জন্মদিনের ঋণ
দেখে হাসি, তবুও ভালোবাসি
জীবনসায়রে কেউ কেউ
এভাবেই তোলে জীবনানন্দের ঢেউ
আমি তো গোপন ছিলাম সানাইয়ের সুরে
আমি তো গোপন ছিলাম প্রণয় পুকুরে
যৌথ ভালোবাসায় এসেছি ভেসে
এ বেলায়, এই বাংলায়।
ঘুমিয়ে গুহা গহ্বরে থেকেছি অনন্ত দিন
মুমূর্ষু মাছি ভেবে রেখেছ দূরে, উড়তে পারিনি
কামার্ত কবুতরের শীৎকারে ভেঙেছে ঘুম।
আবেগকাতর প্রাপ্তবয়স্ক শিশু
মাটির শরীর নিয়ে মাটিতেই হাঁটি
কারণ প্রতিটি ভোর ভোরের মতো নয়
কিছু ভোর বিভোর হয়, হয় আলোময়।
মৃত্যুতে মুছে যাবে কাগজের কাল
তারপর শুরু হবে মৌলিক সকাল।
ফসল কাটা মাঠে মাঠে বিরহ-নীরব
ঈর্ষার কলহাস্যের শিকার হয়ে-
ভীষণ বিনীত দেখ ময়ূরের মুখ
ঝাঁপি থেকে উড়ে যায় অদৃশ্য পাখি
কীভাবে রুখবে তারে আদরের সাখী।
বঁধুর আঁচলে বাঁধা প্রণয়ের ফুল
পাখি রূপে উড়ে যায় যদি হয় ভুল
একবার চোখে তার ভেঙেছে পাহাড়
তারপর কোনোদিন নেয়নি আহার।
আহারে চর্যার নারী টিলাতেই বাস
আজন্ম করেছিলে দুঃখের চাষ
জলরেখা দেখে দেখে শিখেছ প্রণয়
জলবনে একা-একা শুধু অভিনয়।
রক্তবর্ণ ফুল এনে দিয়েছ কসম
প্রণয়ের নাম করে দিও না জখম
এখন হেমন্ত ঋতু রিক্ত অনুভব
ফসল কাটা মাঠে মাঠে বিরহ-নীরব।
মনে মনে পুষে আছ কাঁচের সিঁড়ি
মাটিতে হাতের তালু আদুরে মোকাম
পায়েতে পথের ধুলি ডাকে দূরগ্রাম
নিরক্ষর ভালোবাসায় বেশি উল্লাস্বর
অবুঝ বেহুলা তাই খোঁজে লখিন্দর।
করাত কাঁটার খাঁজে খাঁজে বিচ্ছেদের সুর
কবিও করাত কাটা কষ্টে কষ্টে ভোর
মনে মনে পুষে আছ কাঁচের সিঁড়ি
মনে মনে জনে জনে প্রণয় বাড়ি।
ঘোড় দৌড়ে ধুলি ওড়ায় বেজন্মা বাতাস
ধুলিকণার স্ফূলিঙ্গে আলোকোদ্ভাস
খুরের দৃশ্যে ভাসে রক্তজবা চোখ
মুহূর্ত মিলিয়ে গেলো তাই এত শোক।
এতটাই বেপথু হলে তিমিরের খোঁজে
বিবেক বিবস করে ভোগবিলাসে মজে
বেচে দিয়ে সুরম্য আবেগের বাড়ি
মনে মনে পুষে আছ কাঁচের সিঁড়ি।
জলধোয়া দেহ
অচঞ্চল জলের ভাষায় ডেকেছিলে কবে?
মনে নেই আঁকাবাঁকা ঢেউ
মনে নেই ডেকেছিল কেউ
অচঞ্চল জলের ভাষায় ডেকেছিলে কবে?
মনে নেই জলের বুদ্বুদ
মনে নেই জলধোয়া সুখ
অচঞ্চল জলের ভাষায় ডেকেছিলে কবে?
মনে নেই জলজ জোয়ার
মনে নেই জলজ বিহার
তারপর জলবাসের আশায়..
ফেনায়িত দীর্ঘ ভ্রমণ
গাঢ়তর গভীর রমণ
তবুও আঁকাবাঁকা সাপের সাঁতার
তবুও প্লাবন…
গাঙের ঘাটে ঘাটে জলধোয়া দেহ
আমারে ডাকে না, ডাকে না কেহ।
পাপ ও পতন
হয়তো মোহ, হয়তো মায়াজাল
হয়তো কন্দর্প কান্তির মতো
নিঃশব্দে সময় কাটে
কিছু মৌনমুখ, কিছু মুখরতা দেখে।
এই যে আমাকে দেখো-
কেমন হেসে উঠি গানের জলসায়
কেমন ঝলসে উঠি ধূসর পাতায়
দুধঢালা পর্বতের খাঁজে খাঁজে
হারানো হৃৎ-চিহ্নের খোঁজে।
মানুষ মূলত চিহ্নের অনুগামী
চিহ্নের খোঁজে উদ্ভিন্ন হয়ে
দিনশেষে ফিরে আসে
পাপ ও পতনের গল্প নিয়ে।