বৃষ্টির উৎসবে
আষাঢ় আসে ক্যালেন্ডারের পাতায়
নহলি মেঘ
ঘনিয়ে তোলে আঁধার-পটভূমি
বজ্রপাতের মতো
মনের ভিতর
হঠাৎ যেন ঝলসে ওঠো তুমি!
এই যে দেখি কদম ফোটা ভোর
ঘাসের ভিতর
এই যে দেখি
গাঢ় সবুজ হঠাৎ ঘনিয়ে আসে
তোমার মতো করে
আষাঢ় মেঘে
মাতাল ঘোরে বৃষ্টির ছাঁট হাসে
আষাঢ় আসে ক্যালেন্ডারের পাতায়
বৃষ্টির জল
জমতে থাকে খোলা ছাদের টবে
মনের ভিতর কদম গন্ধ
বুঝতে পারি
আসবে তুমি বৃষ্টির উৎসবে।
কুসুম রোদের ঘর
সকাল যেন হলুদ রোদের বৃষ্টি
ভিজে হাওয়া
একটু এলোমেলো
মনকে ছুঁয়ে দিল
কার বা চোখের রঙিন কাঁচের দৃষ্টি!
একটুখানি আষাঢ় এলো ঘাসে
কয়েক ফোঁটা
বৃষ্টি ঘাসের পাতায়
কদম ফোটা সকাল
হঠাৎ কখন জানলা গলে আসে!
হঠাৎ শুনি কার বা কণ্ঠস্বর
জলের মতো
কে যে কলস্বরে হাসে
কে কাকে ভালবাসে!
তবু দুজন বাঁধে
সূর্যমুখী হলুদ কুসুম রোদের ঘর।
বৃষ্টির কাব্য
বৃষ্টি খুলে
দেয় যে মনের খাতা
তাতে কি সব লিখি কাব্যলিপি
মেঘ খুলে দেয়
পদ্যধারা
নাকি জলের কলের ছিপি!
দমকা হাওয়ায় বৃষ্টি নাচে
কাব্য আমার
মেঘের ঘোড়া তুলোর মতো ওড়ে
আকাশ ভেঙে জোলো হাওয়ায়
বজ্রপাতে
তোমার দীঘল চোখের পাতা নড়ে
শহর জুড়ে আষাঢ় নামে
বৃষ্টিস্নানে
ভিজতে এখন কে আর ছাদে ওঠে
বৃষ্টিফোঁটা কাব্য আমার
পুষ্পচুমু
কবে দেবে তোমার চাতক ঠোঁটে!
জলের চিঠি
বৃষ্টি হলে ছাদে কি আর ওঠো
চুল ভিজে কি
চুইয়ে পড়ে জল!
চোখে কি জল আসে
ঝড়ে উড়ে পড়লে খড়কুটো!
হাওয়ার দাপট—সামলে নিও শাড়ি
বৃষ্টিও তো
লজ্জা দিতে পারে
বৃষ্টিও তো
প্রেমিক হতে পারে
প্রেমিকেরা করেই বাড়াবাড়ি
তারে বসে ভেজে যে কাকা দুটো
পাখিরাও প্রেম জানে
কালিদাসের যক্ষ যেন আমি
শ্রাবণমেঘে
জলের চিঠি লিখি
খুলে রেখো তোমার হাতের মুঠো।
আরও পড়ুন: আল মাহমুদের রবীন্দ্রভাবনা ॥ সাইফ বরকতুল্লাহ