অন্তর্মুখী ও বহির্মুখী
মানুষ হয়তো ভাবে
অন্তর্মুখী প্রবণতা ভালো
অনেকেই ঘুম ঘুম বাতাসের মাঝে
তাদেরকে শীতল ও সম্পূর্ণ ভেবে
গভীর আবেগে হাত বাড়িয়ে দেয়
টেনে ধরতে চায় অনুচ্চারিত ঝোঁকে
আর যারা প্রকাশিত, বহির্মুখী
সারাদিন অস্থির, আলো ও
অতশবাজির সাথে ছুটে চলে, ডাকে
তাদের বুকে খুব রোদমাপা ব্যথা হলে
কেউই ভাবে না, বলে, ঠিক হয়ে যাবে
তারপর একদিন ছায়াপথে জ্যাম ঠেলে
অন্তর্মুখী ও বহির্মুখীর দেখা হয়ে যায়
কেউই কাউকে বলে না কিছু, শুধু
মনে মনে উচ্চারণ করে- এসেছো!
ভেবেছিলাম হারিয়েই গেছো, তাই
এক জীবন পাশাপাশি থেকেও নেই
নিঃশব্দে হাত বাড়িয়ে দেয়, এসো…
এখন
রেললাইন ধরে হাঁটতে থাকে তারা
আগুনমুখার জন্ম
নদীরা আমার সহোদরা, জন্ম থেকে জানে সব কথা
পূর্ণিমা এলে পরে এই যে আমি উন্মাদ হয়ে যাই
সে-কথা গোপনে রেখেছে তারা, ভালোবাসে তাই
তবু চাই, সকলেই জানুক সেই উন্মাদ উদ্যাপন
অস্বীকৃত নৃ-গোষ্ঠী অকুণ্ঠ উচ্চারণে বলুক সেকথা
একঘেয়ে চরাচরে জন্মেছে যে উদগ্রীব ভিন্নস্রোত-বাঁক
মোহনায় মোহনায় তারই প্রতিধ্বনি ঘুরে বেড়াক
ছুটে আসে আগুনের-হল্কা রহস্য বিদিত চিৎকার!
যদিও এসব ভুলে যাই, তবু মনে রাখার আছে আগ্রহ
ভিন উপগ্রহে উড়ছে পাড়ি দেয়া দিন, কিছুটা রঙিন
আবার প্রাচ্যকলার ভোর তাড়া দেয়, আছিস নাকি!
সব মিলে একাকার আরাধ্য জীবন। কখনো অন্যমনে
ভুলেছি নদীর আহ্লাদ, গলা ধরা সহস্র আবদার
শীতের প্রবল ছোবল দিয়ে গেছে যুক্তিহীন অম্লান স্বাদ
জাদুকর, কোথায় গেলে তুমি! পারো নাকি এইসব
জমে থাকা বরফস্তূপ থেকে আগুনমুখার জন্ম দিতে!
চাঁদ ও আত্মহত্যা বিষয়ক
আত্মহত্যার রক্ত পড়ে আছে মেঝেতে, সেও লাল ও পরিচিত
রাতের আকাশ জুড়ে আদিবাসী চাঁদ গান গাইল আর
কোনো রকম মিশ্রণ ছাড়াই তোমাকে লাগছে ঘোর আদি অধিবাসী
পর্দা উঠে গেলে যেভাবে জানালা দেখে নতুন প্রকৃতি
সেভাবে তোমাকে দেখা, গুহাচিত্রের মাঝখানে অন্যরকম
দক্ষিণের সুপারি সারি মাথা দুলিয়ে ডেকে নিতে চায়- যাবে কি
প্রতিবছর প্রতিবার এমন ডাক নাও দিতে পারে, তবে ঠিক
একবার যদি যাও তাহলে বারবার যাবার প্রবণতা বাড়বে
তাই আগেই স্থির করো আমাদের পুকুরগুলোর পাশে সারারাত
আদিবাসী চাঁদের সাথে বসবে কিনা
যারা আত্মহত্যার সমর্থক তাদের কেউ কেউ আমার বন্ধু
আমাদের প্রায় সব বন্ধুরাই পরস্পরের কাছে খোলামেলা
তারা তাদের বন্ধুদের প্রতি অমায়িক আস্থাশীল এবং ক্রমাগত
কিন্তু সব বন্ধুরা জানে না আত্মহত্যার পর রক্তের চরণধ্বনি
চাঁদ হয়ে ডাক দেয় প্রতিজন্মের ভেতর
আরও পড়ুন: বৃষ্টি বাকল ও অন্যান্য ॥ ফেরদৌস নাহার