বৃষ্টির ওড়না
মার চুলগুলো সাদা হয়ে গেছে।
ভাবনার আকাশ অপার আঁধার তবু
লাল, নীল, বাদামি রঙ হয়
মায়ের স্বপ্নগুলো। শরৎ, হেমন্ত,
গ্রীষ্ম এসে কান্নার লবণ জলকে
অমৃত করে। ধূলার বাতাসকে
ফসল বিহীন মাঠে ছড়িয়ে দেয় মা
মাতৃত্বের অহঙ্কারে। বাবা নেই বিচ্ছেদ বুকে
নিয়ে নগ্ন হয় মা পউষের মাঠে। আয়ুর প্রদীপ
জ্বলে ওঠে নবান্নের উৎসবে।
মেঘের ওপরে মেঘ, মাঝখানে বৃষ্টির শব্দ।
সাদা চুলের মা আমার সবুজ পৃথিবী খোঁজে
বৃষ্টির ওড়নায়। ঝুম বর্ষায় সাঁতরে চলে মা
ভালোবাসার জলমগ্ন মেঠোপথে।
সমুদ্রজল
কখন তোমার কণ্ঠের মৈথুন
ভেজাবে আমার ঝিনুক খোলা মন?
ভরা নদীর বাঁকে অবরোধের আঙিনায়
হাজার রকম সুরের মঞ্চ।
সমুদ্রজল—ছুইঁ-ছুইঁ চতুরঙ্গ।
কামক্রিয়ায় সামুদ্রিক ফেনা
নিঃশ্বাসে প্রজাপতি ফেরিওয়ালা–।
জলে ভাঙে চোখের নদী
হারায় শ্রাবনমাঝি আকাশভাঙা কায়া।
চুলগুলো বড় এলোমেলো।
চুলের নিচে ডুবে যায় জ্বলন্ত উঠোন।
তোমার অগ্রহায়নের ঘ্রাণ, মেঠোপথ জীবন
ফেলে আসা কিছু উক্তি—কষ্ট বিলাসী নূপুরজোড়া
ঠিকানা বিহীন মেঘে উড়িয়ে দিলাম।
মন্ত্র
কী মন্ত্র পাঠ করবে? পাঁচ আত্মার
মিলনে নয় দরজায় উঁকি দেয় ষোলো
আনার হিসাব। জীব-আত্মায় তখনো জেগে
থাকে শুকনো খড়কুটো—
আঠারো মোকামে আলোর রেখা ফোটেনি।
মরুভূমি হৃদয় খোঁজে পূণ্যের জল।
ইন্দ্রদেবের নিমজ্জিত ঝরাপাতা
অবিরাম ছুঁয়ে যাবে কামনদীর
স্রোতের উঠোন।
শুকনো গাঙে কে ভিড়ালো বাদাম
উড়ানো নৌকা? শেখো এই মন্ত্রপাঠ
ছড়াও পার্থিব আস্বাদ। ছিঁড়ে ফেলো কামনার জিভ।
কামক্ষেতে কামিনী করুক মৃত্যুর চাষ।
চেতনার জমিনে স্বপ্নবিলাস
তেজস্বী যুবক। মন্ত্রপাঠে গড়ে নাও আকাঙ্ক্ষার ফুল।
চুম্বন
কাশফুল, প্রজাপতি সাদা সুতোর ফুল ।
দিতে পারি বুকের জোসনা, স্মৃতির স্তবক
গাঢ়তম চুম্বন ।
ডুবজল বেলাভূমে আঁচল ছড়ানো উল্লাস
অসমাপ্ত অন্তর্লীন পদচিহৃ অনুভবে।
স্পর্শের কাঁচভাঙা আখড়া,
. আদরে আহ্লাদে ডগমগ
হলো। ফেরাতে পারি না কোনোমতে
চুম্বনের সুমিষ্ট বুদ্বুদ।