কী নেবে
হাত পেতেছো? পাতো।
কী দিয়েছি? কষ্ট।
কষ্ট পেলে না তো?
এবার আমি। পেতেছি করতল।
দাও। যা ইচ্ছে তা।
এ-কি, নুনের খরজল?
নুনমাখা জল। হোক না।
আবাদ করব বুকে।
কাঁদব? আমি এমন লোক না।
নুনের আবাদ, বৃক্ষ হবে;
ভালোবাসার ডাল।
আসবে তুমি? পাখিদের উৎসবে?
আবার পেতো নতুন দুটি হাত।
এবার দেব শীতের আদর,
পাখির চোখে রাত।
নেবে তো? সত্যি করে বলো।
কী দেখছ, অবাক দুটি চোখে?
এই, কী হলো?
রাত, নেবে না বুঝি?
অন্ধকারে ভয়?
দাঁড়াও তবে। অন্য কিছু খুঁজি।
ভোর? শিউলি ফোটা দিনই?
না, না, রাতই দেব।
অন্ধকারেই তোমায় ভালো চিনি।
নবীর আগমনবার্তা
দূরত্বের চিৎকার শুনেছিল ক্রাচের কিশোর
তখনি অন্ধকারের সাহস দুপায়ে বেঁধে নেয়
সূর্য লাল হয়
চন্দ্র গোল হয়
বালুর নিচ থেকে উঠে আসে উটপাখিদের ডিম,
ডানা ঝাপটায় নিষ্ফলা পৃথিবীতে;
আলো-প্রান্তরের রেখার ওপর দাঁড়িয়ে শেখায়
মরুদৌড় হতাশ উটপাখিদের।
গাধার কাফেলাকে বলে, মশক খুলে চুমুক দাও
মনিবের রক্তে, কেননা এই অরণ্য শুধু স্টালিওনের নয়।
সন্ধ্যাকে থামিয়ে দেয় সমুদ্রের তটরেখায়
ঢেউদের বলে ভাসিয়ে দাও ঈশ্বরের ভাস্কর্য।
বাতাসের ডানা লাগিয়ে বিদীর্ণ করে মেঘ
মরুভূমিকে উর্বরা করবে বলে।
তুষারের জামা ছিঁড়ে বানায় সবুজ পতাকা,
মেরুপ্রান্তরে ফোটে অসময়ের রডেডেন্ড্রনরোদ।
ওর চোখের দিকে তাকিয়ে মিথ্যেবাদীরা মোমের ভাস্কর্য হয়
গলে গলে পড়ে নর্দমার জলে
হরিজনপাড়া থেকে উঠে আসে শাসক
নগরের বুকে হাত রেখে সুস্থ করে তোলে আরবানসংস্কৃতি।
মন্ত্রীরা রাজপথ ঝাড়ু দিতে দিতে গায় রবীন্দ্রনাথের গান।
একজন নবীর আগমন বার্তা ছাপা হয়েছে আজকের আকাশে।
খোঁজাখুঁজি
অন্ধকারে পা বাড়ালাম, শব্দ হলো আস্তে।
লুকিয়ে রাখা ড্রয়ারখানি খুলে
হাত রেখেছি রাতের নাভিমূলে
আলোর নিচে অমন করে গোপন খুলে হাসতে?
কর্ণের উত্থান
দাঁতায়ন ঘটেছিল ভিন্ন দুটি ধর্মসভা-জন উদ্বেগের
কোনো এক দূর মোগল-বিকেলে।
কবির মানবতা-প্রবণ কলম মিলনরাত্রি গেয়েছিল নির্জন সন্ধ্যায়।
উচ্চাকাঙ্ক্ষী নেটিভ
মহাভারতের অন্ধকার চাদরে আদর বুলিয়ে ফোটান
কিছু শিক্ষাতারা, সাহেবের বিলেতি বাগানে।
জল ঢালে দুজন দুবেলা হিংস্র প্রতিযোগিতায়
প্রকৃতপক্ষে তারা-বাগানে জন্ম নিয়েছিল
অজস্র বিষাক্ত সাপ;
গড়াতে গড়াতে ওরা মেঠোপথটিকে তুলে দেয় অচেনা মহাসড়কে
জ্ঞানপথ ফালি ফালি করে কাটে লোকালয়, জ্ঞাতির সম্ভ্রম
অতঃপর গঙ্গাতীর্থযাত্রা গতিময় করে তোলে
মানুষের রক্তে ঊনিশ শো সাতচল্লিশ।
ত্রিভঙ্গ মুরারি প্রেম-প্রার্থনায় দ্বিভঙ্গ দেহ গায় ভাঙনের গান
গাঙ্গেয় বদ্বীপে হয় অঙ্গরাজ কর্ণের উত্থান।
নিম্ফোমেনিয়াক
আলোনোখ কেটেছে দাগ
গাছেরা নিম্ফোমেনিয়াক
সূর্যের কাছে খুলে দেয় রোজ
গহন গোপন।
দেখো, দেখো কী অশ্লীল!
যুবতী পাতাগুলো চুমুক দিয়ে খায়
আলোর ক্লোরোফিল।