গাঙচিল
আহা গাঙচিল তুমি, প্রত্যাশার বাঁক খুঁজে ক্লান্ত!
নৌযানে ঘুরে আয়নায় শুধু হাসি খোঁজো?
ভালোবাসা অবগাহনের পূর্বে মোছো প্রত্যাশা—
আর রূপালি ঢেউয়ে উসকে দাও আবেগ
পান করো না প্রেম ও বিরহের যোগফল।
কুয়াশা হয়ে মিলনের পূর্বে সন্দেহ মোছা যায়?
অবিশ্বাসের বিছানে কিভাবে বাসর হয় ফুলেল?
ভালোবাসার ভাটায় পূর্ণিমা আবেগে ভাসে ঠোঁটের নাও?
তবু স্মৃতিময় স্রোত কেটে জীবিকার টানে বিধ্বস্ত বুক
যে নাফ নদীতে প্রেম জিনজিরার মতো ভোর ওঠে?
তার স্বর্গ-ছোঁয়া পেয়ে কেয়াবনে আবেগ থমকে যায়
জীবনের তাফসিরে বিরহ ডুবে যায় ম্লান বেদনায়
তবু প্রত্যাশার আত্মায় দাঁড়িয়ে নিঝুম স্তনের মতো দ্বীপ দেখে—
দরিয়া নীলাভ ষোড়শীর জোয়ারে চঞ্চলা মাছরাঙা হতে চাই।
মন ফেরিঅলা
মেয়ে তুমি মাছি মারো; না বসে বসে মন খুন করো
চারপাশে মন-ফেরিঅলা হৃদয় বিনিময়ের জন্য দাঁড়িয়ে
তাকানোর প্রয়োজন নেই কি শরতের কাশফুল, তোর?
শ্রাবণের কাঁচা তালের মতো কবির প্রেম নয়
কবি তো ঠাট্টায় পুড়ে যাওয়া আবেগের বাহক
আর্তনাদের সুতোয় গাঁথা ভয়ঙ্কর মুহূর্ত আর এমন রাতকানা,
স্বপ্ন হাতড়ে বেড়াতে বেড়াতে যার দুরবস্থা
কবির আকুতিতে গোখরা সাপের মতো ফোঁসফোঁস করো?
সারা অঙ্গে কবিতার ঢেউ বয়ে বেড়াও দিন থেকে রাতে
অথচ তুমি হ্যাঁ বললেই কবি রাজি জীবনকে তালাক দিতে
কারণ, তোমার মুচকি হাসিই শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ মহাকাব্য।
অভিশাপ
নেই তো আমার পাঠশালা আর ঘরে মায়ের আদর,
দিনগুলো সব ঢেকে নিলো হতাশাদের চাদর।
স্বপ্নগুলো পুড়ে সাবাড় বারুদ পোড়া গন্ধে,
সকাল-বিকাল বন্দি জীবন যায় পড়ে আজ দ্বন্দ্বে।
মানুষ না হয় সইতে পারে ভূরাজনৈতিক যুদ্ধ,
এসব সয়ে কেমনে করে বিশ্ব থাকে শুদ্ধ?
বিবেক যখন বন্দি হলো সব বোমাদের পাছে,
রক্ত আমার দাম পেল না এ তোমাদের কাছে।
আজকে যারা দু’চোখ বুঁজে বলছো সবই শান্ত,
সমঝোতাকে দূরে ঠেলে হলে পুরো ভ্রান্ত।
একটা জীবন মূল্যমানে দামি ধরার চেয়ে,
মানবতা ঠিক থাকে না তাদের এড়িয়ে।
সংঘ যখন বাঁচে মরে—কী হয় জাতি দিয়ে?
স্বপ্ন মুছে যাওয়ার পরে কী হয় জীবন নিয়ে?
বাঁচিয়ে তোলো স্বপ্নকে আজ মেলতে দিয়ে ডানা,
থাকে কি সুখ স্বাধীনতায় দিলে কেবল হানা?
নীলিমাতে আর উড়ো না বারুদ ভরা পাখি
আতঙ্কিত জন্মভূমি দেখবে না এই আঁখি।
যে সভ্যতা গড়ে উঠে আগ্রাসনের চাপে,
সে সভ্যতার খোদা মারুক অভিশাপের তাপে।