূরা?
দুপুর জুড়ে এত এত হাসির গমক
কিন্তু কান্নার শব্দে ভারী হলো সন্ধ্যেবেলাটি
কাল প্রভাতেই ফের হাসির হুল্লোড়ে
বাতাস কাঁপাবে বলে?
শিশুগণ দেয় মন কান্নার সুরে…
দুই.
সে যখন তাকিয়ে দেখে তার দিকে
আমি তাকিয়ে নেই
সে খুব অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে
ভাবে পুরুষের স্বভাব তো তাকানো।
বলি, তোমার মাথা ছাড়িয়ে দাঁড়িয়ে
রয়েছে যে গাছ
সেও তো কম রূপবতী নয়
আরো ঊর্ধ্বে রয়েছে আকাশ
আরো মোহময়।
জানি বৃক্ষদের সাথে হয় না সঙ্গম
মেঘদের সাথে বাঁধা যায় না ঘর
তাই দৃষ্টি নামিয়ে আনি
রূপবতী তোমার দিকেই
বলি, এসো নারী, বাঁধো ঘর, করো সঙ্গম
আমাদের মিলিত প্রেমে
জন্ম নিবে যারা
ঊর্ধ্বে তাকিয়ে দেখবে ফের
বৃক্ষ আর মেঘের মিলন।
এখন কেউ আর লেখে না চিঠি
এখন কেউ আর লেখে না চিঠি
ডাকহরকরা ঝিমুয় বসে বসে
পোস্টাপিস কবে বন্ধ হয়ে গেছে
যদিও রয়েছে ঘরে দীপ্তিময় দিঠি।
এখন কেউ পাঠায় না ভিউকার্ড
হাতে লিখে পৌঁছে দেওয়া শুভেচ্ছা
বাস্তবিক কিছু পাঠানোর নেই ইচ্ছা
অনেকেই ভাবে পাঠানোটা অ্যাবসার্ড।
ফুলের দোকানে নেই কোনো সুধা
গোলাপ আর রজনীগন্ধা কাঁদে
পড়েছে কী দুঃসময়ের ফাঁদে
এখন পুরোটাই ভয়াল বসুধা।
সিনেমাহলের মতো বন্ধ পোস্টাপিস
ঘরের ভেতরে তারা পুরেছে দুনিয়া
আঙুলের ডগায় এসেছে মুনিয়া
সে পাখি পর্দা জুড়ে করে নিশপিশ।
জব ও জীবন
দেখেছি হরেক মুখ ভবে
যেন সাজানো ফুল টবে
শুধাল, আছো কোন জবে?
এখন নেই, ভবিষ্যতে হবে।
ঠোঁট উল্টিয়া কয়, কবে?
ধানের সান্নিধ্য ছেড়ে যবে?
যদি দাও তব প্রেম, তবে
চ্যানেল ঘুরেছে নবে নবে।
অমন বিরহকাল স’বে?
মাতঙ্গ উঠেছে বেজে সবে
রাখিও অটুট আস্থা রবে
অযুত মুখের চিত্র টবে।
দিতেছি ইন্টারভ্যু সবে
একদিন তো জব হবে
তখন কি কথা ক’বে?
নাকি তখনো নীরব রবে?
বোর্ড বলেছে, তোর হবে!
সকল কবিতা উৎসব শীতকালে ভালো লাগে
এমনিতেই কবিতা গরম, উপরন্তু গরমে হাঁসফাঁস
ঘাম চুইয়ে পড়ে, পিঠ ভিজে যায়
কবির মুঠোর ভেতর চেপে রাখা কাগজগুলো ভিজে জবজবে
তার মাথা থেকে বাষ্পীভূত হতে থাকে উত্তপ্ত পঙ্ক্তিমালা
আর শুকিয়ে আসে গলা…
ওরে আন আন দোকানের যাবতীয় শীতল পানীয়
কবি ও পাঠক দুজনেই যান দোকানের খোঁজে,
এ শহরে শীতাতপ কই? এমন কাঠফাটা গ্রীষ্মকালে
. কবিতা চৌচির…
তাই সকল কবিতা উৎসব শীতকালে ভালো লাগে।