গুপ্তবীজী
সন্দেহ আকাশ, স্বপ্ন ফুটে আছে—ক্লিশে সুর;
পরস্পর স্তব্ধতা পেরিয়ে হেঁটে যাচ্ছে ত্রিভঙ্গমুরারি
উড়ছে হাওয়ামিঠাই, মনুষ্য প্রহর, কোলাহল—
জানি, ছুঁতে পারবে না কোনো মিথুনপ্রহর, আমাকে
তবুও আশ্চর্য হলাহল প্রতিষ্ঠা পাবে—ধীর পদক্ষেপে!
জলাশয় থেকে উঠে আসা ব্যাধ কাঁপবে তিরতির
কান পেতে নগরকল্লোলে—অবিরাম!
ইদানীং ক্ষমার অযোগ্য শব্দে ভর্তি হচ্ছে টোটেম,
দেখছি, বসন্তের শেষ উৎসবে তুমিও মলিন!
কখনো যদি শনাক্ত করো স্মৃতিভবিষ্যের ক্ষত,
নক্ষত্রপুষ্পের হাসি দেখবে পুনর্জন্মেও, অসম দূরত্বে
যে স্বপ্ন এবং গুঞ্জরণ ধ্বনিত হবে, তা আমারই প্রণীত
জীবনসমগ্র খুঁজে সঞ্চয় করেছি সেই মহামন্ত্র!
সন্দেহ সরিয়ে জাগো, অনুভবে—আশ্চর্য সঙ্গীতে।
ভবিষ্য
প্রাগশরতের রাত্রি, অন্ধকারময়-
সমগ্র রাত্রির দিকে অপলক চেয়ে থাকি,
একেকটা রাত্রি যেন চুল খোলা চারুমুখ—কখনো
রাষ্ট্রীয় বিজ্ঞাপন থেকে নেমে আসা ধূর্ত টগবগ;
ভূমিকা ছাড়া তেমন কোনো দৃশ্যান্তর নেই যার!
রাত্রি আর আমি বহুকাল, বহুভাবে—
স্বচ্ছ জলধারার মতো
ক্ষীণ কণ্ঠস্বরের মতো
পরস্পরের মুখোমুখি ঝুলে আছি, ঝুলে থাকি—
অমীমাংসিত অনন্ত জিজ্ঞাসা হয়ে;
দৃশ্য ও অদৃশ্যের বিপরীতে রাত্রির চোখেও
স্মৃতিবিনাশী নিখুঁত পূর্ণিমা—জেগে ওঠে;
তার স্ফটিকশরীর, ডুবে যাবে, একদিন এ জীবন!
কে তুমি?
স্মরণীয় হয়ে আছ, কালের অক্ষরে;
তুমি কে? আদিবাসী রক্তের ভেতর—
কাল ও মহাকালের ভেতর—
পড়ে আছ বিষদাঁত! নীরব, নিথর;
রাতের আঁচলে রতির ঘুঙুর বেঁধে
সঙ্গমঘোর লুকিয়ে হাসছ—
কে তুমি!
দেখো—শতাব্দীর রাত্রি ছুঁয়ে,
একা একা উড়ে যায় বিচ্ছেদের পাখি…
প্রসঙ্গ
তোমার শরীরে বাধা একুশ শতকের আয়না
ক্রমেই ঢুকে পড়ছে প্রসঙ্গে,
কিছুতেই ফিরতে পারছি না নিজস্ব স্টেশনে—
ফিরতে চাইছিও না;
ওহে জাদুময় প্রসঙ্গ—
ভালোবাসি বলে ডুবে যাচ্ছি তোমার সৃষ্টিতে
যেখানে খেলা করছে একফালি চাঁদ—একা!
তোমার প্রসঙ্গে অসংখ্য গ্রামফুল; তৈরি হচ্ছে
প্রত্যাশার সারেগামা, আর দিনানুদিন সিঞ্চন করে,
তুলে আনছি নিভাঁজ, নির্জন প্রতিবিম্ব;
চাইছি—উদ্ভাসিত হও তুমিও অবশিষ্ট প্রসঙ্গে;
তোমার শরীরে বাধা একুশ শতকের আয়না
আর নিষ্ক্রিয় দর্শকের সারিতে,
উড়ে যাচ্ছে প্রসঙ্গের রকমফের—
খেমটা
স্নানের আগেই ঝরে যাচ্ছে কথাগুলো-
একাকিত্বে ওঁৎ পেতে থাকা সময় রচনা
করছে পরিবর্তন ভাষ্য; এভাবেই—
প্রতিদিন বহুমুখী নিদ্রার ভেতর খুন হচ্ছে ঋতুর গৌরব,
সন্ধানে নামছে যারা—ফিরছে না কেউ—
ওহ বাদলবিকেল! সন্দেহ করছি—এই ক্ষুরধার তত্ত্ব
একদিন খুলে দেবে পৃথিবীর রহস্যবিভূতি;
ক্ষুধার গুঞ্জন উঠে আসবে পরিবর্তনের খাঁচা ভেঙে—
এরপরও, শোরগোলকে পরিবর্তন ভাবছে অনেকে,
ভ্রান্তিতে জড়াচ্ছে কেউ—কেউ সাজাচ্ছে কৌশল-ঘুঁটি;
তারা জানছে না—
কম্পিত দৃশ্যের পাশে, মতান্তরে, সব নৃত্যই খেমটা নয়—
রহস্যসংবাদ
একটি বিন্দুর মধ্যে গোল হয়ে আছে রহস্যের সম্মিলন
নখদন্তহীন, অথচ সপ্ত-আসমানের বুড়িচাঁদ সরিয়ে
সমবেত সংকল্প ফোটাবে—সংকল্প ছিল;
এখন তারা সমস্বরে শুনছে বেসরকারি প্রণয়ের বাদ্য!
কেউ কেউ হয়তো ঠেলা সামলাতে ব্যস্ত, আনন্দবিহারে
কিংবা, যাপনের মানসাঙ্ক নিয়ে সজোরে দৌড়াচ্ছে কেউ
অপ্রকাশের ভার নিয়ে বিশ্বের বাক্-স্বাধীনতা ক্রমে
দূরে সরে যাচ্ছে; প্রশ্নও উঠেছে—
অসূয়া প্রকোষ্ট কারা সাজাবে নির্মিতির চিত্রকল্প?
মেদহীন আকাশ, নদীতীর কিংবা সবুজ অরণ্য
আমাকেই দিও এসব; দিও, পাতার উৎসব আর সপ্রতিভ ঈর্ষা;
না হলে, জনওষ্ঠে ছড়িয়ে যেতে পারে কোনও রহস্যসংবাদ…
জতুগৃহের ভস্ম
বীরেন মুখার্জী
প্রচ্ছদ: রাজীব দত্ত
প্রকাশক: দৃষ্টি
মূল্য: ১৫০ টাকা
প্রাপ্তিস্থান: লিটলম্যাগ চত্বর ‘দৃষ্টি’ স্টল