প্রেমোচ্ছেদ
জীবন কী বিচিত্র বাজিকর। ভালোবাসাও খণ্ডখণ্ড আর তার স্বাদ, রঙ, বিভা, স্বপ্ন—
সব বয়সে একই রকম নয়। তারুণ্যের সেই তীব্র আঁচ-স্মৃতির ভেতর থেকে বেরিয়ে আসতেই
মনে হলো— ব্যাবিলন মিসর অথবা আফগানিস্তানের তরুণীর বুকের ভালোবাসার তাপ
কতটা হিমায়িত! বারুদের ঘ্রাণে আর গুলির আওয়াজে যখন ধসে পড়তে থাকে প্রত্নখচিত
দেশ—তখন কি ওরা কোনো কবিতা লেখে? স্বপ্ন কিংবা প্রেমতাড়িত করে কি ওদের জীবন!
আমাকে করে।
আজও এই প্রাক্ পঞ্চাশে—ভালোবাসতে বাসতে—চুমু খেতে গিয়ে টের পাই
আমার ঠোঁটজোড়া পুড়ে ছাই হয়ে গেছে ব্যাবিলনে, মিশরে, সিরিয়া অথবা লেবাননে…
জঙ্গিনামা
মৌনতাকে সুতোয় বেঁধে জড়িয়ে রেখেছি গায়ে
ইরাক, মিশর, সিরিয়া অথবা অন্য কোনো ভূখণ্ডের
নারী যদি ধর্ষিত হয়—মানুষেরা উদ্বাস্তু,
যদি বাস্তিল দুর্গের মতো পতনছন্দে হাজারো
অভিবাসী ঢুকে পড়ে জার্মানসীমায়
আমার যেন কিচ্ছুটি বলার নেই!
আমি জলপতনের মতো স্বাভাবিক নিয়মেইদেখি
ধর্মের নামে পতনের পাপ!
আমি কি বেঁচে আছি! অথবা বাঁচতে চাই?
মৌনতার কবরে কেন নিজের লাশ রেখে
ভাবি—বেশ তো আছি!
নীল নদের লাল জল আর্তনাদ করে!
ওভাল অফিস জানে, জাতিসংঘও জানে
মানবতা বেচা যায় বারুদের ঘ্রাণে!
প্রলেতারিয়েতের কান্না
শিকাগোর অগ্নিবিন্দুর মতো ছড়িয়ে পড়েছিলে তুমি
সাইবেরিয়া থেকে পেরু আর চিলির প্রান্তরে।
তোমাকে কুড়িয়ে নিতে চেয়েছিল এই বাংলাও।
ওরা জানতো না—
জল আর মাটির মিশেলের পরিমিত মাপ
ফলে দুই হাত আর আঙুলের ফাঁক ও ফোঁকরে
গলে পড়েছ তুমি
মার্ক্স হেগেল লেনিনকে জিজ্ঞেস করো—
এখনো পরিবর্তিত সময়ের
পরিবর্তিত মাটি ও জলে
শিকাগোর আগুন মেখে তেভাগার রঙে
নাচোলের ইলামিত্র জেগে উঠতে পারে—
ইলাকে জাগানোর আগে
তুমি
হে কারিগর তুমি-ই জাগো…