ঈর্ষা
ঈর্ষা, তুমিও কখনো সোনার শব্দ
হীরে ও পান্না মুক্তোর কারুকাজে
তোমার সুরভী চেতনা করে নিস্তব্ধ
বেজে ওঠো সুরে স্বপ্নের এস্রাজে।
তুমি কি জান, তুমি কী কঠিন সত্য
স্বর্ণলতার আগ্রাসী অনুভবে
চাতকের চাঁদতৃষ্ণায় যে অমর্ত্য
দুপুর রৌদ্র বনানীর পল্লবে।
তুমিও হীরের মতোই নিরেট কঠিন
ঝকঝকে ছুরি চোখের মণিতে গাঁথো
মনের গোপন কুঠুরি রন্ধ্রবিহীন
নিপুণ আঘাতে হার মানে ইস্পাতও।
ভালবাসা যখন চোখ মেলে জেগে ওঠে
তুমি জেগে ওঠ পাহাড়ী স্রোতের মতো
কুটিল চিলের মতো ক্ষমাহীন ঠোঁটে
ঠুকরে ঠুকরে করো সব বিক্ষত।
ঈর্ষা, তুমি তো তুলেছ ভয়াল ফণা
আমার উঠোনে নাগিনীর আল্পনা।
ঘাসশয্যা
তীব্রতায় আচ্ছন্ন আমি। রোদ ধুলো গন্ধ। হাঁটছি।
এক পশলা উত্তপ্ত বাতাস। চিৎকার। কানের পর্দা কম্পমান।
আকাশে তাকাই। কোথায় লুকিয়ে আছে কেউ!
মরে যাচ্ছি। মানুষের জীবন নিয়ে বড় ঠেকে গেছি।
তুমি নির্বিকার।
আমারই কি সব দায়!
ফুল ফোটানোর, গান শোনানোর, তৃষ্ণার্ত প্রজাপতিকে পানি ছিটোনোর!
পাখিরা উড়বে আমার ভরসায়, ঘাসের বনে ফড়িংটিও নেচে উঠবে আমার
দিকে চেয়ে!
আমার মাথার কোষে কোষে ইট আর পাথরের অবিরাম ঘর্ষণ
তুমুল বিপর্যস্ত আমাকে কে দেখাবে সমুদ্রসঙ্গম?
আমাদের সংসদ ভবনে যান্ত্রিক শীতলতা, তুমুল টাওয়ারে
সওদাগরি হাসি, রাস্তায় অবিরাম বিচ্ছিন্নতা
সমস্ত সুখ ফেলে আমরা হাঁটছি, ছুটছি সাঁ সাঁ করে
কোনো এক সুখের নেশায়।
পৃথিবী, একবার দুলে ওঠো
ঘাসের শেকড় থেকে আমরা ফের শুরু করি।
সাত তলার ছাদ থেকে আকাশ ছোঁয়া যায় না।
ঘাসের ওপর শুয়ে তাকাই?
আকাশ নেমে এসে ছুঁয়ে দেবে মানুষের চোখের পাতা।
হইচ্চিমে দঙ্কার দইজ্জা
হিঁচাদি বাইজ্জাই দে, মরার দইজ্জা কিল্লাই এরুউম্যা ভাঙের
দুইন্যায় বেক্কান খাইয় হেট ন ভরের
অরে কি রাইক্কইস্যা হেট! বাড়িভিডা ঘর বাড়ি বেক্কিন গল্লার
মানুষ কন দেশে যাইব কন দুনিয়াত
রাইতদিন ভাঙি নের ঝপাৎ ঝপাৎ।
বাপের বাড়িত আছিল আইল্যা জাইল্যা জমিন জিরাত
হাতখান আলের চাষ, টইনের চৌচালা
উডানে ধানের হাঁরা, গরু মইষ কুইজ্জা কুইজ্জা খের
কঁডে যে গেল গৈ চলি স্বপ্নর মতন
কাডির হারেই অনকা দুইর্গইত্যা জীবন।
স্বামীর সংসারে আইলাম দুই পায়ে আলতা মাখি সোনা রুয়া হিন্দি
এমন জোয়ান স্বামী এমন সোন্দর
চান্নির হইরজ্যা রাইতে জুনি হোক বাগিচায় উড়ি উড়ি যাইত
হেইতানে বেড়াই ধরি কইত আঁরে, তুঁই
বদিউজ্জামাল হরি, কঁডে তোরে থুই?
হইচ্চিমে দঙ্কার দইজ্জা গুজরি গুজরি আইয়ের ঘরবাড়ি ভাঙি
কত যে সোনার মৌসল দিনে দিনে শেষ
সাতভাঙা খাওনের হরে কাডির বোগলে ঝুরকি ঘর
অনকা কি মানুষ আছি ফকিরের থাল
অমন জোয়ান স্বামী বিছনাতে কঙ্কাল।
হিঁচাদি বাইজ্জাই রে নদী, ঝাঁডাদি বাইজ্জাই তোরে, তোর কোয়ালে
আল্লার লানত হরুক, জাহান্নামে যা
আর কত ভাইঙবি ক’? আর কত গিলবি মাইনষের সোনার সংসার
হক্কুনে ঠোমরাক তোরে, অজগরে খাক
আজরাইলে আনে না তোর মউতের ডাক!